Sandeshkhali: সন্দেশখালি নিয়ে তোলপাড় চলছে বাংলার রাজনীতিতে। সন্দেশখালির বেশ কয়েকজন মহিলার অভিযোগ রীতিমতো হাড়-হিম করে দেওয়ার মতো। পৃথক তদন্ত চলছে, তবে অভিযুক্তদের সম্পর্কে এখনও কোনও ক্লু পাওয়া যায়নি। মোদ্দা বিষয় হল, সন্দেশখালি রাজনৈতিক রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে এবং তিন দিন ধরে বিজেপি ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে।
সন্দেশখালিতে উত্তেজনার কারণে পরিস্থিতি গুরুতর। নির্যাতিতা মহিলারা বিচার দাবি করছেন। পুলিশ পাহারা দিচ্ছে। গোটা এলাকা থমথমে। মাত্র দুদিন আগে বঙ্গ বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সন্দেশখালি যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। পুলিশ তাদের যেতে বাধা দেয়। লাঠিচার্জ করা হয়, সুকান্ত আহত হয়ে হাসপাতালে। তার একদিন আগে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীও সন্দেশখালি যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পুলিশ দেওয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। শুভেন্দু অধিকারী ও তার সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতি হয়।
বাংলার ঠিক কোথায় সন্দেশখালি?
কলকাতা থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সন্দেশখালি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমার মধ্যে পড়ে। এটি বাংলাদেশের সীমান্ত সংলগ্ন একটি এলাকা। সংখ্যালঘু ও উপজাতি সম্প্রদায়ের বেশিরভাগ মানুষই এখানে বাস করেন। গত মাসে যখন ইডি তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে অভিযান চালায়, সেই সময় থেকেই খবরের শিরোনামে সন্দেশখালি। ইডি-র উপর সেদিন হামলা চালায় শেখ শাহাজাহানের অনুগামীরা। ইডি অফিসার জখম হন।
সন্দেশখালির মহিলাদের অভিযোগ ভয়ঙ্কর
সন্দেশখালির মহিলারা গত কয়েকদিন ধরে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শাহজাহান শেখ এবং তার সহযোগীদের নৃশংসতার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। শাহজাহান শেখ ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা, যৌন অত্যাচার, ধর্ষণ, জমি দখলের মতো গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন বহু মহিলা।
অভিযোগকারী এক মহিলা বলেন, তৃণমূলের লোকেরা গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরীক্ষা করে এবং ওই সময়ে বাড়িতে যদি কোনও সুন্দরী মহিলা বা মেয়ে দেখা যায় তবে তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের লোকেরা তাঁকে অপহরণ করে। এবং তারপর তাঁকে সারা রাত পার্টি অফিসে তাদের সাথে অন্য কোন জায়গায় রাখা হত এবং পরের দিন তাদের সঙ্গে যৌন অত্যাচার ও ধর্ষণ করে করার পর ভোরবেলা মহিলাদের বাড়ির সামনে ফেলে দিত।
মমতা সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে বিজেপি
এরপরই বিষয়টি নিয়েবিক্ষোভ শুরু করে বিজেপি। ১৩ ফেব্রুয়ারি এই নিয়ে বসিরহাটের এসপি অফিসের সামনে তীব্র প্রতিবাদ জানায় বিজেপি। এ সময় পুলিশ ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, পরে পুলিশও লাঠিচার্জ করে এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে।
পরে ১৩ ফেব্রুয়ারি কলকাতা হাইকোর্ট সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারার অধীনে ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা বাতিল করে। ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দল সন্দেশখালি পরিদর্শন করে ওই মহিলাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেয়। জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যরাও এলাকা পরিদর্শন করেন এবং ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। এই বিষয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বিজেপিকে "পরিবেশ নষ্ট করার" চেষ্টা করার অভিযোগ করেছেন। কুণাল বলেন, 'অভিযোগ ভিত্তিহীন। বিজেপি এলাকার পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছে। তারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্ট করতে চায়।'