ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে গণনা শুরু হয়ে গিয়েছে। রাউন্ডে রাউন্ডে টানটান উত্তেজনা। কখনও বিজেপি, কখনও তৃণমূল প্রার্থী এগিয়ে যাচ্ছেন। কিছু সময়ের মধ্যেই ফল সামনে চলে আসবে। তার মাঝে এখানকার লড়াই কাদের মধ্যে তা এক ঝলক চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক। গত ৫ সেপ্টেম্বর এখানে ভোট হয়েছিল। আজ, ৮ সেপ্টেম্বর গণনা৷ ধূপগুড়ি উপনির্বাচন ঘিরে ইতিমধ্যেই টানটান উত্তেজনা রাজনৈতিক শিবিরে৷ শুরু হয়ে গেছে গণনা৷ প্রথমে পোস্টাল ব্যালট দিয়ে শুরু৷ তারপর ২৮ টি টেবিলে ১০ রাউন্ড৷ শেষে ফলপ্রকাশ।
জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি কেন্দ্রের BJP বিধায়ক কিছুদিন আগেই প্রয়াত হয়েছেন। সেই কারণে এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে আগামী সেপ্টেম্বর মাসে। রবিবার তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে এই কেন্দ্রের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়। রাজবংশী অধ্যুষিত এলাকায় নির্মল চন্দ্র রায়ের উপর বাজি রাখে TMC।
এখানে লড়াই মূলত ত্রিমুখী। দক্ষিণবঙ্গের সাগরদিঘি মডেল এবার উত্তরবঙ্গের এই ধূপগুড়িতেও! এখানে সিপিএম প্রার্থীকে সমর্থন করছে কংগ্রেস। ফলে তাদের কোনও প্রার্থী নেই। সিপিএম প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র রায়ের সঙ্গে লড়াইয়ে তৃণমূলের নির্মলচন্দ্র রায় এবং বিজেপির তাপসী রায়। বাম আমলে বামেদের দুর্ভেদ্য গড় থাকলেও শেষ তিন বিধানসভা ভোটে অবশ্য বিজেপি থেকেই বিধায়ক হয়েছিল। ফলে তৃণমূলের কাছে লড়াই ছিল কঠিন। তবে যেহেতু সরকার গঠন হয়ে গিয়েছে, তাই উপনির্বাচনে লড়াই করে সরকার বিরোধী হাওয়া তোলা বেশ কঠিন। তা ভালই জানে বিজেপি কিংবা কং-বাম জোট।
ত্রিমুখী লড়াইয়ের মাঝেই প্রার্থী বদল করে চমক দেয় তৃণমূল। আগের প্রার্থী মিতালি রায়কে সরিয়ে ধূপগুড়ি কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয় অধ্যাপক নির্মল চন্দ্র রায়কে। তারপরই দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন মিতালি। তাতে বিজেপির পাল্লা আরও কিছুটা ভারী হবে বলে মনে করে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
রাজ্যে পালাবদলের পর ২০১১ সাল থেকে এই কেন্দ্রে পরপর দুবার জেতে তৃণমূল। ২০২১ সালে এই কেন্দ্রের বিজেপির বিষ্ণুপদ রায়ের কাছে হারতে হয় তৃণমূলের প্রার্থী মিতালি রায়কে। বিষ্ণুবাবু মারা যাওয়ার পর উপনির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই নতুন কাউকে প্রার্থী করা হবে এরকম গুঞ্জন ঘুরছিল জেলা তৃণমূলের অন্দরে। সেই মোতাবেক, গতবারের পরাজিত মিতালিকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, বামেদের তরফে কংগ্রেসের সমর্থনে CPM এর প্রার্থী করা হয়েছে ঈশ্বরচন্দ্র রায়কে। উল্লেখ্য, ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে ৪৫ শতাংশের বেশি ভোট জিতেছিলেন BJP প্রার্থী বিষ্ণুপদ রায়। ৪৩.৭৫ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন তৃণমূলের মিতালি রায়। অন্যদিকে, বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী প্রদীপকুমার রায়ের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে গিয়েছিল।
২০১১ সালে ৪ হাজারের সামান্য বেশি ভোটে জয়ী হয় সিপিএম। ২০১৬ সালে ১৬ হাজার ভোটে জয়ী হয় তৃণমূল। ২০২১-এ বিজেপি জেতে ৪ হাজার ৩৫৫ ভোটে । ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে ধূপগুড়িতে জয়ী হন বিজেপির বিষ্ণুপদ রায়। হারিয়ে দেন তৃণমূলের মিতালি রায়কে। বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপদের মৃত্যুর কারণেই ধূপগুড়িতে উপনির্বাচন হয়।
তবে এবার পঞ্চায়েত ভোটে ধূপগুড়িতে বিজেপিকে টেক্কা দেয় তৃণমূল। ধূপগুড়ি বিধানসভা এলাকায় পঞ্চায়েত সমিতি ধূপগুড়ি। এই পঞ্চায়েত সমিতিতে ২৭টি আসন। তেইশের পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল ১৯ এবং বিজেপি ৮টিতে জয় পায়।