টোল ট্যাক্স আদায়কে কেন্দ্র করে দু'পক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা থানার কেদুয়া এলাকা। ঘটনায় তিন চারজন জখম হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। তাঁদের তারাপুর হাসপাতালে পাঠান হয়েছে। ফরাক্কার তৃণমূল বিধায়ক মণিরুল ইসলাম যাহোক করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে পাশের একটি বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন। পরে ফরাক্কা থানার আইসি দেবব্রত বিশ্বাসের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিধায়ককে উদ্ধার করে। বিধায়কের অভিযোগ, ফরাক্কার প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক ও তাঁর দলবল পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালিয়েছে। যদিও প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক মইনুল হক সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ফরাক্কার কেদুয়া এলাকা মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ পরিচালিত একটি টোল প্লাজা রয়েছে। বিধায়ক হওয়ার পরে থেকেই ওই টোল প্লাজার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মণিরুল ইসলাম। তাঁর অভিযোগ, টেন্ডারের সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও টোল প্লাজা কতৃপক্ষ অবৈধভাবে এবং নির্ধারিত ট্যাক্সের কয়েকগুণ বেশি টাকা আদায় করছে। এর প্রেক্ষিতে দিনকয়েক আগে বিধায়ক স্পষ্ট নির্দেশ দেন, কোনও গাড়ি থেকে টোল ট্যাক্স আদায় করা যাবে না। কিন্তু তারপরেও টোল ট্যাক্স কতৃপক্ষ বিধায়কের কথায় কর্ণপাত না করেই টাকা আদায় করছিল বলে অভিযোগ।
রবিবার দুপুরে মণিরুল ইসলাম তাঁর অনুগামীদের নিয়ে টোল প্লাজায় গেলে দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। চলে ইট-পাথর বৃষ্টি। বেশ কিছুক্ষণ ধরে খন্ডযুদ্ধ চলে দু'পক্ষের মধ্যে। ইট-পাথরের আঘাতে আহত হন ৩-৪ জন। তৃণমূল বিধায়ক মণিরুল ইসলামের অভিযোগ, "টেন্ডারের সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও টোল ট্যাক্স আদায় করছে। আমি মালিককে চুক্তির কাগজ দেখাতে বলেছিলাম। কিন্তু কাগজ দেখায়নি। তাছাড়া ইচ্ছেমতো চারগুণ বা পাঁচগুণ টোল ট্যাক্স আদায় করছে। গাড়ির মালিক ও চালকরা বেশ কিছুদিন ধরে আমাকে অভিযোগ জানাচ্ছিল। আমি সেই বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে গিয়েছিলাম। আমি যেতেই আমার এবং আমার লোকজনের উপর হামলা চালান হয়। আমাকে খুন করার পরিকল্পনা ছিল। ওখান থেকে কোনপ্রকারে পালিয়ে প্রাণে বেঁচেছি। কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক ও তাঁর দলবল এই হামলা চালিয়েছে।" যদিও প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক মইনুল হক বলেন, "তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে ঘটনাটি ঘটেছে। ওই ঘটনার সঙ্গে কংগ্রেসের কেউ জড়িত নন। নিজেদের দলের গোষ্ঠী কোন্দল চাপা দিতেই কংগ্রেসের উপর দায় চাপাচ্ছে।"
ঘটনার কিছুক্ষণ পরে তৃণমূল বিধায়ক ফরাক্কা থানায় বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত নেমেছে পুলিশ। এই প্রসঙ্গে ফরাক্কা এসডিপিও অসীম খান বলেন, "টোল প্লাজাটিকে আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।"