তৃণমূল কংগ্রেসের নবীন ও প্রবীণ দ্বন্দ্ব ইস্যুতে কটাক্ষ চালিয়ে যাচ্ছে বিরোধীরা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর পর এ বার শাসকদলের নেতাদের নিশানা করলেন সিপিআইএম-এর রাজ্য কমিটির সদস্য শতরূপ ঘোষ। শতরূপের কথায়, 'চোর মানে চোর। বয়স্ক চোরও চোর। কপি চোরও চোর।'
বিতর্কে সুর নরম কুণালের
বস্তুত, নবীন-প্রবীণ ইস্যুতে তৃণমূলের দ্বন্দ্বের জল্পনা অনেক দিন ধরেই। কিছু নেতা অতীতে প্রকাশ্যে উষ্মা প্রকাশ করলেও, পয়লা জানুয়ারি তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবসে রীতিমতো সামনে চলে এসেছে দ্বন্দ্ব। সুব্রত বক্সী, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো প্রবীণ নেতাদের ভাষণের প্রকাশ্যে সমালোচনা করেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। এরপরেই রাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা। যদিও সেই বৈঠক নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্বের ইস্যুতেই কিনা, তা স্পষ্ট নয়। যাবতীয় বিতর্কের মধ্যেই মঙ্গলবার খানিকটা সুর নরম করে কুণাল বলেন, 'ইস্যুভিত্তিক মতপার্থক্য থাকতেই পারে। কিন্তু তৃণমূল লড়াইয়ের ময়দানে ঐক্যবদ্ধ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেত্রী। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেনাপতি। যেখানে সুব্রত বক্সীর মতো সিনিয়র নেতারা রয়েছেন। সবাই যখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াইয়ের ময়দানে দাঁড়াবেন, তখন আর কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না।'
'চোরের আবার কিসের নবীন, কিসের প্রবীণ?'
আর এ হেন বিতর্কের আবহেই এবার তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ করলেন শতরূপ ঘোষ। ব্যারাকপুরে সিপিআইএম-এর একটি সভায় শতরূপের কটাক্ষ, 'বিয়েবাড়িতে যেমন হয়, একটা ব্যাচ খেয়ে উঠলে আরেক একটা ব্যাচ বসে। ঠিক তেমন ভাবেই একটা ব্যাচ বসেছিল কয়লা, বালি, গরু থেকে টাকা খেয়েছে। এখন ওই ব্যাচ উঠে গেলে পরে ব্যাচ টাকা খাবে। চোর মানে চোরই। বয়স্ক চোরও চোর। কচি চোরও চোর। চোরের আবার কিসের নবীন, কিসের প্রবীণ?'
'খোকাবাবু বিজেপির প্রজেক্টেড মুখ্যমন্ত্রী মুখ হন বাংলায়'
মঙ্গলবার তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি অধীর চৌধুরীও। তিনি বলেন, 'নবীন-প্রবীণের যে লড়াই, সেই লড়াইয়ের স্ক্রিপ্ট তৈরি হচ্ছে বিজেপির দফতর থেকে। যে দিন থেকে খোকাবাবু দিল্লিতে ইডির দফতরে হাজিরা দিয়েছিলেন, ৯ ঘণ্টা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল, তার পরের দিন থেকে পাল্টি খেয়েছেন, কংগ্রেসের বিরোধিতা শুরু করেছেন। আগামী দিনে অবাক হবেন না, যদি খোকাবাবু বিজেপির প্রজেক্টেড মুখ্যমন্ত্রী মুখ হন বাংলায়, অবাক হবেন না, অগ্রিম বলে রাখছি। তাই ইডি-সিবিআই খোকাবাবুর প্রতি চুপ।'
অন্যদিকে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কথায়, 'হতে পারে আমার গায়ের চামড়া সূক্ষ্ম নয়। সে কারণে টের পাইনি। আর আমি তো প্রবীণও নই, নবীনও নই। এই বিতর্কে আমি মাথা ঘামিয়ে করবটা কী?'