স্বামী ও সন্তানকে ছেড়ে গাড়িরচালক তথা দলেরই এক কর্মীকে বিয়ে করার অভিযোগ উঠল শালতোড়ার বিধায়ক চন্দনা বাউরি (BJP MLA Chandana Bauri)-র বিরুদ্ধে। তবে তিনি এই ঘটনা অস্বীকার করেছেন। নাম না করে তৃণমূলকে বিঁধেছেন। এই ঘটনা নিয়ে তুমুল আলোড়ন শুরু হয়েছে।
থানায় চন্দনা
অভিযোগ, বুধবার রাতে বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি থানা এলাকার দেউলি মন্দিরে বিয়ে করে নিরাপত্তা চেয়ে বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি থানায় হাজির হন চন্দনা বাউরি (BJP MLA Chandana Bauri)। সঙ্গে ছিলেন তাঁর গাড়ির চালক তথা বিজেপি কর্মী কৃষ্ণ কুন্ডু। রাতভর থানায় থাকার পর বৃহস্পতিবার সকালে নিজের শ্বশুরবাড়িতে ফিরে গিয়ে ফেসবুক লাইভ করে গোটা ঘটনাটিকে কুৎসা বলে দাবি করেন বিধায়ক চন্দনা বাউরি।
গৃহবধূ থেকে বিধায়ক
বিধানসভা নির্বাচনে বাঁকুড়ার শালতোড়া বিধানসভায় বিজেপির প্রার্থী হন গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের কিলাই গ্রামের গৃহবধূ চন্দনা বাউরি (BJP MLA Chandana Bauri)। পেশায় রাজমিস্ত্রী শ্রাবণ বাউরির স্ত্রী চন্দনা বাউরি। তিনি প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই খবরে ছিলেন।
বিজেপির প্রচার
বিজেপি সে সময় প্রচার করেছিল, তাদের দল সমাজের সব স্তরের মানুষের কথা ভাবে। তারা প্রান্তিক মানুষের উন্নয়নে জোর দেয়। আর তাই নিম্নবিত্ত সমাজে থেকেও দলের প্রার্থী হওয়া যায়। চন্দনা বাউরি তার উদাহরণ।
বিধায়ক হওয়ার পর আলোচনায়
বিধায়ক হওয়ার পরেও বারবার শিরোনামে উঠে এসেছেন তিনি। এবার সেই বিধায়ক চন্দনা বাউরি (BJP MLA Chandana Bauri) জড়িয়ে পড়লেন নতুন বিতর্কে। অভিযোগ, বুধবার রাতে বিধায়ক চন্দনা বাউরি তাঁর স্বামী শ্রাবণ বাউরি ও তিন সন্তানকে ছেড়ে নিজের গাড়ির চালক তথা বিজেপি কর্মী কৃষ্ণ কুন্ডুকে বিয়ে করেন।
এরপরই নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে কৃষ্ণ কুন্ডুকে নিয়ে বিধায়ক সটান হাজির হন গঙ্গাজলঘাটি থানায়। রাতভর সেখানেই ছিলেন তিনি (BJP MLA Chandana Bauri)।
ফেসবুক লাইভে
এদিন সকালে থানায় তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীরা পৌঁছলে গাড়িতে চড়ে নিজের শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যান বিধায়ক। পরে সেখান থেকে ফেসবুক লাইভ করে বিধায়ক চন্দনা বাউরি বলেন সব অভিযোগ মিথ্যা। তাঁর বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোর উদ্যেশ্যেই এই অপপ্রচার করা হয়েছে।
বিধায়কের দাবি, পারিবারিক সমস্যা মেটাতেই তিনি থানায় হাজির হয়েছিলেন। শালতোড়ার মানুষের পাশে আছি। আগামী দিনেও থাকব। এর আগেও পোস্টার টাঙানো হয়েছে। চন্দনা বাউরি নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন। কুৎসায় কান দেবেন না।
কৃষ্ণ কুন্ডুর স্ত্রীর দাবি
এদিকে ঘটনা জানার পর আজ সকালে গঙ্গাজলঘাটি থানায় হাজির হন কৃষ্ণ কুন্ডুর স্ত্রী রূম্পা কুন্ডু। চন্দনার ভাই তাঁকে হুমকি দিয়েছন বলে অভিযোগ। তিনি দাবি করেন, কলকাতা যাব বলে বেরিয়েছিল স্বামী। চন্দনাদের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। একে অপরের বাড়ি যাওয়া-আসা করতেন।
তাঁর আরও দাবি, চন্দনার ভাই তাঁকে বলেছেন, কাল তোমায় থানায় ঢোকাব। খালি সকাল হতে দাও। বাপের বাড়িও যাই না। স্বামী যেখানে, সেখানেই থাকব বলে। কলকাতায় বৈঠক আছে বলে বেরিয়েছিল। আরও বলেছিল, তোমাকে বাপের বাড়ি ছেড়ে দেব। ওর ভাই বলার পর জানতে পারলাম বিয়ে করেছে।
প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনায় শোরগোল শুরু হয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। বিজেপির কর্মীদের একাংশ এ ব্যাপারে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তৃণমূলের পক্ষ থেকেও ঘটনার কড়া প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়েছে।