Padmashreee Eklabya Sharma: ছোট ছোট লেককে সঠিকভাবে নজরদারি না করলে যে কোনও সময় ঘটতে পারে সিকিমের হড়পা বানের মত ঘটনা। মনিটরিং স্টেশন কম হওয়ার কারণেই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে অনুমান করছেন পদ্মশ্রী ডঃ একলব্য শর্মা। এই ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে যাতে দ্রুত মনিটারিং স্টেশন বাড়ানোর উপর জোর দেন, সেই পরামর্শ দিলেন তিনি। শনিবার শিলিগুড়ি ৪৬ নং ওয়ার্ডে তার নিজের বাসভবনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এমনটাই জানালেন পদ্মশ্রী। গোটা দেশেই বিভিন্ন বিষয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের পদ্মশ্রী সম্মান জানানো জানানো হবে। ইতিমধ্যে গোটা দেশে ১৩২ জনের নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছেন মূলত কার্শিয়াংয়ের বাসিন্দা অধ্যাপক একলব্য শর্মা।
তাঁর মতে এই ধরনের ঘটনার রুখতে হলে প্রয়োজন রয়েছে মনিটরিংয়ের। দেখা গিয়েছে সিকিম সহ ভারতের পার্বত্য এলাকায় মনিটরিং স্টেশনের সংখ্যা যথেষ্ট কম। যার ফলে তিস্তার এই দুর্ঘটনা রোখা যায়নি। তাই এই সমস্ত অঞ্চলে মনিটারিং স্টেশন বাড়ানো উচিত। পাশাপাশি তিনি এও আশঙ্কা করেন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না হলে আগামী দিনে এ ধরনের ঘটনা আরও ঘটতে পারে।
গত ৪০ বছর ধরে তিনি হিমালয়ান রিজিয়নে প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করার জন্য হিমালয়ান অঞ্চলে কীভাবে বাস্তুতন্ত্র রক্ষা এবং সংরক্ষণ করা যায় তা নিয়ে গবেষণা করছেন। এ বিষয়ে বিশেষ অবদানের জন্য তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
সিকিমে বন্যার হ্রদ বিস্ফোরণের কারণ
গত বছর অক্টোবর মাসে তিস্তা নদীতে হড়পা বানে যে দুর্ঘটনা ঘটে তা নিয়ে তিনি বলতে গিয়ে বলেন, "আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে বিশ্ব উষ্ণায়ন বাড়ছে যার ফলে পার্বত্য অঞ্চলে হিমবাহ তৈরি হচ্ছে। এর ফলে তৈরি হচ্ছে ছোট ছোট হিমবাহ লেক। যার ফলে আবহাওয়ার পরিবর্তন হলে পরিবর্তন হলে বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে সেই লেকগুলির মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটছে। যার ফলস্বরূপ তিস্তা নদীতে এই হড়পা বানের মত ঘটনা।"
অন্যদিকে তিনি পাহাড়ে যেভাবে দিনের পর দিন বহু দল বিল্ডিং তৈরি হচ্ছে তা নিয়েই আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন পাহাড়ের বড় উঁচু বহু তল বিল্ডিং গুলি সব সময় সব সময়ই মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিপরীতে কাজ করে। যার ফলে ধস কিংবা দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থেকে যায়। পাহাড়ে যাতে বড় বিল্ডিং না তৈরি করে স্যাটেলাইট টাউনশিপ করে জায়গা সম্প্রসারণ করা উচিত। এই বড় বড় বিল্ডিং এর কারণে প্রকৃতির এবং বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি হচ্ছে। প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রেখে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
জন্ম থেকে শুরু করে স্কুল জীবন তার কার্শিয়াং এর সেন্ট মেরিস এলাকায় কাটলেও । গত দু'বছর ধরে তিনি শিলিগুড়িতে বাড়ি করে থাকছেন। তিনি কার্শিয়াংয়েই প্রাথমিক পাঠ ও স্কুল শিক্ষা নিয়েছেন। উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর দার্জিলিংয়ের একটি সরকারি কলেজে এক বছর পড়াশোনা করার পর তিনি বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটিতে পড়ানোর জন্য চলে যান। সেখান থেকে পিএইচডি করেন তিনি। বর্তমানে তিনি বেঙ্গালুরুতে গবেষণায় কাজে যুক্ত রয়েছেন। পদ্মশ্রী তালিকায় তাঁর নাম থাকার খবর ছড়িয়ে পড়তেই তাঁকে বাড়িতে গিয়ে সংবর্ধনা জানালেন শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ।