ধর্ষণ হওয়ার পর থানার দ্বারস্থ হয়ে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন এক গৃহবধূ। সেই ঘটনার প্রায় মাস দেড়েক বাদে শুক্রবার মাঝ রাতে উদ্ধার হল নিগৃহীতা গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ। ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত কলকাতা পুলিশের গাড়িচালক জয়ন্ত বিশ্বাস। ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন ওই ব্যক্তি। নির্যাতিতার মৃত্যুর পর সমস্ত ঘটনায় পুলিশের তরফে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উত্ত ২৪ পরগনার হাবড়া এলাকার এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে গোটা অঞ্চলে । শনিবার সন্ধ্যায় মৃতার ভাই হাবড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে জানিয়েছেন তার বোনকে চক্রান্ত করে খুন করা হয়েছে। আর তাতে যুক্ত রয়েছে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত জয়ন্ত বিশ্বাস ও তার পঞ্চায়েত সদস্যা স্ত্রী সঞ্চিতা বিশ্বাস। মৃতার স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দিকেও উঠেছে অভিযোগের আঙ্গুল। তাড়াই মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছে ওই গৃদবধূকে।
তদন্তে নেমে পুলিশ ধর্ষণের ঘটনায় শনিবার রাতে অভিযুক্ত জয়ন্ত বিশ্বাসকে গ্রেফতার করেছে। এছাড়া ওই গৃহবধূকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে জয়ন্তর স্ত্রী তথা তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যা সঞ্চিতা বিশ্বাস ও মৃতার স্বামীকে। রবিবার হাবড়া থানার তরফে ধৃতদের পুলিশ হেফাজত চেয়ে বারাসাত আদালতে তোলা হয়।
মৃতার দাদার জানিয়েছেন, ওই মহিলা তৃণমূল পঞ্চায়েত মেম্বারের বাড়িতে থাকতেন। পঞ্চায়েত মেম্বারের স্বামী কলকাতা পুলিশে কর্মরত। নির্যাতিতার স্বামী পরিযায়ী শ্রমিক। তাই বেশিরভাগ সময়ে বাড়ি থাকতেন না। দেড়মাস আগে মহিলার স্বামী বাড়ির বাইরে ছিল। অভিযোগ, সেই সময় পঞ্চায়েত সদস্যর স্বামী মহিলার ঘরে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করে। পুলিশ অভিযোগ জানালে হেনস্থার শিকার হয় ওই বধূ। মেডিক্যাল পরীক্ষা করাতে গেলেও, সেখানে তাঁকে একাধিকবার পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বলে নির্যাতিতার দাদা অভিযোগ করেছেন। নির্যাতিতার দাদার আরও দাবি, থানায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন নির্যাতিতা। কিন্তু পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেনি। এদিকে ওই মহিলার কাছে হুমকি আসতে থাকে। মৃতার বাপেরবাড়ির আরও অভিযোগ," ঘটনার পরে মেয়েকে তাঁর স্বামী বাড়ি ফেরাতে চাইনি। দেড় ধরে মানসিক যন্ত্রনায় ভুগছিল সে। শুক্রবার মাঝরাতে বাড়ি দোতলা ঘরে ঝুলন্ত দেহ মেলে।" মহিলার দাদার দাবি, "পঞ্চায়েত মেম্বার, তাঁর স্বামী জয়ন্ত ও নির্যাতিতার স্বামী চক্রান্ত করে তাঁর বোনকে খুন করেছে।" যদিও একথা মানতে নারাজ মৃতার নাবালক ছেলে। তার দাবি, "বাবা মাকে খুব ভালোবাসত। ওই সব হওয়ার পরে মাকে হুমকি দিত ওই পঞ্চায়েত মেম্বার। তাই মানসিক অবসাদে ভুগছিল। বাঁচতে চাইত না। মা আত্মহত্যা করেছে।"