Sikkim Disaster turned Tourism: আচমকা সিকিমে বিপর্যয়ে আতঙ্ক গোটা পর্যটন সার্কিটে। দারুণ ছুটির মরশুম কাটানোর প্রস্তুতি যখন নিচ্ছিলেন পর্যটকরা, তখনই এই বিপদ। হঠাৎ করেই ডুয়ার্স তরাইয়ে বুকিং এর enquiry শুরু হয়েছে। মোটামুটি ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ বুকিং ছিল পুজোর মরশুমে। বেশিরভাগেরই পছন্দ ছিল দার্জিলিং-গ্যাংটক প্যাকেজ টুর। কিন্তু বিপর্যয়ের ফলে সব ঘেঁটে গিয়েছিল। আপাতত বিপর্যয় কাটিয়ে অনেকটাই ছন্দে ফিরেছে সিকিম। বিপজ্জনক জায়গা বাদ দিয়ে কোথায় কোথায় যেতে পারেন পর্যটকরা তাঁর একটা তালিকা দিয়েছিল সিকিম সরকার। এরপর সিকিমের সবচেয়ে জনপ্রিয় কেন্দ্রগুলি খুলে দিয়েছে সিকিম সরকার। ফলে পুজোয় যাঁরা বুকিং বাতিল করার কথা ভাবছিলেন, তাঁরা আপাতত স্বস্তিতে অর্থাৎ বুকিং বাতিল না করলেও চলবে।
১৭ অক্টোবর থেকে খুলেছে এই জায়গাগুলি
পুজোর ছুটিতে সিকিমে ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করে থাকেন অনেকেই। কিন্তু সম্প্রতি সিকিমে যে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটে গিয়েছে, তাতে বিকল্প অপশন খুঁজতে শুরু করেছিলেন অনেক পর্যটক। তিস্তার হড়পা বানে বিপর্যস্ত সিকিমের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। তবে প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে দিয়েছে সিকিম প্রশাসন। পুজোর আগেই পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে নাথুলা ও ছাঙ্গু লেক। সিকিম পর্যটন দফতর থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এ কথা জানানো হয়েছে। ১৭ অক্টোবর অর্থাৎ তৃতীয়া থেকেই নাথু লা ও ছাঙ্গু লেক যাওয়ার জন্য পারমিট দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সিকিম সরকার।
পুজোর ছুটিতে আদৌ সিকিমে ঘুরতে যেতে পারবেন কি না, সেখানে কী পরিস্থিতি থাকবে তা ভেবে অনেকেই দোলাচলের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন। তবে সিকিম সরকার এবার কিছুটা স্বস্তির বার্তা আনল পর্যটকদের জন্য। পুজোর আগেই পর্যটকদের জন্য খুলে যাচ্ছে নাথু লা, ছাঙ্গু লেক। আগামী ১৭ অক্টোবর থেকেই দেওয়া হয়েছে পর্যটকদের পারমিট।
প্রসঙ্গত, সিকিমের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র হল নাথু লা, বাবা মন্দির, ছাঙ্গু লেক। পুজোর আগে এই পর্যটন স্থলগুলি সিকিম প্রশাসন খুলে দেওয়ায় খুশি বাঙালি পর্যটকরাও। মোট কথা পূর্ব সিকিমের সমস্ত এলাকাই এখন ঘোরা যাবে। শুধু উত্তর সিকিম আপাতত খুলছে না। নতুন করে সেখানে ধস নামার খবরও মিলেছে।
কোথায় কোথায় ঘুরবেন?
