কালকের পর আজও অগ্নিগর্ভ সন্দেশখালির একাংশ। আজ বেড়মজুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। শেখ শাহজাহানের ভাই সিরাজউদ্দিনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আজ সিরাজউদ্দিনের ভেড়ির আলাঘরে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন গ্রামবাসীরা। সিরাজের বিরুদ্ধে জুলুম, মারধর, আবাস ও ১০০ দিনের কাজের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ তাঁদের।
এদিকে, শুক্রবারও সন্দেশখালি গিয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। এর মধ্যেই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে রাজ্যপাল বলেন, 'সন্দেখালি নিয়ে খুব তাড়াতাড়ি ভাল খবর শুনতে পাবেন। সুরঙ্গের শেষে আলো দেখতে পাওয়া যাবে।'
গতকালই ইন্ডিয়া টুডে-তে রাজদীপ সরদেশাইকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে সিভি আনন্দ বোস বলেন,"রাজ্যপাল হিসেবে আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে সম্পূর্ণ ও ফেয়ার সুযোগ দিতে চাই। সরকারের একটাই কাজ হওয়া উচিত, মুখ্য অভিযুক্ত শাহজাহান শেখকে গ্রেফতার করা।" তিনি কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের বিষয় উল্লেখ করেও জানান, "মাননীয় হাইকোর্টও বলেছে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে। আমিও তাই বলছি। সরকার কী করছে, আমি নজর রাখছি। মুখ্য অভিযুক্তকে গ্রেফতার না করা হলে কোনওভাবেই মানুষের বিশ্বাস ফিরবে না। এরপরই তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, মুখ্য অভিযুক্ত শাহজাহান শেখকে কি তৃণমূল পরিচালিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আড়াল করছে? এ প্রশ্নের জবাবে রাজ্যপাল বলেন, আমি ঘটনাটিকে অপরাধ ও অপরাধীর শাস্তি হিসেবে দেখছি। এর মধ্যে রাজনীতি আনতে চাই না। সেটা আমার এক্তিয়ারও নয়। পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে। আমি এমন অভিযোগ করতে চাইছি না, যে কেউ তাকে আড়াল করছে। তবে ঘটনা এটাই সে এখনও পলাতক।"
তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূলের অভিযোগ তিনি দ্রুত সন্দেশখালিতে পৌঁছলেও চোপড়ায় শিশুমৃত্যুর ঘটনায় অনেক দেরি করে পৌঁছেছিলেন। এর উত্তরে রাজ্যপাল বলেন, "চোপড়ায় যাওয়ার জন্য চপার চেয়েছিলাম রাজ্যের কাছে। রাজ্য দেয়নি। এরপর ট্রেনে সেখানে যেতে হয়। তাতে সময় লাগে। বাংলায় ট্রেন খুব দ্রুত চলে না। আমি দুজায়গা নিয়েই চিন্তিত এবং সেখানে পৌঁছেছি।" তিনি বলেন, "রাজ্যের অনেক জায়গায় আইন ঠিকমতো প্রয়োগ হয় না। কিছু পকেট এরিয়া আছে, যেখানে দুষ্কৃতী বা গ্যাংস্টাররা রাজত্ব করছে। এটা কোনও সভ্য সমাজের পক্ষে ঠিক নয়।" স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে বাংলা সংক্রান্ত রিপোর্ট দিয়েছেন সিভি আনন্দ বোস। এই যে বিকল্পের কথা বলছেন তার মধ্যে কি রাষ্ট্রপতি শাসন আছে? বোসের কথায়,'স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে পাঠানো রিপোর্ট গোপন রাখতে চাই। সংবিধান ও গণতন্ত্র মেনে কিছু প্রস্তাব দিয়েছি। আমি কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছি মুখ্যমন্ত্রীকেও। কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে, সেটা দেখতে চাই। অফিসারদের মোতায়েন করা হয়েছে ওই এলাকায়।'