মুকুল রায়ের দলত্যাগ নিয়ে এই মুহূর্তে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। বিজেপি (BJP) থেকে ফের সপুত্র ফিরেছেন তৃণমূলে। আর তারপর থেকেই শুরু হয়েছে বিজেপিতে ভাঙনের আশঙ্কা। উঁচু থেকে নিচু তলা, সবক্ষেত্রেই দলভাঙার আশঙ্কা চিন্তায় রেখেছে বিজেপি নেতৃত্বকে। এবার এই পরিস্থিতির মাঝেই ভাঙন ধরল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর (Malda Harishchandrapur) বিজেপিতে। হরিশ্চন্দ্রপুর ভিঙ্গল গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য যোগদান করলেন তৃণমূলে। এরপরেই কংগ্রেস পরিচালিত ভিঙ্গল গ্রাম পঞ্চায়েত দখলের দাবি তৃণমূলের। এদিকে তৃণমূলের সেই দাবিকে কটাক্ষ করেছেন ভিঙ্গল গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের প্রধান বিমানবিহারী বসাক। অন্যদিকে, এই যোগদানকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি। ভিঙ্গল গ্রাম-পঞ্চায়েতে মোট সদস্য সংখ্যা ১৩। তারমধ্যে ৯ জন সদস্য কংগ্রেসের, ৩ জন সদস্য তৃণমূলের, আর একজন বিজেপির। বিজেপির একজন তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় তাদের সদস্য সংখ্যা বেড়ে হল ৪।
বিজেপি ছেড়ে হরিশ্চন্দ্রপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) দলীয় কার্যালয়ে শাসকদলে যোগদান করেন ভিঙ্গল গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য অমলচন্দ্র সাহা। এই যোগদান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান, হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি জিয়াউর রহমান, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য আদিত্য মিশ্র সহ দলীয় নেতৃত্বরা। বর্তমানে ভিঙ্গল গ্রাম পঞ্চায়েত কংগ্রেস পরিচালিত। কিন্তু তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করছেন এই যোগদানের পর ভিঙ্গল গ্রাম পঞ্চায়েত তারা দখল করবেন। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
এদিকে সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য অমলচন্দ্র সাহা বলেন," তৃণমূলে যোগদান করতে পেরে খুব ভাল লাগছে। এই দল মা মাটি মানুষের দল। মানুষের জন্য কাজ করে। বিজেপি শুধু ভেদাভেদের রাজনীতি করে। ওখানে থাকতে পারছিলাম না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে তৃণমূলে একনিষ্ঠ কর্মী হয়ে কাজ করব। নিজের দায়িত্ব পালন করব।"
এই প্রসঙ্গে তৃণমূল জেলা সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান বলেন, " ভিঙ্গল গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য অমলচন্দ্র সাহা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলেন। অতি শীঘ্রই কংগ্রেস পরিচালিত এই পঞ্চায়েত আমরা দখল করব। কারণ কিছুদিন আগে এই পঞ্চায়েতের প্রধান ত্রাণ বন্টন নিয়ে দলবাজি করেছিলেন। যা নিয়ে ওই পঞ্চায়েতের অনেক সদস্য ক্ষুব্ধ। তাঁরা প্রধান বদল করতে চাইছেন। আমরা সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া মেনেই এই পঞ্চায়েত দখল করব।"
যদিও তৃণমূল নেতার এই প্রতিক্রিয়াকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন ভিঙ্গল গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রধান বিমান বিহারী বসাক। তিনি পাল্টা বলেছেন,"আমরা যখন সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে পঞ্চায়েত দখল করেছিলাম তখনও বলেছিল পঞ্চায়েত ওদের। এখন বিধানসভা ভোট শেষ হতেই আবার বলছে। আর বিজেপির সদস্য কোথায় গেল তা নিয়ে আমাদের মাথাব্যাথা নেই। তবে বিজেপির সদস্যকে নিয়ে যদি তৃণমূলকে পঞ্চায়েত দখল করতে হয় তাহলে তা তৃণমূলের জন্যই দুর্ভাগ্য। আমাদের সদস্যদের বহুবার ভয় দেখিয়েছে, টাকার প্রলোভন দেখিয়েছে। পঞ্চায়েত তো জনগণের, ওরা নিজের মনে করলে করুক। আমার আর বিশেষ কিছু বলার নেই।"
এদিকে এই যোগদানকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি। এলাকার বিজেপি নেতা রূপেশ আগরওয়ালা বলেন,"বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি মুকুল রায় যদি ফের তৃণমূলে ফিরে যেতে পারেন। ইনি তো সামান্য একজন পঞ্চায়েত সদস্য। যাঁরা এ দল ও দল করেন।মূলত তাঁরা কোনও দলেরই নয়। তাঁরা স্বার্থান্বেষী। যারা বিজেপির প্রকৃত সৈনিক তাঁরা ছিলেন আছেন এবং থাকবেন।"