বঙ্গ রাজনীতির লাইমলাইট এখন পূর্ব মেদিনীপুর জেলাকে ঘিরে। কলকাতা থেকে ১২৮ কিলোমিটার দূরে নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী আগামী দিনে কী করতে চলেছেন তা এখন লাখ টাকার প্রশ্ন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ থেকে আম জনতা সকলের কাছেই। দেশ ও বাংলার উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাবেন বললেও নিজের রাজনৈতিক অবস্থান এখনও স্পষ্ট করেননি নন্দীগ্রামের বেতাজ বাদশা। এই অবস্থায় রবিবার সাংবাদিক সম্মেলনে শুভেন্দু কী বলেন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। এর মধ্যেই ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছে বিজেপি শিবির। রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহন মন্ত্রীক পাশে দাঁড়িয়ে গত কয়েকদিন ধরেই মন্তব্য করতে দেখা গেছে গেরুয়া দলের নেতৃত্বকে। এর মধ্যেই দিলীপ ঘোষ শুভেন্দুকে শিবির বদল করতে এবার প্রকাশ্যে নেতা করার 'টোপ' দিলেন।
পূর্ব মেদিনীপুরের ভূমিপুত্রকে নিয়ে এর আগেও একাধিকবার মুখ খুলেছেন দিলীপ ঘোষ। মন্ত্রিত্ব থেকে শুভেন্দুর পদত্যাগের পর তাঁর বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা উসকে মন্তব্য করতেও দেখা গিয়েছে বিজেপি রাজ্য সভাপতিকে। বিজেপির সঙ্গে যে নন্দীগ্রামের বিধায়কের যোগাযোগ রয়েছে এমন দাবি করতেও দেখা গিয়েছে খড়গপুরের সাংসদকে। যদিও তাঁর সঙ্গে শুভেন্দুর সরাসরি যোগাযোগ নেই বলেই এতদিন বলে এসেছেন দিলীপ ঘোষ। এবার শুভেন্দুর সাংবাদিক বৈঠকের ২৪ ঘণ্টা আগে তাঁর গড় পূর্ব মেদিনীপুরে দাঁড়িয়ে দিলীপ বললেন, ‘শুভেন্দু যাই করুন না কেন, তৃণমূল কোনওদিন ওকে নেতা হতে দেবে না। কারণ যাঁরা কালীঘাটের একটি নির্দিষ্ট বাড়িতেই থাকেন, তাঁরাই তৃণমূলে নেতা হতে পারেন। বাকি যাঁরা নিজেদের ঘাম ঝরান, তাঁরা সর্বদা কর্মী হিসেবে থেকে যান।’ দিলীপের দাবি, বিজেপি নেতা বানায়।
রবিবার নন্দীগ্রামের বিধায়কের সাংবাদিক বৈঠকের আগে শুভেন্দুর ‘রাগ’-কে খুঁচিয়ে তুলতে দিলীপের এই মন্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। বিজেপির রাজ্যসভাপতি দিলীপ ঘোষের আরও দাবি, 'আগামী দিনে মেদিনীপুর থেকেই রাজ্যে প্রতিনিধিত্ব করবেন শুভেন্দু।' পূর্ব মেদিনীপুর থেকেই বাংলার পরিবর্তনের সূত্রপাত হবে।
এদিকে মন্ত্রীত্ব ছাড়ার পর রবিবারই প্রথমবার সাংবাদিক বৈঠক করতে চলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার তৃণমূল শীর্ষনেত্রীত্বের সঙ্গে বৈঠকের পর বুধবার সৌগত রায়কে তাঁর পাঠানো হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেজে পুরনো দলের সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ প্রায় পাকাপাকি করে দিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে শুভেন্দু যে এখন‘ক্লোজড চ্যাপ্টার’ তা ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছেন স্বয়ং দলনেত্রীও। তারইমধ্যে বিজেপির একাধিক নেতার সঙ্গে শুভেন্দুর কথা হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর মিলছে। এই আবহে রবিবার শুভেন্দু কী ঘোষণা করেন সেদিকেই এখন নজর বাংলার রাজনৈতিক মহলের।