"চাইলে রোশন গিরির (Roshan Giri) পাহাড়ে প্রবেশ বন্ধ করতে পারি। কিন্তু তিনিও আমাদেরই লোক, তাই আটকানো হয়নি। আমরা পাহাড়ের উন্নয়নের জন্য এসেছি।" কার্শিয়াং-এ রোশন গিরির পালটা সভায় এমনটাই বললেন মোর্চা (Gorkha Janmukti Morcha) নেতা অনিত থাপা (Anit Thapa)। গত ২৯ তারিখ কার্শিয়াং-এ সভা করেছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিমল গুরুং (Bimal Gurung) পন্থী নেতা রোশন গিরি। এরপর সেখানেই পালটা সভা করলেন মোর্চার বিনয় তামাং (Bjnay Tamang) গোষ্ঠীর নেতা অনিত থাপা। ট্যুরিস্ট লজ থেকে মোটর স্টেশন পর্যন্ত মিছিলে পা মেলান হাজার হাজার মানুষ।
এদিন অনিত বলেন, "আমরা ২০১৭ সালে রাজ্য সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলাম, পাহাড়ে শান্তি ফিরেছিল। পাহাড়ের প্রধান বিষয় হল পর্যটন ও চা। যদি পাহাড়ে অশান্তি থাকে তবে এই দুটি ক্ষেত্রেও সমস্যার সৃষ্টি হবে। যা পাহাড়ের মানুষের ওপর প্রভাব ফেলবে।" অনিতের আরও মন্তব্য, "রোশন বলেছেন জিটিএ-র অডিট হওয়া উচিত। আমরা এর জন্য প্রস্তুত। এই সংক্রান্ত সমস্ত কাজ আমরা ই ফাইলিং-এর মাধ্যমে করে ফেলেছি। কিন্তু বিমল গুরুং-এর সময় যখন অডিট শুরু হয়েছিল, সেই সময় অফিস এবং সমস্ত ফাইল পুড়ে গিয়েছিল। সেই টাকা বিমলরা নিয়েছিলেন এবং ২০১৭-র বিক্ষোভের সময় তাঁরা পালিয়ে যান ও দিল্লিতে গিয়ে ফূর্তি করেন।" এদিন বিমলদের উদ্দেশ্যে অনিতের প্রশ্ন, "২০১৭ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হাত মেলানোর কথা আমরা প্রকাশ্যে বলেছিলাম, কিন্তু এখন তাহলে আপনারা হাত মেলালেন কেন?"
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সাল থেকে গা ডাকা দিয়ে থাকার পর সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছেন একদা পাহাড়ের 'শেষ কথা' বিমল গুরুং। প্রকাশ্যে এসেই এনডিএ-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থনের কথা বলেছেন তিনি। যদিও বিমলদের সমর্থন নেওয়া হবে কি না সেবিষয়ে অবশ্য এখনও স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে বিমল গুরুংরা কিন্তু চুপ করে বসে নেই। আগামী ৬ তারিখ শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্কে সভাও করার কথা রয়েছে বিমল গুরুং-এর। এদিকে বিমল প্রকাশ্যের আসার পর থেকেই বাড়তে শুরু করেছে পাহাড়ের রাজনৈতিক উত্তাপ। সক্রিয় হয়েছে, বিমল পন্থী ও বিরোধী দুই শিবিরই। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকও করেছেন বিনয় তামাং। যদিও পরে তিনি বলেন বৈঠকে বিমল গুরুং-কে নিয়ে কোনও কথা হয়নি। তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে বিমলরা পাহাড়ে ফেরার জন্য যত সক্রিয় হবেন, ততই ক্ষমতার পাহাড়ের রাশ নিজেদের হাতে রাখতে তৎপর হবে বিনয় তামাং গোষ্ঠীও। সেক্ষেত্রে বিমল-বিনয়ের ক্ষমতার দখলের লড়াইতে পাহাড় আবারও অশান্ত হতে পারে বলেই আশঙ্কা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের।