ইতিহাসের উত্থান-পতনের, প্রতিটি বাঁকের সাক্ষী কিন্তু বাংলা। অর্থাৎ সেই সময়ের অবিভক্ত বাংলা। হিন্দু রাজ-রাজাদের শাসন যেমন দেখেছে, মুঘল রাজাদের অধীনস্তও থাকতে হয়েছে বহুসময় ধরে। এরপর ছিল দেশভাগের যন্ত্রণা। আজকের রাজনীতির এই কলুষতা, বিভাজন তাই আর ক্ষতবিক্ষত করে না।
আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট যখন বাংলা আক্রমণ করে সেই সময় রাজপাটে ছিলেন গঙ্গারিদাই। এর আগে কিন্তু গুপ্ত বা মৌর্য সম্রাটরা বাংলায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারেনি। তবে এর পরে পাল রাজবংশ এখানে একটি বিশাল সাম্রাজ্য তৈরি করে এবং চার শতাব্দী ধরে রাজত্ব করেছিল। পাল রাজাদের পরে, বাংলা সেন রাজবংশ দ্বারা শাসিত হয়েছিল। পরবর্তীতে মুঘলরা এসে শাসন শুরু করে।
বাংলায় শাসন করা দশটি রাজবংশ হল- পাল রাজবংশ সেন রাজবংশ, ইলিয়াস রাজবংশ, বায়েজিদ রাজবংশ, ইলিয়াস রাজবংশ, হাবসি রাজবংশ, হুসেন রাজবংশ, শুর রাজবংশ কররানি রাজবংশ।
বাংলায় শাসন করা নবাবরা হলেন, মুর্শিদকুলি জাফর খান (১৭১৭-১৭২৭), সুজাউদ্দিন (১৭২৭-১৭৩৯), সরফরাজ খান (১৭৩৯-১৭৪০), আলিবর্দী খান (১৭৪০-১৭৫৬), সিরাজ উদ দৌল্লা (১৭৫৬-১৭৫৭)। ব্রিটিশ শাসনের সময় বাংলার নবাব ছিলেন- মির জাফর, মির কাশিম, মির জাফর (২য়), নাজম উদ দৌলাহ, সইফ উদ দৌলাহ।
মুঘলদের পরে বাংলার ইতিহাসে ইউরোপীয় বাণিজ্য গোষ্ঠীর আগমন হয়। যা ইতিহাসের গতিপথে বাঁক নিয়ে আসে। পলাশির যুদ্ধ দিয়ে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল। রাজনৈতিক লাভের জন্য ব্রিটিশদের বাংলা ভাগ হোক বা দেশের স্বাধীনতার লড়াই এই বাংলাই নীরব সাক্ষী থেকেছে বর্ণময় ইতিহাসের।
১৯৪৭ সালের পর কিছুটা বদল আসে শাসনে। একচ্ছত্র রাজপরিবারগুলির ক্ষমতা কিছুটা স্তিমিত হয়ে আসতে থাকে।কারণ সেই সময় এসেছে রাজ্য পুনর্গঠন আইন। যদিও দেশের বেশ কিছু রাজ্যে ক্ষমতা হ্রাস করলেও প্রতিপত্তি বজায় থাকে ওই রাজপরিবারগুলির। কালের নিয়মে তা ধীরে ধীরে ক্ষয়িষ্ণু হয়ে ওঠে। একসময়ে রাজার নীতি ও শাসনে থাকা বাংলায় বর্তমান রাজনীতিও বোধহয় তাই দেশের নিরিখে গুরুত্বপূর্ণ।