তাঁর বিধায়ক কার্যালয়ে হামলার অভিযোগ তুললেন বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। এনিয়ে তিনি আবারও ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। হামলার জন্য অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় তৃণমূলের যুবনেত্রী তথা জেলা পরিষদের সদস্য রুনা খাতুন ও তাঁর স্ব্মী অরিজিৎকে। বিধায়ক লিখেছেন, 'অবশেষে আমার আশঙ্কা সত্যি হল। রুনা খাতুন ও তাঁর স্বামী অরিজিৎ দলবল নিয়ে হামলা চালাল আমার জিরাটের কার্যালয়ের উপর। ভেঙে ফেলা হলো দরজা জানালা। ভেঙে আর ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে দিদির ছবি, দলীয় পতাকা। ভেবে দেখুন বলাগড়ের জনগণ, এরা কেমন দিদির প্রতি অনুরক্ত। বলেছিলাম আমার উপর হামলা হতে পারে। আমার কথার বারো ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই রাত আঁধারে জিরাটের আমার বিধায়ক কার্যালয়ে উপরে হামলা হয়েছে। অফিসের লোকদের মেরে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দরজা জানালা ভাঙা হয়েছে। আমি তখন কলকাতায়। আমাকে সামনে পেলে হয়তো খুন করে দিত। প্রিয় বলাগড়ের আপামর জনসাধারণ এই যখন অবস্থা তখন আমি আমার বিধায়ক কার্যালয়ে কীভাবে যাব? কী করে বলাগড়ের জনগণকে পরিষেবা দেব?'
বুধবার দলের একাংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে ফেসবুকে দীর্ঘ পোস্ট করেন মনোরঞ্জন। ফেসবুক পোস্টে হুগলি জেলায় দলেরই এর নেত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হন। তাঁকে 'বালি মাফিয়া', 'মাটি মাফিয়া' বলে আক্রমণ করার পাশাপাশি 'বলাগড়ের ফুলন দেবী' বলেও কটাক্ষ করেছেন মনোরঞ্জন। ওই নেত্রী ২০১৭ সালে শিক্ষিকার চাকরিতে যোগ দিয়ে এক দিনও 'ডিউটি' না করে কী ভাবে বেতন পেলেন, সেই প্রশ্নও তুলেছেন ঘাসফুলে বিধায়ক। এই নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছেন মনোরঞ্জন।
নাম না করে দলের ওই নেত্রী প্রসঙ্গে ফেসবুক পোস্টে মনোরঞ্জন লিখেছেন, 'এক মাটির মাফিয়া বালি মাফিয়া গাঁজার পাচারকারীদের সহায়ক জুয়ার বোর্ড চালানো উপনেতা- আমাকে চোর বলেছে, খুনি বলেছে, ধর্ষণ বলছে। আমি নাকি- মহাশ্বেতা দেবীর লেখা নিজের নামে ছাপিয়ে কয়েক লক্ষ না কোটি কামিয়েছি , সেই আমাকে দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলাগড়ের বিধায়ক বানিয়েছেন। আমি যদি এই তাহলে দিদি বা কেমন মানুষ ? তিনি আমার বিষয়ে কোন খোঁজ খবর নিলেন না ? আর এই দলটি বা কেমন ? যারা এমন একটা চোর ছ্যাচোরকে দলের সঙ্গে যুক্ত করলেন? তাহলে যে বিরোধীরা বলে 'চোর চোর চোর চোর- তৃণমূলের সবাই চোর' ! সেটা কি সত্যি? চোর ছাড়া দলে আর কোনও লোক নেই?'
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় দলেরই একাংশের হাতে খুন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাপ্রকাশও করেন তিনি। মনোরঞ্জন বলেন, 'আমি এখন একা হয়ে গিয়েছি। ভয় পাচ্ছি, হুমকি পাচ্ছি। তৃণমূলের হাতেই তৃণমূল খুন হচ্ছে। গুলি চালিয়ে দিলে কী করব? নিরাপত্তা না পেলে আর এলাকায় যাব না।' বলাগড়ের বিধায়ক আরও বলেছিলেন, 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছি। দলকে বলেও লাভ হচ্ছে না।'