Durgapuja 2023 Mahalaya Tarpan Teesta River: গত ৪ অক্টোবর সিকিম পাহাড়ে যে হ্রদ ভেঙে হড়পা বানের সৃষ্টি হয়েছিল, তার জেরে ভুগতে হয়েছে তিস্তা এবং তিস্তার পারের বাসিন্দাদের। প্রচুর মানুষের সলিল সমাধি ঘটেছে তিস্তার জলে। ঘটনার পর থেকে নানা সামগ্রীর সঙ্গে ভেসে এসেছে প্রচুর মৃতদেহ। যা দেখে শিউরে উঠেছেন সমতলের তিস্তাপারের বাসিন্দারা। সমতলে মূলত জলপাইগুড়ি জেলার উপর দিয়ে এই নদী প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তিস্তার এই ভয়াল ও নির্দয় আচরণে ব্যথিত তিস্তাপারের বাসিন্দারা তাই ক্ষুব্ধ প্রিয় নদীর উপর। নিলেন বড় সিদ্ধান্ত।
প্রিয় তিস্তার উপর অভিমান
মহালয়ার ভোরে প্রতি বছর জলপাইগুড়ির তিস্তার জলে তর্পণ করেন বহু মানুষ। এই বছর তাঁরা এই নদীর জলে নেমে পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণ করবেন না। তিস্তার জলে প্রচুর মানুষের জীবনহানি হয়েছে। তাই তাঁদের প্রিয় নদীর উপর ক্ষোভ ও অভিমান জমেছে অনেক। এ কারণে এ বছর মহালয়ায় তাঁরা তর্পণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিস্তার জলে তর্পণ না করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করল বঙ্গীয় পুরোহিত এবং যজমান সংঘ।
জল দুষণ এবং বিপদের ভয়ও রয়েছে
বঙ্গীয় পুরোহিত এবং যজমান সংঘের সভাপতি জয়ন্ত চক্রবর্তী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, জল এই মুহূর্তে দুষিত হয়ে রয়েছে। তিস্তা এখন অপবিত্র। সেই সঙ্গে নদীর যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের বিষ্ফোরক। যজমানদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই এই বছর তিস্তা ছেড়ে অন্যত্র তর্পণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। জয়ন্তবাবু জানান, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মানুষ থেকে শুরু করে গবাদি পশুর মৃতদেহ নদীর জলে ভেসে এসেছে ৷ যা শোকের সৃষ্টি করেছে। ভারতীয় সেনার ভেসে আসা বিভিন্ন বিস্ফোরক, শেল যখন তখন ফেটে যাচ্ছে৷ এই অবস্থায় তিস্তার জল দূষিত তো বটেই, অপবিত্রও বটে ৷ তাই যজমানদের কথা ভেবেই এবার আমরা তিস্তায় কোনও তর্পণ করানো হবে না বলে তিনি জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত কয়েকদিন আগে সিকিমে হড়পা বানে ভেসে যাওয়া কুড়িটিরও বেশি দেহ সম্প্রতি তিস্তা নদী থেকে উদ্ধার হয়েছে৷ শুধু জলপাইগুড়ি জেলা নয়, লাগোয়া কোচবিহার জেলাতেও তিস্তার জলে একাধিক দেহ ভেসে এসেছে৷ যার মধ্যে একাধিক সেনাকর্মীরে দেহও ছিল৷ এর মধ্যে অধিকাংশ দেহই এখনও শনাক্ত না হওয়ায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতােল মর্গে রেখে দিতে হয়েছে।