পশ্চিম বর্ধমান জেলার বারাবনি থানার সাব ইনস্পেক্টর (এসআই) মনোরঞ্জন মণ্ডলকে সাসপেন্ড করল আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট। অপেশাদার কাজ এবং কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগেই তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। তাতে আরও বলা হয়েছে যে মনোরঞ্জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হবে। সাসপেন্ড থাকাকালীন তিনি বেসিক স্যালারির অর্ধেক তুলতে পারবেন। তবে অন্যান্য ভাতা পাবেন। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ওই এসআই-কে পুলিশের কিটস আসানসোল পুলিশ লাইনে জমা দিতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার নবান্নে একটি বৈঠকে পুলিশের নিচুতলার একাংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, কয়লা ও বালিপাচারের কারবারে সাহায্য করছে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশের নিচুতলার একাংশ। সীমানা পেরিয়ে আলু বাইরে চলে যাওয়া নিয়ে পুলিশকেও তুলোধনা করেন তিনি। বৃহস্পতিবার নবান্নে আলুর দাম বৃদ্ধি নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, 'বর্ডার দিয়ে বাংলার আলু বাড়িয়ে চলে যাচ্ছে। আমার প্রয়োজন মিটিয়ে বাইরে যাক কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু বাংলতে দাম বাড়িয়ে অন্য জায়গা থেকে মুনাফা করব, আর আলু চাষিদের জন্য বিমা করব, দুটো একসঙ্গে হতে পারে না।'
পুলিশ কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, 'বর্ডার দিয়ে সব আলু বেরোচ্ছে। কন্ট্রোল করো। নিচুতলার পুলিশ কর্মীরা কয়লাচুরি, বালিচুরি করছে, বদনাম হচ্ছে তৃণমূল নেতাদের। পলিটিকাল নেতারা ৫ টাকা নিলে বলে ৫০০ টাকা খেয়েছে। তবে তারা জনগণের কথা ভাবে, দায়বদ্ধতা থাকে। কিন্তু নিচুতলার একাংশ পুলিশ রাজ্য সরকারকে ভালবাসে না। পুলিশ আর CISF-এর কিছু লোক চুরি করছে। টাকা খেয়ে বালি-কয়লা-সিমেন্ট চুরি করছে। এই জায়গাগুলি টেন্ডার করে দাও। দুর্নীতি করলে আমি বাঁচাব না। আমি সিআইডির খোলনলচে বদলে দেব। দালালরা সমাজকে শেষ করে দিচ্ছে, আর ভাগ দিচ্ছে অনেককে। তাঁদের নিজের বাংলায় আলুর দাম বাড়িয়ে মুনাফা বৃদ্ধি চলবে না।'
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ ও তাঁর কড়া মন্তব্যের পরেই পুলিশ এবং প্রশাসনিক মহলে তৎপরতা শুরু হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বেশ কয়েক জন আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়। তার কারণেই বারাবনি থানার ওসি সাসপেন্ড হলেন।