Landslide Darjeeling Flood Assam: যত দিন যাচ্ছে উত্তরবঙ্গ বিশেষ করে পাহাড়ের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও ধস নামছে। এবার সেবকে ধস নেমে গাছ উপড়ে পড়ে। যার জেরে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে নতুন করে ধস নেমে রাস্তা বন্ধ হয়েছে। এদিকে পাহাড় ও তিস্তা নদীর গায়ে থাকা তিস্তাবাজার এলাকা, রম্ভি, কালিঝোরার বাসিন্দারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। তিস্তার ভয়াল রূপ শান্ত হচ্ছে না, টানা বৃষ্টি চলতে থাকায়। কালিম্পংয়ের জেলাশাসক বালাসুব্রহ্মণিয়ান টি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পাহাড় কেটে রাস্তার জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা বের করার কাজ চলছে। যেসব ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পাহাড় কাটার প্রয়োজন নেই, সেখানে মেরামতির কাজে হাত দেওয়া হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক চালু করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তবে বৃষ্টিতে সমস্য়া হচ্ছে কাজে।
গত কয়েকদিনে গয়াবাড়ি, মহানদী, তিনধারিয়া, রংটং সহ একাধিক এলাকায় টয়ট্রেনের লাইনে ধস পড়েছে। লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় টয়ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রাখা হয় পাঁচ তারিখ থেকেই। সরকারিভাবে ৭ তারিখ পর্যন্ত পরিষেবা বন্ধের কথা ঘোষণা করে ডিএইচআর। কিন্তু রেলসূত্রে জানা গিয়েছে, সব জায়গা থেকে এখনও ধস সরানো সম্ভব হয়নি। তাছাড়া টানা বৃষ্টি পড়ায় রেলকর্মীদের কাজে ব্যাঘাত ঘটেছে। পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সরকারিভাবে টয়ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার সময়সীমা আরও বাড়তে পারে বলে খবর।
আজ সকালে ভূমিধসের জেরে একটা বড় গাছ উপড়ে পড়ে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের সেবকে। যদিও জাতীয় সড়কটি বন্ধ থাকায় তেমন সমস্যা হয়নি। তবে গাছটি কেটে পরিষ্কার করে দেওয়া হয়। যদিও শুধু সেবক নয়, এদিনও ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে ধস নামে। যা বিপত্তি ডেকে আনে মেরামতের কাজে। ফলে দিন যত যাচ্ছে, ততই জাতীয় সড়কের পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠছে। কবে সড়কটি দিয়ে যান চলাচল শুরু হবে, স্পষ্ট হচ্ছে না কিছুই। চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে তিস্তা এবং জাতীয় সড়কের ধারের বাসিন্দাদের। কয়েকটি এলাকায় রসদে টান পড়েছে বলে খবর। বৃষ্টি আরও সমস্যা বাড়িয়ে তুলেছে বলে প্রশাসনিক কর্তাদের বক্তব্য। বৃষ্টি কমার পূর্বাভাস অবশ্য পাওয়া যাচ্ছে না আবহাওয়া দপ্তরের থেকে। বরং মঙ্গলবার থেকে টানা কয়েকদিন ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
অসমেও বন্যার মতো পরিস্থিতি রয়েছে। রাজ্যের প্রধান নদীগুলি বিপদ চিহ্নের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মতে, রাজ্যে বন্যার কারণে ৫২ জনেরও বেশি মানুষ এবং ৩০ টিতে ২৪ লাখেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। আরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। কাছাড়, কামরুপ, ধুবরি, নগাঁও, গোয়ালপাড়া, বারপেটা, ডিব্রুগড়, বোঙ্গাইগাঁও, লখিমপুর, জোড়হাট, কোকরাঝাড়, করিমগঞ্জ এবং তিনসুকিয়া ক্ষতিগ্রস্ত জেলার অন্তর্ভুক্ত।
অমিত শাহ তার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বলেছেন, "ভারী বৃষ্টির কারণে অসমে বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমি অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছি। এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ যুদ্ধের ভিত্তিতে কাজ করছে। ত্রাণ সরবরাহ করছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধার করা হচ্ছে।"
ধসে বিপর্যস্ত পথে ট্রেন চললে আরও বেশি ধসের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। এ ব্যাপারে কথা বলতে ডিএইচআর ডিরেক্টর একে মিশ্রর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর ফোন পরিষেবা সীমার বাইরে থাকায় বক্তব্য মেলেনি। তবে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে বলেছেন, ‘ধসের কারণে ট্রেন চলাচল আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে রাজ্যের কোনও চিঠির প্রতিলিপি এখনও আমার কাছে পৌঁছায়নি।’
এসবের মাঝে রাজ্য রেলকে চিঠি দিয়ে পরিষেবা আপাতত বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়েছে। যতদিন না পর্যন্ত ধস সরিয়ে রাস্তা মেরামত করা হচ্ছে, ততদিন অন্তত যেন ট্রেন চালানো না হয়, সেই আবেদন জানানো হয়েছে। যদিও ডিএইচআর কিংবা রেলের তরফে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়াহয়নি।