একমাসের উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। সেখানে পৌঁছেই এরাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ে সাংবাদিকদের সামনে রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন ধনখড়। ফের একবার এরাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পাহাড়ে বসেই ট্যুইট করলেন। কাশ্মীরে শহিদ এরাজ্যের জওয়ান সুবোধ ঘোষের অন্ত্যেষ্টিতে বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারকে বাধা দেওয়ার প্রসঙ্গ নিয়ে মঙ্গলবার একাধিক ট্যুইট করতে দেখা গেল বাংলার রাজ্যপালকে।
নদিয়ায় নিজের গ্রামে সোমবার শহিদ জওয়ান সুবোধ ঘোষের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। সেখানেই বিজেপি সাংসদকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। এই ঘটনা নিয়ে মঙ্গলবার সকালে বেশ কয়েকটি ভিডিও ট্যুইটারে পোস্ট করেন রাজ্যপাল। ধনখড়ের অভিযোগ, তৃণমূল সরকারের আমলে পুলিশের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বলে কিছু নেই। রাজ্যপাল ট্যুইটে লেখেন, 'বিজেপি সাংসদের সঙ্গে ব্যবহার পুলিশকর্তাদের কর্তব্যচ্যুতি। ' আরেকটি ট্যুইটে ধনখড়কে লিখতে দেখা যায়, 'শাসক দলের সাংসদ অতিথি, বিরোধী সাংসদ অনাহূত!'
Police “Political neutrality” @MamataOfficial in flames !
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) November 17, 2020
Treatment meted out @WBPolice to MP Jagannath Sarkar at last rite ceremony of martyr Sh.Subodh Ghosh at Palassy crematorium, Nadia is gross dereliction of duty by SP and DM #Nadia
Sought report from ACS @HomeBengal DGP pic.twitter.com/ReD1pNmhKt
গোটা ঘটনায় ইতিমধ্যে রাজ্য পুলিশের ডিজি ও স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে তিনি রিপোর্ট তলব করছেন বলেও জানান খনখড়। রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুরজিৎ কর পুরকায়স্থকে উদ্দেশ্য করেও ট্যুইট করেছেন রাজ্যপাল। ধনখড় লেখেন, 'রাজ্যের কাছ থেকে তথ্য চাওয়া নিয়ে আপনার তরফে কী বাধ্যবাধ্যকতা রয়েছে, তা আমার জানা নেই। কিন্তু প্রশাসনের কেউ উর্দিধারীদের এধরনের সীমা লঙ্ঘন দেখলে হতবাক হবেন।'
Alerted State Security Advisor @MamataOfficial Sarjitkar Purkayastha “I have frankly no idea of obligations at your end for want of information from the State, but surely anyone concerned with governance would be shaken at such outrageous transgressions by persons in uniform.” pic.twitter.com/6UjscD9LIL
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) November 17, 2020
ধনখড়ের অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন গণতন্ত্রকে লজ্জিত করছে। গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হলে রাজ্য পুলিশের এই অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক পরিণতি হওয়া উচিত। সরকারি কর্মচারীরা রাজনৈতিকভাবে কাজ করলে তাদের আইনের কোপে পড়তে হবে।
Democracy @MamataOfficial shamed ! Ruling party MP a guest and opposition MP so browbeaten on such solemn occasion. Exemplary consequences for this delinquency in uniform @WBPolice must if democracy is to survive.
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) November 17, 2020
Public servants acting politically would face wrath of law. pic.twitter.com/WVkwdewQoF
তবে এই প্রথম নয়। পাহাড়ে বসে এর আগেও একাধিকবার রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনের তুমুল সমালোচনায় সরব হয়েছেন ধনখড়। দার্জিলিংয়ের রাজভবনে বসেই রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন শাসকদলের হয়ে কাজ করছে বলে ট্যুইট করতে দেখা গেছে তাঁকে। এরআগে চলতি মাসের শুরুতে শিলিগুড়ি পৌঁছেও রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরাতে দেখা গেছিল তাঁকে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে বলে তিনি কড়া ভাষায় বিবৃতি দেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
এরাজ্যে রাজ্যপালের দায়িত্ব নিয়ে আসার পর থেকে নানা ইস্যুতে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছেন রাজ্যপাল। কখনও রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নিয়ে সরব হয়েছেন আবার কখনও রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। করোনা মোকাবিলা নিয়েও রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষোভ উগরে গিয়েছেন। এই অবস্থায় রাজ্যপালকে বিজেপির এজেন্ট বলে বারবার তোপ দেগেছে শাসকদল। এমনকী খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে জগদীপ ধনখড়ের নামে নালিশ জানিয়েছেন। যদিও সেসবে আমল দেননি রাজ্যপাল।বরং স্বভাবসিদ্ধ ঢঙেই রাজ্যের সমালোচনায় চালিয়ে যাচ্ছেন ধনখড়।