'বঙ্গ ভঙ্গ'-এ ভয় পেয়েছিল ইংরেজরা! কেন কলকাতা ছেড়ে দিল্লিতে রাজধানী?

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি 'কলিকাতা'য় আসার পরে হুগলি নদীর তীরে এই গ্রামকেই মূলত বেছে নেয় ব্যবসার কেন্দ্র হিসেবে। পরবর্তীকালে যখন কোম্পানি বাহাদুরের হাত থেকে ক্ষমতা যখন ব্রিটেনের রাজপরিবারের হাতে গেল, তখনও তাঁরা কলকাতাকেই বেছে নিলেন ভারতের রাজধানী হিসেবে। --ছবিটি সংগৃহীত

আজ নেতাজি সুভাষচন্দ্রের জন্মদিনের মঞ্চ থেকে কলকাতাকে ফের রাজধানী করার দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবির প্রেক্ষিতেই একবার জেনে নেওয়া যাক ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লি স্থানান্তরের কারণ। --ছবিটি সংগৃহীত
 

১৭৭২ সাল থেকে ১৯১১ সাল পর্যন্ত কলকাতা ছিল ভারতের রাজধানী। রাজধানী দিল্লি স্থানান্তরের বিষয়ে ভাবনাচিন্তা বেশ কিছুদিন ধরেই করছিল ব্রিটিশরা। প্রস্তাবের চিঠিটি লন্ডনে প্রথম পাঠানো হয় ১৯১১ সালের ২৫ অগাস্ট।  প্রাপকের নাম লেখা ছিল তৎকালীন সেক্রেটারি অফ স্টেট ফর ইন্ডিয়া, আর্ল অফ ক্রুইর। চিঠিতে লেখা হয়েছিল, ভারতের রাজধানীর জন্য দেশের কেন্দ্রে থাকা কোনও শহরই ভাল। কলকাতা থেকে শাসনকার্য চালাতে গিয়ে নানা অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। --ছবিটি প্রতীকী

এ ক্ষেত্রে ভূমিকা ছিল বঙ্গ ভঙ্গের। ১৯০৫ সালের ১৬ অক্টোবর প্রশাসনিক কাজের সুবধার্থে দুই বাংলাকে ভেঙে দেয় ব্রিটিশরা। মুসলিম অধ্যুষিত পূর্ব বঙ্গ ও হিন্দু অধ্যুষিত পশ্চিমবঙ্গ। এই ঘটনার পরেই উত্তাল হয়ে ওঠে কলকাতা। বঙ্গ ভঙ্গ আন্দোলন তীব্র আকার নেয়। তখন রল্ড হার্ডিঞ্জ বুঝতে পারেন, কলকাতায় শাসনকার্য চালানোর সুবিধা থাকলেও নানা অশান্তি তৈরি হচ্ছে।  --ছবিটি সংগৃহীত
 

হার্ডিঞ্জ তার পরিকল্পনা ও প্রস্তাবনার কথা লিখে পাঠান, এবং তা অনুমোদন পেয়ে যায় রাজা পঞ্চম জর্জের মাধ্যমে। তিনি জানান, কলকাতার পরিবেশ ঠান্ডা করতে বঙ্গভঙ্গ রদ করার সঙ্গে রাজধানীও অন্য কোথাও স্থানান্তর করতে হবে। --ছবিটি সংগৃহীত
 

অবিভক্ত ভারতের নতুন রাজধানী হিসেবে ১৯৩১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি নয়াদিল্লি যাত্রা শুরু করে। রাজা পঞ্চম জর্জের মাধ্যমে রাজকীয় অনুষ্ঠানে ১৯১১ সালের ১২ ডিসেম্বর নতুন রাজধানী হিসেবে দিল্লির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়েছিল। এর ২০ বছর পর, ১৯৩১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি, ভারতের গভর্নর জেনারেল ও ভাইসরয় লর্ড আরউইন নতুন রাজধানী হিসেবে নয়াদিল্লির উদ্বোধন করেন। --ছবিটি সংগৃহীত

দিল্লিকে রাজধানী করার বিষয়ে কারণ ছিল, মূলত বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক কেন্দ্রসহ দিল্লির অবস্থান।  নতুন রাজধানীটিকে বের করে নিয়ে আসা হয় তৎকালীন পঞ্জাব প্রদেশ থেকে এবং ১৯২৭ সালে এর নামকরণ করা হয় নয়া দিল্লি। --ছবিটি সংগৃহীত

দিল্লিকে রাজধানী হিসেবে সাজাতে ৪ বছরের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল ব্রিটিশরা। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধই সব পরিকল্পনা মাটি করে দেয়। নষ্ট করে দেয় যাবতীয় পরিকল্পনা। তাই শেষ পর্যন্ত ২০ বছর লেগে যায় দিল্লিকে রাজধানী হিসেবে গড়ে তুলতে। কারণ, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশ সরকারেরও আর্থিক ক্ষতি বড় ধরনের হয়। প্রথমে সিভিল লাইনসে সরকারের একটি অস্থায়ী আসন স্থাপন করে ব্রিটিশরা। ১৯১২ সালে সরকারি কর্তাদের বসবাসের জন্য একটি সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিংও তৈরি হয়ে যায়। --ছবিটি সংগৃহীত