লক্ষ লক্ষ বছর ধরে একই রকম ভাবে পৃথিবীর(Earth) বুকে প্রাণ সঞ্চার করে চলেছে সূর্য(Sun)। কিন্তু মহাকাশ বিজ্ঞানীরা হাজার গবেষণার করেও এখনও পর্যন্ত এই আশ্চর্য কর্মকাণ্ডের গভীরে পৌঁছতে পারেননি। ফলে, পৃথিবীর বুকে প্রাণের সঞ্চার থেকে সৌরমণ্ডলের(Galaxy) অত্যাশ্চর্য বিষয় এখনও অজানা আমাদের কাছে। (ছবি সৌজন্য: গেটি)
তবে, মনে করা হচ্ছে সূর্য ও তার থেকে কীভাবে সৌরমণ্ডলের সৃষ্টি হয়েছিল তার একটি সম্যক ধারণা এবার পাওয়া যাবে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ, তাঁদের গবেষণায় দেখা দিয়েছে সূর্যের মতো আরও একটি তারা। মার্কিন মাহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র NASA-র নতুন গবেষণায় দেখা দিয়েছে এই তারাটি পৃথিবী থেকে মাত্র ৩০ আলোকবর্ষ দূরে। ফলে, এই নতুন তারাটি ও তার ব্যাসার্ধের মধ্যে ঘটা কর্মকাণ্ডই আমাদের খোঁজ দিতে পারে সূর্য ও সৌরমণ্ডল সৃষ্টির ইতিহাসের। (ছবি সৌজন্য : গেটি)
ব্যাপারটি অনেকটা সেই টাইম মেশিনের মতো। দ্যা অ্যাস্ট্রোপিজ়িক্যাল জার্নাল নামক একটি পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, নতুন তারাটি নিয়ে গবেষণায় বহু নতুন নতুন আবিষ্কারের সম্ভাবনা রয়েছে। কীভাবে করোনাল এমিশন হয়েছে? কীভাবে সৃষ্টি হয়েছে পৃথিবী, মঙ্গল, বুধের মতো গ্রহগুলি? কীভাবেই বা তৈরি হয়েছে সূর্যের এই প্রবল তাপশক্তি? (ছবি সৌজন্য : গেটি)
তবে, ইতিহাসে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি এতোটাও সহজ নয়, তা কিন্তু ইতিমধ্যেই বুঝতে পেরেছেন NASA-র বিজ্ঞানীরা। তবে, নিঃসন্দেহে এটা বলা যায় এই নতুন তারাটি সম্পর্ক গবেষণায় উঠে আসেবে একাধিক অজানা তথ্য। প্রসঙ্গত, আমাদের সৌরমণ্ডলের চারিপাশে লক্ষ লক্ষ তারা রয়েছে। সেখানে প্রতি ১০টি তারার মধ্যে একটিতে আমাদের মতোই সৌরমণ্ডলও রয়েছে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের।(ছবি সৌজন্য : গেটি)
নতুন তারাটির নামকরণ করা হয়েছে কাপ্পা-১ সেটি(Kappa 1 Ceti) বলে। মনে করা হচ্ছে তারাটি ৬০০ থেকে ৭০০ মিলিয়ন বছর পুরনো। যা আনুমানিক আমাদের সূর্যের বিকিরণে পৃথিবীর বুকে প্রাণ সঞ্চারের সমান। NASA-র বিজ্ঞানীদের অনুসারে মহাকাশ বিজ্ঞানের ভাষায় এই তারাটি আমাদের প্রতিবেশী। কারণ এখনও পর্যন্ত আবিষ্কার হওয়ার তারাগুলির মধ্যে এটিই নিকটতম। ফলে, এই তারাটিকেই মনে করা হচ্ছে সূর্যের জমজ হিসেবে। (ছবি সৌজন্য : গেটি)
বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি একটি মডেল তৈরি করেছেন, যা অনেকটা Kappa 1 Ceti-র বৈশিষ্টযুক্ত। হুব্বল স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে তথ্য জোগাড় করে তাকে মডেলটিকে প্রয়োগ করে ইতিহাস জানার চেষ্টা করছেন তাঁরা। যদিও, বিষয়টি নির্ভুল তথ্য না দিলেও, অনেকটাই জানা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন গবোষকরা। ফলে আমাদের সূর্য ও সৌরমণ্ডল সম্পর্কে বহু নতুন তথ্য মেলার আশা রয়েছে।(ছবি সৌজন্য : গেটি)
আনুমানিক ৪.৬৫ বিলিয়ন বছর আগে সৃষ্টি হয়েছিল সূর্যের। কিন্তু, মনে করা হয়, মধ্য বয়সে এসেই প্রথম পৃথিবীর বুকে প্রাণ সঞ্চারের রসদ যুগিয়ে ছিল সূর্য। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, তার সূচনা কালে সূর্যের থেকে অনেক বেশি তেজিক্রিয় রষ্মি নির্গত হত। এবং নিজের বলয়ের ওপর বর্তমান সময়ের থেকে ৩ গুণ বেশি জোরে প্রদক্ষিণ করতো। সেই সঙ্গে তার চৌম্বকক্ষেত্রও ছিল আরও শক্তিশালী।(ছবি সৌজন্য : গেটি)
লক্ষ লক্ষ বছর পার করে এখন অনেকটাই শক্তি ও তেজ হারিয়েছে সূর্য। ফলে, সেই তেজষ্ক্রিয় রশ্মির প্রভাব এখন শুধুমাত্র পৃথিবীর দুই মেরুতেই সীমাবদ্ধ রয়েছ। যাকে আমরা অরোরা বলেই জেনে থাকি। মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মতে, হাজার হাজার বছর আগে হয়তো এই রশ্মি পৃথিবীর প্রতিটি কোনা থেকেই দেখা যেত। কিন্তু সূর্যের তেজষ্ক্রিয়তা কমে যাওয়ার ফলেই, তা শুধুমাত্র দুই মেরুতে এসে ঠেকেছে।(ছবি সৌজন্য : গেটি)
মনে করা হয়, সূর্য সৃষ্টি হওয়ার পর থেকেই তার ওপর যে ধরনের পরিবর্তন এসেছে তা থেকেই হয়তো পৃথিবীর চুম্বকক্ষেত্রেও পরিবর্তন এসেছে। আর তাই বুধ বা মঙ্গলের মতো বৈশিষ্ট পায়নি পৃথিবী। সেই জন্যই হয়তো, পৃথিবীর বুকে এতো সহজেই প্রাণের সঞ্চার ঘটে চলেছে। (ছবি সৌজন্য: গেটি)