scorecardresearch
 

Siliguri Bhutia Market: ভুটিয়ারা নেই, তবু চাহিদা তুঙ্গে শিলিগুড়ির ভুটিয়া মার্কেটে

এক সময় ভুটিয়া মার্কেট ছিল শীতকালে পাহাড় থেকে নেমে আসা গুটিকয় ভুটিয়াদের শীতের আস্তানা। শীতে পাহাড়ে জমে কুলপি হওয়ার ভয়ে তাঁরা কয়েক মাস সমতলে কাটানোর পরিকল্পনা করে নেমে আসতেন। তখন শিলিগুড়ি আজকের মতো এত ব্যস্ত ছিল না। মন্থর শিলিগুড়িতে সে সময় ভুটিয়ারা এখানে জাঁকিয়ে বসতেন কয়েক মাস। আবার শীত কমলে ফিরে যেতেন পাহাড়ে।

Advertisement
শিলিগুড়ির ভুটিয়া মার্কেট থেকে হারিয়ে গেছে ভুটিয়ারাই, তবে গ্ল্যামার; জনপ্রিয়তা বেড়েছে শিলিগুড়ির ভুটিয়া মার্কেট থেকে হারিয়ে গেছে ভুটিয়ারাই, তবে গ্ল্যামার; জনপ্রিয়তা বেড়েছে

Siliguri Bhutia Market: শিলিগুড়ি কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের যে দিকে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ অফিস, ঠিক তার সামনে রয়েছে ভুটিয়া মার্কেট। শীত পডার আগে থেকেই মার্কেট বসে যায়। চলে সেই শীত বিদায়ের পরও মার্চ মাস পর্যন্ত। শিলিগুড়ি তথা উত্তরবঙ্গ তো বটেই, বিহার, নেপাল থেকেও মানুষ যাঁরা বিভিন্ন কাজে শিলিগুড়ি আসেন, ভুটিয়া মার্কেটে এসে হাল ফ্যাশনের খোঁজ নিয়ে যান। আর বলাই বাহুল্য যাওয়ার আগে পছন্দ হলে একাধিক গরম পোশাকে ব্যাগ বোঝাই করেন। ভুটিয়া মার্কেটের এই পোশাকের বাজার ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে।

এক সময় ভুটিয়া মার্কেট ছিল শীতকালে পাহাড় থেকে নেমে আসা গুটিকয় ভুটিয়াদের শীতের আস্তানা। শীতে পাহাড়ে জমে কুলপি হওয়ার ভয়ে তাঁরা কয়েক মাস সমতলে কাটানোর পরিকল্পনা করে নেমে আসতেন। তখন শিলিগুড়ি আজকের মতো এত ব্যস্ত ছিল না। মন্থর শিলিগুড়িতে সে সময় ভুটিয়ারা এখানে জাঁকিয়ে বসতেন কয়েক মাস। আবার শীত কমলে ফিরে যেতেন পাহাড়ে। সে প্রায় ৩৫-৪০ বছর আগের কথা। শিলিগুড়িতে আসার সময় তাঁরা সঙ্গে করে নিয়ে আসতেন কিছু নিজেদের রীতিতে হাতেবোনা গরম পোশাক। সোয়েটার-মাফলার, টুপি এসব কিছুই তাঁরা হাতে বুনতেন। সে ছবি অনেকেরই মনেই এখনও জীবন্ত। তবে ধীরে ধীরে শহরে ব্যস্ততা বাড়তে থাকে। শহর আধুনিক থেকে অত্যাধুনিক হয়। হাতে বোনা জিনিসের কদর কমতে থাকে, বিকল্প মেশিনে তৈরি জিনিস সস্তায় বাজারে ঢুকতে শুরু করে। জ্যাকেটের রমরমা শুরু হয়।

ধীরে ধীরে বাজারে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়তে থাকেন ভুটিয়ারা। তবে বাজার কিন্তু ক্রমশ আরও জনপ্রিয় হতে থাকে। বাণিজ্যিক লাভ বাড়তে থাকায়, স্থানীয়রা ক্রমশ বাজারে স্টল নিতে শুরু করে। সেই সঙ্গে দার্জিলিং, কালিম্পং থেকে বিক্রেতারা দোকান ভাড়া নিতে শুরু করেন। এখন আর ভুটিয়ারা নেই বললেই চলে। কেউ কেউ কখনও সখনও আসেন, তবে প্রতিযোগিতায় টিঁকতে না পেরে তাঁরাও পোশাক কিনেই বিক্রি করেন। এর মধ্যে দার্জিলিং-কালিম্পংয়ের কিছু কিছু জিনিস হাতে বোনা মেলে। তবে পরিমাণ খুব কম। কিছুটা অনলাইনের দাপটেও বিক্রি কমেছে হাতে তৈরি গরম পোশাকের। বাজার ছেয়ে গিয়েছে রেডিমেড লুধিয়ানা, দিল্লির গরম পোশাক-জ্যাকেটে।

Advertisement

একদিকে যেমন ভুটিয়ারা হারিয়ে যাচ্ছেন, তেমনই হাতে বোনা উলের সোয়েটার, টুপি এবং মাফলারও মিলছে না। দার্জিলিং থেকে আসা পেম্বা ভূটিয়া বলেন, 'আজ থেকে প্রায় চার দশক আগের কথা। তখন হাতে বোনা উলের সোয়েটার, টুপি মাফলার বিক্রি হত প্রতিটি স্টলেই। কিন্তু এখন সে সবের চাহিদা খুব একটা নেই। এমনকী সেসব তৈরি করার লোকও নেই।

দার্জিলিংয়ের এক ব্যবসায়ী প্রশান্তমণি প্রধান ভুটিয়া মার্কেটে এবার স্টল দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, বহু বছর ধরে তাঁরা স্টল দিচ্ছেন। করোনার পর থেকেই বাজার আগের চেয়ে খারাপ। তবে এবার বেশ খানিকটা বিক্রি বেড়েছে। তাঁরা এক মাস হল ভুটিয়া মার্কেটে চলে এসেছেন। ভুটিয়া মার্কেটে মোট ১১৭টি স্টল রয়েছে। যেগুলির সবগুলিই বেশ জাঁকিয়ে বসেছে। আপাতত শীত বেড়েছে, তাই গত কয়েকদিনে মার্কেটের বিক্রিও বেড়েছে। ফলে আপাতত জমজমাট ভুটিয়া মার্কেট।

 

Advertisement