সাত সমুদ্র এবং সাত মহাদেশ নিয়ে বিশ্বের যে ধারণা রয়েছে তথাকথিত তা এবার বদলাতে বসেছ। সমুদ্রের তলদেশে লুকিয়ে থাকা এই মহাদেশ এবার উঠে আসল। কিন্তু এর ফলে বাড়ল বিপর্যয় টি আরেকটি বড় ফাটল অর্থাৎ সাবডাকশন জোন তৈরি করেছে। এই সাবডাকশন জোনটি নিউজিল্যান্ডের কাছে সমুদ্রের নিচে।
ফলে একটি টেকনোক্র্যাটিক প্লেট তৈরি হয়েছে। এই টেকটোনিক প্লেটে যদি কোনও তরঙ্গের সৃষ্টি হয় সেক্ষেত্রে নিউজিল্যান্ডের চারপাশে ভয়াবহ ভূমিকম্প এবং সুনামি হতে পারে। এই সাবডাকশন জোনটি তাসমান সমুদ্রের নীচে তৈরি হয়েছে। যেটি নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণে অবস্থিত।
এই মহাদেশের প্রায় ৯৪ শতাংশই তলিয়ে আছে জলের নীচে। এটি আবিষ্কার করতে সময় লেগেছে ৩৭৫ বছর। জিল্যান্ডিয়া দৈর্ঘ্যে মোট ৪০০০ কিলোমিটার লম্বা, এবং আয়তনে আজকের দিনের নিউজিল্যান্ডের চেয়ে ১৭ গুণ বড়।
কিন্তু এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ান প্লেটে ফাটলই চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে। ভূবিজ্ঞানী নিক মর্টিমার ও হামিশ ক্যাম্পবেল এই আবিষ্কারের অন্যতম পুরোধা ছিলেন। খনিজ সম্পদের প্রাচুর্যপূর্ণ এই জিল্যান্ডিয়া পরিচিত নিউজিল্যান্ড মহাদেশ বা তাসমান্টিস নামেও।
মনে করা হয়, ৮.৫ থেকে ১৩ কোটি বছর আগে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল অ্যান্টার্কটিকা থেকে। আর ৬ থেকে ৮.৫ কোটি বছর আগে জিল্যান্ডিয়া বিচ্ছিন্ন হয় অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ থেকেও। ২.৩ কোটি বছর আগে সম্পূর্ণ মহাদেশটিই নিমজ্জিত ছিল।
এই মহাদেশের জেগে থাকা অংশের মধ্যে আরো রয়েছে নিউ ক্যালেডোনিয়া, নরফক আইল্যান্ড, লর্ড হোয়ে আইল্যান্ড এবং এলিজাবেথ ও মিডলটন প্রবালপ্রাচীর।
জিল্যান্ডিয়ার আয়তন পঞ্চাশ লক্ষ বর্গকিলোমিটারের কাছাকাছি, যা পার্শ্ববর্তী অস্ট্রেলিয়ার প্রায় দুই তৃতীয়াংশের সমান, এবং ভারতীয় উপমহাদেশেরও প্রায় সমান। সম্ভবত গন্ডওয়ানা থেকে এটি বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল।
সমুদ্রেপৃষ্ঠের মাধ্যাকর্ষণের ফলে এই মহাদেশে সমুদ্রেরও দাপট অনেক বেশি। জিল্যান্ডিয়াকে মহাদেশ হিসেবে বিবেচনা করার জন্য আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ১১ জন ভূতাত্ত্বিকের দীর্ঘ গবেষণা করেছেন এবং তাদের ফলাফলও পেশ করেছেন।
ভূবিজ্ঞানীরা প্রমাণ পেয়েছেন যে, জিল্যান্ডিয়ার মধ্যে এই সকল গুণই বিদ্যমান। জিল্যান্ডিয়ার কিছু মাটি ও পাথরের নমুনা নিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করেছেন। সম্প্রতি স্যাটেলাইট প্রযুক্তি এবং সমুদ্র তলের মাধ্যাকর্ষণ মানচিত্র ব্যবহার করে জিল্যান্ডিয়াকে একটি সমন্বিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
সমুদ্র তলদেশ থেকে প্রায় ১২ হাজার ২১৭ ফুট উচ্চতায় এই মহাদেশের অবস্থান। খুবই সম্পদশালী এই মহাদেশ। এর সমুদ্রের নিচে রয়েছে বিপুল পরিমাণের জীবাশ্ম জ্বালানি, যা পৃথিবীর ভবিষ্যতের দীর্ঘ সময়ের জ্বালানির চাহিদা মেটাতে সক্ষম।
এই গবেষণাটি টেকটোনিক্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। ব্র্যান্ডন বলেছেন যে এই সাবডাকশন জোন প্লেটটির গঠন ৪৫০ মিলিয়ন বছর আগে শুরু হয়েছিল। এটি অস্ট্রেলিয়ান এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্লেটগুলির মধ্যে থেকে তৈরি হয়েছে।