![রাচিন রবীন্দ্র](https://akm-img-a-in.tosshub.com/lingo/styles/medium_crop_simple/public/images/story/202310/whatsapp_image_2023-10-05_at_23.14.19.jpeg)
ICC Cricket World Cup 2023 NZ vs ENG: আমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ডের মধ্যে ICC ওডিআই বিশ্বকাপ ২০২৩-এর উদ্বোধনী ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে স্টিম রোলার চালিয়ে দিয়েছে নিউজিল্যান্ডের দুই ব্যাটার। এই ম্যাচে কিউই দলের অধিনায়ক টম ল্যাথাম টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন। এমন পরিস্থিতিতে প্রথমে ব্যাট করে ইংল্যান্ড নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৮২ রান সংগ্রহ করে এবং নিউজিল্যান্ডকে ২৮৩ রানের লক্ষ্য দেয়।
তবে নিউজিল্যান্ড তাদের ইনিংসের ঝড়ো সূচনা করে এবং ব্রিটিশদের পরাজিত করে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত কিউই খেলোয়াড় রাচিন রবীন্দ্র ইংলিশ বোলারদের হারাতে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন। তিন নম্বরে এসে তিনি দ্রুত রান তুলতে শুরু করেন এবং একটি শক্তিশালী সেঞ্চুরিও করেন। আর সঙ্গে সঙ্গে ভারতে ভাইরাল হয়ে পড়েছেন তিনি। কে এই রাচিন রবীন্দ্র তা নিয়ে শুরু হয়েছে উৎসাহ।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই তারকা বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচেই ৮২ বলে সেঞ্চুরি করেন তিনি। এই ইনিংসে এখন পর্যন্ত তার ব্যাট থেকে দেখা গেছে ৪টি ছক্কা ও ৯টি চার। ইংলিশ বোলারদের যথেচ্ছ তুলোধোনা করেন তিনি। এ ছাড়া বাঁ হাতি বোলিংয়েও নেন ১ উইকেট।
কে এই রাচিন?
রাচিন রবীন্দ্র নিউজিল্যান্ডের ওয়েলিংটনে জন্মগ্রহণ করলেও তার বাবা-মা ভারতীয়। তাঁর বাবা রবি কৃষ্ণমূর্তি একজন সফটওয়্যার আর্কিটেক্ট। নিউজিল্যান্ডে আসার আগে নিজের শহর বেঙ্গালুরুর হয়ে ক্লাব পর্যায়ের ক্রিকেট খেলেছেন। তিনি পরে কর্মসূত্রে নিউজিল্যান্ডে শিফট করে যান।
জয়সূর্য-জাদেজার সঙ্গে তুলনা
অনেকেই এখন রাচিনের সঙ্গে রবীন্দ্র জাদেজার তুলনা করছেন। জাদেজার মতোই তিনিও বাঁ হাতে ব্যাট করার পাশাপাশি বাঁ হাতে অফস্পিন টাও করেন। ফলে তুলনা আসাটা স্বাভাবিক। তবে এদিন ব্রিটিশদের যেভাবে উড়িয়ে দিলেন তিনি, তাতে বিশ্ব ক্রিকেটের আরও এক বাঁ হাতি স্পিন-অলরাউন্ডার শ্রীলঙ্কার সনথ জয়সূর্যর সঙ্গেও তুলনা করছেন অনেকে। ১৯৯৬ বিশ্বকাপের সময় ৬-৭ নম্বরে খেলা জয়সূর্যকে ওপেন করতে পাঠিয়ে সফল করে তুলেছিলেন তৎকালীন অধিনায়ক অর্জুন রণতুঙ্গা। একইভাবে এদিনের কিউই অধিনায়ক টম ল্যাথাম এদিন আরও এক কিংবদন্তীর জন্ম দিয়ে গেলেন কি না, তা সময় বলবে। তবে এদিনের ফর্ম ধরে রাখতে পারলে অনেক রেকর্ডই ভেঙে দেবে সবাই।
ডেভন কনওয়ে এবং রাচিন রবীন্দ্র আজ যেভাবে ব্যাট করেছেন তা অবিশ্বাস্য। দুজনেই সেঞ্চুরি করেন। কিন্তু একই সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে দুজনের মধ্যে গড়ে ওঠে ২০০ রানের জুটি। কিউই দলের ওপেনার উইল ইয়ং যখন আউট হন, তখন নিউজিল্যান্ডের স্কোর ছিল মাত্র ১০ রান। এরপর থেকে রাচিন এবং কনওয়ে ইনিংসের হাল ধরেন এবং আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ওডিআই বিশ্বকাপ ২০২৩-এর প্রথম ম্যাচ জিতে নেয় নিউজিল্যান্ড মাত্র ১ টি উইকেট হারিয়ে। স্কোরের খাতায় নথিবদ্ধ হয় ৯ উইকেটে জয়।
রাচিনের নামের পিছনে দ্রাবিড়-সচিনের হাত
২৩ বছরের রাচিনের নামকরণ হয়েছে ভারতের দুই প্রাক্তন ক্রিকেটার সচিন তেন্ডুলকর এবং রাহুল দ্রাবিড়ের নাম মিলিয়ে। শেষের জন ঘটনাচক্রে ভারতীয় দলের বর্তমান কোচ। নিউজিল্যান্ডের ওয়েলিংটনে এক ভারতীয় পরিবারে জন্ম রাচিনের। তাঁর বাবা রবি কৃষ্ণমূর্তি পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। মা দীপা গৃহকর্ত্রী। ১৯৯০-এর দশকে বেঙ্গালুরু থেকে ওয়েলিংটনে চলে আসেন রবি। সেখানে তিনি হাট হকস ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন।
বেঙ্গালুরুতে থাকায় সময়েই ক্রিকেটের প্রতি ঝোঁক ছিল রবির। অল্পবিস্তর খেলাধুলোও করেছেন। ছেলেকেও ক্রিকেটার করার ইচ্ছা ছিল। পরিবারের সমর্থনে নিজেকে ক্রমশ ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে তুলতে থাকেন রাচিন। আদতে তিনি অলরাউন্ডার। স্পিনার হিসাবেই বেশি পরিচিত ছিলেন। কিন্তু বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে তাঁকে তিন নম্বরে ব্যাট করতে পাঠিয়ে দেয় নিউ জ়িল্যান্ড। প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওপেন করতে নেমে ৯৭ রান করা ব্যাটার নিরাশ করেননি দলকে। ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়লেন রাচিন। অপরাজিত রইলেন ১২৩ রানে।