India Vs South Africa T20 Series: প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে গিয়েছিল। তাই সবার নজর ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির দিকে। সরকারিভাবে দ্বিতীয় ম্যাচ হলেও এটি ভারতের এটি ছিল সফরের প্রথম ম্যাচ। যেখানে ভারতীয় দল ব্যাটে ভাল করলেও বলে ব্য়র্থ হয়। যার ফলে ম্যাচ হেরে সিরিজ জয়ের সম্ভাবনা জলে গিয়েছে। কারণ এখন সিরিজ দাঁড়িয়েছে ২ ম্যাচের। ফলে ভারতের পক্ষে আর সিরিজ জেতা সম্ভব নয়, তবে সিরিজে সমতা ফিরিয়ে অন্তত ড্র করে মুখ রক্ষা করা সম্ভব। এখন সেটাই লক্ষ্য।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজের তৃতীয় এবং শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ আজ ১৪ ডিসেম্বর খেলা হবে। সমতা ফেরানোর জন্য এই ম্যাচ জেতা অত্যন্ত জরুরি। এর জন্য ভারতীয় বোলাররা নিজেদের পারফরমেন্স যদি ঠিক করতে না পারেন, তাহলে কপালে দুঃখ রয়েছে। নির্বাচকদের নজরেও থাকবে এই পারফরমেন্স। কারণ আগামী বছর জুন মাসের যে টি২০ ওয়ার্ল্ড কাপ রয়েছে, তাতে জায়গা পেতে হলে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ভালো পারফর্ম করা জরুরি। এই ম্যাচ ভারতীয় সময়ে সাড়ে আটটায় শুরু হবে।
বোকেবোরহাতে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ভারত হেরে গিয়েছে এবং এখন সিরিজ বাঁচানোর জন্য ভারতকে দুর্দান্ত প্রদর্শন করতে হবে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ভারত এখন আর মাত্র ৪ টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবেন। তার মধ্যে একটি আজ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে হয়ে যাবে। খেলোয়াড়দের হাতে আর বেশি সময় নেই।
বোলিং নিয়ে দুশ্চিন্তা
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সময় টিম ইন্ডিয়ার বোলাররা নিজেদের লাইনলেন্থ খুঁজে পেতে লড়াই করেছেন। বাঁ হাতি বোলার অর্শদীপ সিং এবং ডানহাতি বোলার মুকেশ কুমার ১৫.৫০ এবং ১১.৩৩ রান গড়ে প্রতি ওভারে রান দিয়েছেন। ব্যক্তিগত কারণে সিরিজ থেকে বাইরে রয়েছেন দীপক চাহারও। তাঁর খামতি দলকে ভুগতে হয়েছে।
জসপ্রীত বুমরার মতো সিনিয়রদের অনুপস্থিতিতে টিমকে ভরসা যোগাতে ব্যর্থ মুকেশ-অর্শদীপ। এমনকী কাম ব্যাক করা মহম্মদ সিরাজও দ্বিতীয় ম্যাচে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেননি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সম্প্রতি টি-টোয়েন্টি সিরিজের ৪-১ এ ভারত জয়ের পরও বোলিংয়ে খামতি নজর এসেছে। অর্শদীপ বেঙ্গালুরুতে পঞ্চম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দুর্দান্ত শেষ ওভার করেছেন। কিন্তু তাছাড়া তার বাকি চার ম্যাচে ১০.৬৮ গড়ে নাম দিয়ে ৪টি উইকেট নিয়েছেন।
মুকেশ গতি বাড়িয়েছেন কিন্তু রান আটকাতে পারেননি
মুকেশ বলে গতি বাড়িয়েছেন। কিন্তু রানের গতি আটকাতে পারেননি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে চার ম্যাচে তিনি ৯.১২ ইকোনমি রেটে রান দিয়ে ৪ টি উইকেট পান। এক বছর এবং চার মাস পরে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে আসা রবীন্দ্র জাদেজাও প্রভাবিত করতে পারেননি। ভারতের নির্ভরযোগ্য ওপেনার শুভমান গিল-যশস্বীর উপর চাপ থাকবে ভালো প্রদর্শনের। দুজনেই আগের ম্যাচে শূন্য রানে আউট হয়ে গিয়েছিলেন।
সূর্য এবং রিঙ্কুর ওপর থাকবে ভাল করার চাপ
দ্বিতীয় ম্যাচে শুরুর উইকেট হারানোর পর ম্যাচে ভারতকে ফিরিয়ে আনেন সূর্য কুমার যাদব রিঙ্কু সিং জুটি। দুজনেই হাফ সেঞ্চুরি করেন। এছাড়া তিলক বর্মা এবং রবীন্দ্র জাদেজাও ভালো ব্যাট করেছেন।
ভারতীয় দল যদিও জয়ের চেয়ে সবাইকে বাজিয়ে দেখে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রথম ম্যাচ ভেস্তে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে শেষ কয়েকটি সিরিজে টি২০তে ওপেনিংয়ে সফল ঋতুরাজ গায়কোয়াড়কে বসিয়ে শুভমান গিলকে ফেরানো হয়েছিল। যদিও আগের ম্যাচে দুই ওপেনার গিল ও যশস্বী জয়সওয়াল দুজনের শূন্য রানেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন। ফলে কাউকেই তেমন পরীক্ষা করা যায়নি। তবে তৃতীয় ম্যাচেও ওপেনিংয়ে বদল আনবে না ভারতীয় দল বলে মনে হচ্ছে। আর পরীক্ষা করতে হলে এক ম্যাচের ব্য়র্থতা মাপকাঠি হতে পারে না।
উইকেট কিপিংয়ে ইশান কিসানকে বসিয়ে দ্বিতীয় টি২০তে জিতেশ শর্মাকে খেলানো হয়েছিল। ব্য়র্থ হয়েছেন তিনিও। যদিও এই ব্যর্থতাকে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে পরীক্ষার অংশ হিসেবে রোটেশন পদ্ধতিতে ইশান কিসানকে খেলানো হতে পারে বলে অন্দরের খবর।
স্পিন বোলিংয়ে কুলদীপ-জাদেজা দুজনেই ভাল বল করেছেন। তা সত্ত্বেও দুজনকেই বসিয়ে অক্ষর প্যাটেল, রবি বিষ্ণোইকে খেলানো হতে পারে। পিছনে সেই রোটেশন ও পরীক্ষা। তাঁরা সুযোগ পেলে কী করেন, তা দেখার।
তবে সবচেয়ে মাথাব্যথা পেস বোলিং নিয়ে। অর্শদীপ নিয়ম করে প্রতি ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে বেদম প্রহৃত হচ্ছেন। দ্বিতীয় টি২০তে প্রথম ওভার করতে এসে ২৪ রান দেন তিনি। যার পর তাঁকে বসিয়ে দেওয়ার দাবি উঠেছে। প্রথম ম্যাচে রান দিলেও ভাল বল করেছেন মহম্মদ সিরাজ, মুকেশ কুমার। তাঁদের দুজনেক রেখে তৃতীয় পেসার হিসেবে দীপক চাহারকে খেলানো হতে পারে। এখন যাঁকেই খেলানো হোক, পরীক্ষার পাশাপাশি টিমের জয়ও গুরুত্বপূর্ণ। ফলে জয়ের জন্য ঝাঁপাবে ভারত।