১৩ বছর পর বিশ্বকাপ জিতল ভারত। সূর্যকুমার যাদবের ক্য়াচ যদি দক্ষিণ আফ্রিকার কাফিনে শেষ পেরেক পুঁতে থাকে, তাহলে দক্ষিণ আফ্রিকার শেষের শুরু হয় বুমরার বলে। ১৮ তম ওভারে বল করতে আসে জসপ্রীত বুমরা। সেই ওভারে বুমরার বলে বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন মারকো জানসেন। ৪ বলে ২ রান করেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকা ১৫৬ রানে ৬ উইকেট হারায়।
ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে ব্যাটার হিসেবে বিরাট কোহলি এই ম্যাচে দুর্দান্ত খেললেও ম্যাচ তখনও ৫০-৫০ ছিল। ম্যাচের রং বদলে দেন জসপ্রিত বুমরা, হার্দিক পান্ডিয়া এবং আরশদীপ সিং।বিশে। করে বুমরার বল। কারণ বুমরা তখন মারকোর উইকেট না নিলে ও সেই ওভারে অথ কম রান না দিলে ম্যাচে ফিরতে পারত না ভারত।
বুমরা দ্বিতীয় ওভারে রিজা হেন্ড্রিক্সকে আউট করেন। আরশদীপ তৃতীয় ওভারে এইডেন মার্করামকে প্যাভলিয়নে ফেরান। তারপর দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা ভালো খেলতে শুরু করেন। ম্যাচ ভারতের হাত থেকে বেরোতে শুরু করে। এক সময় তো ভারতীয় সমর্থকরা হয়তো জেতার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। তবে বুমরা ম্যাচে ভারতকে ফেরান। দক্ষিণ আফ্রিকার একটা সময় ৩০ বলে মাত্র ৩০ রান দরকার ছিল। তবে সেখান থেকে ম্যাচকে নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসেন বুমরা।
ক্লাসেনের আগ্রাসী ব্যাটিং ভারতকে চাপে রেখেছিল। শেষ পর্যন্ত হার্দিক তাঁকে আউট করে আবার লড়াইয়ে ফেরে ভারত। ক্লাসেন করেন ২৭ বলে ৫২ রান।
ক্লাসেন আউট হতে পাল্টা চাপে পড়ে যায় প্রোটিয়ারা। জানসেনও (২) দলকে ভরসা দিতে পারেননি। তিনি আউট হন বুমরার বলে। পর পর ২ উইকেট হারানোর পর ডেভিড মিলার এবং মহারাজও চাপ সামলাতে পারেননি। কিন্তু ক্লাসেন আউট না হলে ম্য়াচ হাতছা়ড়া হত ভারতের। সেখানেই বুমরা নিজের কাজটি করেন। সেই ওভারে বুমরার বোলিং ম্যাচ ভারতের পক্ষে এনে দেয়। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে, ১৮ তম ওভারে নিজের সেরা ওভারটি করেন জসপ্রীত বুমরা। মিলানকে প্রথম তিন বলে মাত্র ২ রান করতে দেন। তারপরে তিনি মার্কো জ্যানসনের উইকেট নেন। এতে দক্ষিণ আফ্রিকা চাপে পড়ে। আর সেখান থেকেই ম্যাচে ফেরে ভারত।
ম্যাচ শেষে বুমরার প্রশংসা করেন ক্যাপ্টের রোহিত শর্মা। তিনি বলেন, 'সব পেসার ভালো বল করেছে। তবে বুমরা নিজের কাজটা খুব ভালো করে জানে। কোন সময় কোন কাজটা করলে ম্যাচে ফেরা যাবে সেটা বুমরার থেকে ভালো কেউ বোঝে না। বুমরার দীর্ঘদিন ধরে এই কাজটা করে আসছে। আমি জানি না কীভাবে করে, তবে ও ঠিক কাজটা করে দেয়।'
এদিকে ভারতের জেতার পর এক্স হ্যান্ডলে ভিডিয়ো বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, 'সমস্ত দেশবাসীর পক্ষ থেকে অনেক অনেক অভিনন্দন। ১৪০ কোটি দেশবাসী গর্ববোধ করছেন। খেলার মাঠে আপনারা বিশ্বকাপ জিতলেন, দেশের হৃদয় জিতেছেন। বিশেষ কারণে মনে থাকবে এই টুর্মামেন্ট। অনেক শুভকামনা।' এই ম্যাচকে 'ঐতিহাসিক' বলে বর্ণনা করেছেন মোদী।