জালে উঠেছে টন টন খোকা ইলিশ। সকালের প্রাতরাশ থেকে রাতের নৈশভোজ- সুন্দরবনের বাসিন্দাদের পাতে থাকছে ইলিশ। ওই এলাকায় জলের দরে বিকোচ্ছে পুলিশ। মাত্র ৫০ টাকা খরচ করলেও ইলিশ কিনে বাড়ি ফিরতে পারবেন। অথচ কলকাতায় ইলিশের দাম আগুন। কেন এমন উলটপুরাণ?
আসলে ৫০০ গ্রামের কম ওজনের ইলিশ বেচা নিষিদ্ধ। সে কারণে কলকাতার বাজারে আসছে না ছোট ইলিশ। অথচ জালে ছোট ইলিশ উঠছে মৎস্যজীবীদের। সেই ইলিশই কড়ির দামে বিকোচ্ছে সুন্দরবনে। সাধারণ বাসিন্দারা কিনছেনও সেই সব মাছ। বর্ষায় মনের মতো ইলিশের পদ রান্না করে খাচ্ছেন তাঁরা।
বর্ষায় ফ্রেজারগঞ্জ, নামখানা, কাকদ্বীপ ও ডায়মন্ড হারবারে ব্যাপক মাছ উঠেছে মৎস্যজীবীদের জালে। এর মধ্যে কয়েক টন ছোট মাছও ধরা পড়েছে। তার কোনওটার ওজন ৯০ গ্রাম। আবার কোনওটার ৩০০ গ্রাম। এক স্থানীয় বাসিন্দা জানালেন, সকালে চায়ের সঙ্গেও ইলিশ ভেজে খাচ্ছেন। গত কয়েকদিন সুন্দরবনে ৫ টন ইলিশ বিক্রি হয়েছে। যে মাছের ওজন ২৫০ গ্রামের কম।
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ১২০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিকোচ্ছে ৮০ টাকায়। প্রায় ২৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম ১৫০ টাকা। মৎস্যজীবীরা জানাচ্ছেন, পূর্ব দিক থেকে বাতাস আসছে। সেই সঙ্গে ঝিরঝিরে বৃষ্টি। তাতেই ইলিশ ধরার অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। গত সপ্তাহে তাই বিশাল পরিমাণ মাছ ধরা পড়েছে।
সুন্দরবন সাগরদ্বীপ মৎস্যজীবী শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক সতীনাথ পাত্রের কথায়,'এখনও পর্যন্ত ১০০০ টন ইলিশ মাছ ধরেছেন মৎস্যজীবীরা।' নামখানা মাছ বাজারের ব্যবসায়ী প্রদীপ পাল জানিয়েছেন, গত ৪ বছরে এত ইলিশ ওঠেনি, যা এবার হয়েছে।
তবে ডায়মন্ড হারবারের বাসিন্দারাই নন, আশেপাশে এলাকার মানুষরাও ইলিশসুখ পাচ্ছেন। ডায়মন্ড হারবার থেকে লুকিয়েচুরিয়েই যাচ্ছে ছোট ইলিশ মাছ। এর মধ্যে চলছে পুলিশি অভিযানও। মঙ্গলবারই পুলিশের অভিযানে ধরা পড়েছে ১০০০ কেজির ছোট ইলিশ। নামখানাতেই একটি ট্রলার থেকে উদ্ধার হয়েছে। পুলিশি ধরপাকড় এড়াতে অনেকেই মাঝ সমুদ্র মাছ ফেলেও দেন।