ভুটান পাহাড়ে হড়পা বানের জেরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ভারতের লুপ্তপ্রায় আদিম জনজাতির বাসস্থান টোটোপাড়ার। ভুটান পাহাড় থেকে নেমে আসা সাতটি পাহাড়ি নদীর হড়পা বানে বহির্বিশ্ব থেকে টোটোপাড়া কার্যত বিচ্ছিন্ন দ্বীপে পরিণত হয়েছে। একইসঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হান্টাপাড়া ও বল্লালগুড়ি গ্রামপঞ্চায়েতেরও। মাদারিহাট ব্লকের জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান থেকে মাত্র ২৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত টোটোপাড়া, হান্টাপাড়া, বল্লালগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতগুলোকে আলাদা করে দিয়েছে ভুটানের সাতটি নদীর হরপা বান। এই সাত নদীর মধ্যে রয়েছে তিতি, রেতি, সুকৃতি, হাইড়ি, বাংরি, ধুমচি ও পানা।
সবগুলি নদীতেই মঙ্গলবার বিকেল থেকে প্রবল জলস্ফীতি শুরু হয়। বাংরি নদীর জল মাদারিহাট, টোটোপাড়া প্রধান সড়কের উপর দিয়ে বইছে। এদিন বিকেল থেকেই টোটোপাড়ার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে মাদারিহাটের। কবে অবস্থা স্বাভাবিক হবে তা নিয়ে গভীর চিন্তায় টোটোপাড়ার মানুষ। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ভুটান পাহাড়ে আরও ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ভুটান পাহাড়ের পাদদেশে গড়ে ওঠা টোটোদের এই ছোট্ট জনপদটি প্রতি বর্ষাতেই ধসের কবলে পড়ে। বর্ষায় ভুটান পাহাড়ের ধসের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয় টোটোপাড়ার চাষের জমি। গত বর্ষাতেও ধসের কারণে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলেন টোটো জনজাতির মানুষ। সেই ধাক্কা এখনও সামলে উঠতে পারেননি তাঁরা।
এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে এই এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার কারণে বেশ কিছু টোটো জনজাতির মানুষ আটকে পড়েছেন মাদারিহাটে। খবর পেয়ে বাংরি নদীর কাছে যান মাদারিহাটের বিডিও। তিনি সেচদফতরের কর্তাদের চটজলদি পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার নির্দেশ দেন। বিডিও বলেন, দ্রুত পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে আটকে থাকা টোটো জনজাতির মানুষজনকে তাঁদের এলাকায় পৌঁছে দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। অন্যদিকে টোটো কল্যাণ সমিতির সভাপতি অশোক টোটো বলেন, সাতটি নদীর কারণে তাঁদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। দ্রুত সমস্যা সমাধান আবেদন জানিয়েছেন তিনি।