উপনির্বাচনের মুখেই উত্তরবঙ্গে BJP-তে বড় ভাঙনের সম্ভাবনা প্রবল। মাদারিহাট উপনির্বাচনের আগেই হয়তো বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিতে পারেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লা। আলিপুরদুয়ারে চা বাগানের এই শ্রমিক নেতার গতিবিধি ঘিরে জোরাল জল্পনা। কারণ, সোমবার রাতে জন বার্লার বাড়িতে দেখা গেল তৃণমূল নেতৃত্বকে। দীর্ঘ সময় ধরে চলল বৈঠক। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানের প্রশ্নে স্পষ্ট উত্তর দিলেন না কোনও পক্ষই।
লোকসভা ভোটে মনোজ টিগ্গার হয়ে প্রচার করতেও দেখা যায়নি
লোকসভা ভোটের আগে থেকেই বারবার নিজের দল বিজেপি-র বিরুদ্ধে নানা সমালোচনা শোনা গিয়েছিল তাঁর গলায়। ২০১৯ সালে বিজেপি-র টিকিটে আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে জিতে সাংসদ হয়েছিলেন জন বার্লা। কেন্দ্রে মন্ত্রীও ছিলেন। মোদী মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তিনি। কিন্তু ২০২৪ সালের ভোটে আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে বিজেপি তাঁকে টিকিট দেয়নি। তাঁর বদলে টিকিট পেয়েছিলেন মনোজ টিগ্গা। জিতেছেন। মনোজ টিগ্গাকে টিকিট দেওয়ার কথা ঘোষণার পর থেকেই প্রকাশ্যে ক্ষোভ ব্যক্ত করেছিলেন জন বার্লা। এমনকী মনোজ টিগ্গার হয়ে প্রচার করতেও দেখা যায়নি তাঁকে। কয়েক সপ্তাহ আগে বার্লার বোন যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেসে।
'আপনারাই বুঝে নিন, কে ওয়ানম্যান আর্মি'
তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের পরে সংবাদমাধ্যমের সামনে বিজেপি নিয়ে একরাশ ক্ষোভই উগরে দিলেন বার্লা। মনোজ টিগ্গার নাম না করে বার্লা বললেন, 'ওয়ান ম্যান আর্মি হিসেবে জেলাকে পরিচালনা করা হচ্ছে। আমাকে ছাড়া জিততে পারলে ভাল। আমারই ভাই, বিজেপি কার্যকর্তা, ও নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়াল। আমি এখন সবার সাথেই আছি। কেউ ওয়ানম্যান আর্মি হয়ে জেলাকে চালালে, কী হবে। কেউ নেতৃত্বই দিতে পারছে না। জেলায় অনেক নেতা নামতে পারছেন না। আপনারাই বুঝে নিন, কে ওয়ানম্যান আর্মি। আমি চেয়ারম্যান, আমিই এমপি, আমিই এমএলএ, সব কিছুই তুমি, বাকিরা কী করবে? চা বাগানের যাঁরা স্থায়ী কর্মী নেতা, তাঁদের দলের কোনও কমিটিতেই রাখে না। আমাদের আদিবাসী তো দূরের কথা।'
কী বলছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব?
অন্য দিকে জন বার্লার সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ মিটিং সেরে আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র দুলাল দেবনাথ বলছেন, 'এই এলাকার একজন বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, একজন প্রাক্তন সাংসদ, বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতা, তাঁর সঙ্গে নির্বাচনের আগে একটা সৌজন্য সাক্ষাত্কার করতে এসেছি।' জন বার্লা কি তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন? প্রশ্নের উত্তরে দুলালের বললেন, 'তৃণমূলে যোগ দেবেন কিনা, সেটা সময় কথা বলবে। এ বিষয়ে রাজ্য নেতৃত্ব ঠিক করবে।'