scorecardresearch
 

North Bengal Flood Situation:রেড অ্যালার্ট উত্তরবঙ্গের ৩ জেলায়, 'প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছি,' বললেন রাজ্যপাল

বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে উত্তরবঙ্গে পৌঁছলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। তৃণমূলের রাজভবন অভিযানের সময় কলকাতাতেই থাকছেন না তিনি। প্রবল বর্ষণ এবং তিস্তার জলোচ্ছ্বাসের জন্য উত্তরবঙ্গে যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা দেখতে বৃহস্পতিবার ভোরে উত্তরবঙ্গে যান রাজ্যপাল।

Advertisement

মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যয় সিকিমে। তিস্তা সংলগ্ন এলাকায় ভয়াবহ পরিস্থিতি। ভেঙেছে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ড্যাম। সিকিম ও বাংলার দার্জিলিং পেরিয়ে তিস্তা জলপাইগুড়ি জেলায় সমতলে প্রবেশ করছে। ফলে চরম আতঙ্কে দিন কাটছে উত্তরবঙ্গবাসীর। এরসঙ্গেই হাওয়া অফিস বলছে, এদিনও জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারের কোনও কোনও জায়গায় অতিপ্রবল বৃষ্টি হতে পারে। যে কারণে এই তিন জেলার জন্য লাল সতর্কতা জারি রয়েছে। এছাড়া দার্জিলিং, কালিম্পং, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর ও মালদার কোনও কোনও জায়গায় অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে। যে কারণে কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

পুজোর আগেই উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।  উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। মুখ্যসচিবকে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন  বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। উত্তরবঙ্গে গিয়েছেন মন্ত্রিসভার সিনিয়র সদস্য এবং আইএএস আধিকারিকেরা। পাশাপাশি, সিকিমের পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছেন বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্ট। বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছেন সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং।

প্রাকৃতিক দুর্যোগে সিকিমে এখনও পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। নিখোঁজের সংখ্যা শতাধিক। ২০ হাজারেরও বেশি মানুষের জীবনে দুর্যোগের প্রভাব পড়েছে।  পরিস্থিতি জানতে সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।  সিকিমের রাজ্যপালকে ফোন  করেন বাংলার রাজ্যপালও ।  এদিকে বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে উত্তরবঙ্গে পৌঁছলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। তৃণমূলের রাজভবন অভিযানের সময় কলকাতাতেই থাকছেন না তিনি। প্রবল বর্ষণ এবং তিস্তার জলোচ্ছ্বাসের জন্য উত্তরবঙ্গে যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা দেখতে বৃহস্পতিবার ভোরে উত্তরবঙ্গে যান রাজ্যপাল। বৃহস্পতিবার সারাদিন উত্তরবঙ্গেই থাকবেন তিনি। অর্থাৎ তৃণমূলের প্রতিনিধিরা ১০০ দিনের বঞ্চিতদের চিঠি নিয়ে রাজভবনে গেলেও তাঁর দেখা পাবেন না।

আরও পড়ুন

সকালে বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছন রাজ্যপাল। এরপরেই উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন। যেসব এলাকায় অ্যালার্ট জারি হয়েছে সেখানেও যেতে পারেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সিকিমের হড়পা বানে উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ পরিস্থিতি৷ ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়েছিলেন রাজ্যপাল। এরপরেই দিল্লি সফর কাটছাঁট করে উত্তরবঙ্গে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এদিন বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছে রাজ্যপাল জানান, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি জানাচ্ছেন, প্রয়োজনে এনডিআরএফ নামান হবে। এদিন জলমগ্ন এলাকাগুলির পরিদর্শনের পাশাপাশি ক্যাম্পে গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গেও কথা বলবেন তিনি।

Advertisement

প্রসঙ্গত প্রবল বৃষ্টিতে ভয়ঙ্কর বিপর্যয় নেমে এসেছে সিকিমজুড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত সিকিমে যাওয়ার দশ নম্বর জাতীয় সড়ক। যার ফলে বাংলার সঙ্গে সিকিমের যোগাযোগ সম্পূর্ণ স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। যার ফলে বহু যাত্রী আটকে পড়েছে শিলিগুড়িতে। বন্ধ রয়েছে সিকিমের সঙ্গে  বাস পরিষেবা। সিকিমের পথে যে সমস্ত যাত্রীদের যাওয়ার কথা ছিল সবাই প্রায় আটকে পড়েছেন। এই অবস্থায় স্টেশনে আটকে পড়া সিকিমগামী যাত্রী ও পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা মাথায় রেখে খাবারের ব্যবস্থা করেছে রেল পুলিশ। অন্যদিকে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। নতুন করে আরও বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হবে বলেই আশঙ্কা।  তিন হাজারেরও বেশি পর্যটক সিকিমে আটকে আছে বলেও জানা যাচ্ছে। যার মধ্যে বাংলার বহু পর্যটক আছেন।  সিকিম প্রশাসন জানাচ্ছে, ভয়ঙ্কর এই বিপর্যয়ে অন্তত ১৪টি ব্রিজ ভেঙে গিয়েছে। এই অবস্থায় পর্যটকদের ফেরানোটাই বড় চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে উত্তরবঙ্গের সমস্ত প্রশাসনিক আধিকারিকদের অ্যালার্ট করা হয়েছে নবান্নের তরফে।

তিস্তার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গে পুনর্ভবা, টাঙ্গনের  পাশাপাশি মহানন্দা নদীর জল স্তরও ক্রমশ বাড়ছে। ইতিমধ্যে বামনগোলা ব্লক, গাজোল ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় নদীর জলে প্লাবিত হয়েছে। মহানন্দা নদীর জল বাড়ায় নদীর তীরবর্তী এলাকা গুলিতে জল ঢুকে পড়েছে প্লাবিত হয়েছে এলাকাগুলি। অন্যদিকে  পাহাড় থেকে ঘরবাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে তেড়ে আসছে তিস্তা। বৃহস্পতিবারের ভারী বৃষ্টির পর  শুক্রবার উত্তরবঙ্গের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই দিন আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। তবে অন্য জেলাগুলিতে হাল্কা বৃষ্টির সম্ভাবনা। আগামী ২৪ ঘন্টায় তাপমাত্রার সেরকম পরিবর্তন না হলেও, পরের দুদিনে তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। 

Advertisement