পর্যটকরা চাইলে দক্ষিণ ও পশ্চিম সিকিমে ঘুরতে পারবেন বলে জানিয়ে দিল সিকিম সরকারের পর্যটন বিভাগ। সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যাঁরা সিকিমে যেতে ইচ্ছুক, তাঁরা পশ্চিম ও দক্ষিণ সিকিম ঘুরতে পারেন। পাহাড়ি রাজ্যের ওই দুটি জায়গা আপাতত সম্পূর্ণ বিপন্মুক্ত। সরকারের এই বিজ্ঞপ্তিতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন কয়েকটি এলাকার পর্যটন ব্যবসায়ীরা। যদিও পর্যটকরা কতটা আসতে চাইবেন তা অবশ্য লাখ টাকার প্রশ্ন। তবে কিছু মানুষ যাঁদের সিকিমের বিভিন্ন এলাকা সম্পর্কে ধারণা পরিষ্কার তাঁরা আসবেন বলে আশা করছেন তাঁরা।
কোন কোন এলাকা দেখার মতো?
সিকিমের নামচি, পেলিং, রাবাংলা, ইয়ুকসাম, রিনচেনপং, কালুক, ছায়াতাল, মতো এলাকাগুলি পশ্চিম সিকিমের মধ্যে পড়ে।অন্যদিকে টেমি, জোরথাং, নামচি, রংপো এলাকা দক্ষিণ সিকিমে পড়ে। হোটেল ব্যবসায়ী ও স্থানীয় গাড়িচালক ও অন্যান্যরা কিছুটা হলেও স্বস্তিতে। সেইসঙ্গে স্বস্তি ফিরেছে পর্যটকদের একাংশেরও। হোটেল ব্যবসায়ীদের তরফে সরকারকে বলা হয়েছিল, পূর্ব ও উত্তর সিকিম বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত। কিন্তু পশ্চিম ও দক্ষিণ সিকিমে কিছু হয়নি। তাই সরকারের কাছে তারা দাবি রেখেছিলেন, যাতে এখানে পর্যটকদের আসতে বারণ না করা হয় বলে জানা গিয়েছে।
খরচ
খরচ খানিকটা বেশি হবে এখানে। কারণ যেহেতু ঘুরপথে যেতে হচ্ছে। সাধারণভাবে গাড়িভাড়া গড়ে ২ হাজার টাকা বেশ পড়ছে। তবে অনেকে পর্যটকদের যাতে চাপ কম হয়, ও বেশি করে পর্যটক আসেন, সেকারণে কম লাভ রেখেও কিছুটা ভাড়া বেশি নিয়ে পৌঁছে দিচ্ছেন।
তবে পঞ্চমী থেকে খুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও আপাতত বাংলা-সিকিম লাইফ লাইন ১০ নং জাতীয় সড়কে যান চলাচল চালু করা যায়নি। এমনটাই খবর মিলেছে পূর্ত দফতর সূত্রে। চেষ্টা করা হচ্ছে যদি সপ্তমীতে খুলে ছোট গাড়ি চলাচলের মতো বন্দোবস্ত করে দেওয়া যায়। এমন সম্ভাবনার ইঙ্গিতই দিচ্ছেন পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা।
সেবক ও তিস্তার মাঝে কালিঝোরা এবং লিকুভিরে ধসের জেরে দীর্ঘ দিন যাবৎ বন্ধ রয়েছে জাতীয় সড়ক। যার কারণে শিলিগুড়ির সঙ্গে কালিম্পং ও সিকিমের যোগাযোগ চলছে মূলত ঘুরপথে। তবে খুব সম্ভবত সেই ঝক্কি থেকে এবার মিলবে স্বস্তি। পূর্ত দফতর সূত্রে খবর, অত্যন্ত দ্রুত গতিতে জাতীয় সড়ক সংস্কার চলছে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি নর্থ সিকিমের চুংথাংয়ে তিস্তার ড্যাম বিপর্যয়ে জলস্ফিতি বাড়ে খরস্রোতা তিস্তা নদীতে। জায়গায় জায়গায় ধসে যায় জাতীয় সড়ক। আর তার ফলেই বড় ধাক্কার মুখে পড়তে হয়েছে সিকিম ও উত্তরবঙ্গের পর্যটন ব্যবস্থাকে।