রাজ্য রাজনীতিতে আজ হাইভোল্টেজ সোমবার (Monday)। সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনেই দুই তদন্তকারী সংস্থার মুখোমুখি হওয়ার কথা রাজ্যের শাসক ও বিরোধী দলের অন্যতম দুই প্রধান নেতার। এদিন কয়লাপাচারকাণ্ডে দিল্লিতে ইডির মুখোমুখি হওয়ার কথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee)। অন্যদিকে প্রাক্তন দেহরক্ষীর মৃত্যু তদন্তে এদিনই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে তলব করেছে সিআইডি। এই দুই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই চাপা উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করেছে বঙ্গ রাজনীতির অন্দরে।
দিল্লি যাওয়ার আগে যা বললেন অভিষেক...
ইডির (ED) সামনে হাজিরা দিতে অবশ্য ইতিমধ্যেই দিল্লি উড়ে গিয়েছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লি যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে অভিষেক জানান, 'এতবড় দুর্নীতির কথা বলছে, ১০ পয়সার যদি কোনও লেনদেন প্রমাণ করতে পারে বা জনসমক্ষে আনতে পারে, তাহলে ইডি, সিবিআই লাগাতে হবে না। আমাকে ফাঁসির মঞ্চ করে বলুন, আমি মৃত্যুবরণ করতে রাজি আছি।' প্রসঙ্গত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একইসঙ্গে তলব করে ইডি। যদিও করোনা পরিস্থিতিতে কলকাতায় হাজিরা দেওয়ার কথা জানিয়ে আগেই ইডিকে চিঠি দেন রুজিরা।
শুভেন্দুর চ্যালেঞ্জ
এদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের যেদিন ইডির সামনে হাজিরা দেওয়ার কথা সেদিনই সিআইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হওয়ার কথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari)। প্রাক্তন দেহরক্ষী শুভব্রত চক্রবর্তীর মৃত্যুর ঘটনায় শুভেন্দুকে সোমবার হাজিরা দেওয়ার জন্য তলব করেছে সিআইডি। এর প্রেক্ষিতে অভিষেকের মতো কার্যত একইভাবে পিছু না হঠার বার্তা শুভেন্দুর গলাতেও। শুভেন্দু বলেন, 'আমাকে প্রতিদিন ভয় দেখায়, আমার কোনও ভয় নেই। আমার কিছুই করতে পারবে না। আমার কোনও পিছু টান নেই। আমি অকৃতদার।' যদিও শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্যকে ট্যুইটে তীব্র কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ।
অন্যদিকে একই দিনে রাজ্যের দুই হেভিওয়েট নেতাকে পৃথক দুই তদন্তকারী সংস্থার তলবের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য বঙ্গ রাজনীতিতে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের কারও কারও মনে প্রশ্ন, তবে কি উপনির্বাচনের আগে এবার সরাসরি তৃণমূল-বিজেপি (TMC-BJP) 'এজেন্সি যুদ্ধ' দেখা যাবে? এখানে একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, বিজেপি তথা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বারেবারেই তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করে ভয় দেখানোর অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। অন্যদিকে আবার রাজ্যের শাসকদল পুলিশ প্রশাসনকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে বলে লাগাতার অভিযোগ করে এসেছে বিজেপি। তার মাঝেই রাজ্যে চলে এসেছে উপনির্বাচন। ইতিমধ্যেই ভবানীপুর কেন্দ্রের উপনির্বাচন (By Election In West Bengal) এবং সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুরের ভোট ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ভবানীপুর তৃণমূলের হয়ে লড়ছেন সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই (Mamata Banerjee)। সেক্ষেত্রে উপনির্বাচনকে ঘিরে সমানে-সমানে টক্কর দিতে এবার কেউই প্রতিপক্ষকে একইঞ্চিও জমি ছাড়বে না বলেই মনে করছে রাজনৈতিকমহলের একটা বড় অংশ।