১৯৯৯ সাল। বিশ্বকাপে স্টিভ ওয়ের ক্যাচ ফেলেছিলেন হার্শেল গিবস। জনশ্রুতি গিবসকে স্টিভ ওয় বলেছিলেন,'বন্ধু তুমি বিশ্বকাপটাই ফেলে দিলে'। সেবার ফাইনালে ওটা হয়নি প্রোটিয়াবাহিনীর। তার ২৫ বছর বাদে গিবসের ভুল করলেন না সূর্যকুমার যাদব। ক্যাচ ধরলেন, ম্যাচ জেতালেন।
২৪ বলে দরকার ২৬ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার হাতের মুঠোয় ম্যাচ। ১৯ নভেম্বরের রাত ফিরে আসার জোরালো সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কিন্তু হল না। ১৮তম ওভারে এলেন জসপ্রীত। এনে দিলেন কাঙ্ক্ষিত উইকেট। তারপর অর্শদীপ সিংয়ের কৃপণ বোলিং। তবে তখনও ক্রিজে কিলার মিলার। ম্যাচের রং যে কোনও মুহূর্তে বদলে দিতে সিদ্ধহস্ত। শেষ ওভারের ভারতের দুই সেরা হাতিয়ার বুমরা ও অর্শদীপের নির্ধারিত ৪ ওভার শেষ। বল হাতে এলেন হার্দিক পান্ডিয়া। ৬ বলে দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার ১৬। উইকেটের সামনে ডেভিড মিলার। আইপিএলে তাঁর ব্যাটিংয়ের ছটা দেখেছেন ভারতীয় ক্রিকেটভক্তরা। ক্রিকেট-ঈশ্বর কি সহায় হবেন রোহিতের? হলেন। ১৯ নভেম্বরের রাত ফিরল না। ক্রিকেট ঈশ্বর যেন সূর্যকুমার যাদব রূপেই ধরা দিলেন। বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচে কঠিনতম পরিস্থিতিতে ঠান্ডা মাথায় বাউন্ডারির ধারে অসাধ্য ঘটালেন সূর্য। স্কাই নামেই যাঁর নামডাক।
হার্দিকের প্রথম বলই ফুলটস। লং অফে মারলেন ডেভিড মিলার। কিন্তু ঠিক বাউন্ডারি লাইনের সামনেই বল তালুবন্দি করলেন সূর্যকুমার। চকিতে বল হাওয়ায় ছুড়ে দিলেন। কারণ শরীরের ভারসাম্য নেই। একচুল এদিক-ওদিক হলেই ওভার বাউন্ডারি। বল হাওয়ায় ভাসিয়ে দড়ির ওপার থেকে এপারে এসে ক্যাচ ধরলেন স্কাই। থার্ড আম্পায়ার আউট দিলেন। উদযাপন শুরু ভারতীয়দের। ওই ক্যাচই ঘুরিয়ে দিল ম্যাচের মোড়। দক্ষিণ আফ্রিকার ওখানেই আবারও বিশ্বকাপ ফেলে দিয়ে এল। শাপমুক্তি ঘটল না প্রোটিয়াদের। আরও একবার চোকার্সই হয়ে থাকলেন এডেন মার্করামরা। জেতা ম্যাচ মাঠেই ফেলে এলেন।
ক্রিকেটভক্তরা আবার পিছিয়ে গিয়েছেন আরও আগে। সেই ১৯৮৩ সালে। সেবার প্রথমবার বিশ্বকাপ জিতেছিল টিম ইন্ডিয়াই। ফাইনালে অসম্ভব ক্ষিপ্ততায় ক্যাচ ধরেছিলে অধিনায়ক কপিল দেব। সেই ক্যাচ ম্যাচের রং পাল্টে দিয়েছিল। ভারতের ১৮৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ক্যারিবিয়ান দল দুই উইকেট হারানোর পর বিপজ্জনক হয়ে ওঠেন ভিভিয়ান রিচার্ডস। ২৮ বলে করে ফেলেছিলেন ৩৩ রান। ভিভ একাই ম্যাচ শেষ করে দিচ্ছিলেন। ঠিক তখনই ভিভের ক্যাচ ধরে ক্যারিবিয়ানদের বিজয়রথ থামান কপিল দেব। ১৯৮৩ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় কপিলের ভারত।