ঘূর্ণিঝড় ইয়াস (Cyclone Yaas)-এর জেরে প্রাণ হারালেন এক ব্যক্তি। বুধবার পূর্ব মেদিনীপুরের মন্দারমনি এলাকার ঘটনা। নিহত ওই ব্যক্তির নাম কানাই গিরি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, জলের তোড়ে আহত হয়েছিলেন তিনি। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। তবে তাঁকে বাঁচানো যায়নি। তিনি মারা যান।
এদিন সকাল থেকে প্রবল জলোচ্ছ্বাস দেখা দেয় মন্দারমণিতে। তখন আহত হয় তিনি। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে।
একই সময়ে তাঁর সঙ্গে আহত হয়েছিলেন আরও এক ব্যক্তি। এই নিয়ে এ রাজ্যে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস-এর জেরে মৃত্যু হল তিন ব্যক্তির। এর আগে মঙ্গলবার দু'জন মারা গিয়েছিলেন।
এদিন ঘূর্ণিঝড় ইয়াস (Cyclone Yaas)-এর জেরে তীব্র জলোচ্ছ্বাস দেখা দেয় রাজ্যের সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায়। দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর ভেসে গিয়েছে সমুদ্রের জলে।
অনেক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দোকানে জল ঢুকে গিয়েছে। বহু মানুষ ঘরছাড়া। তাঁদের জন্য রাজ্য সরকার ত্রাণের ব্যবস্থা করেছে। অনেক মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে।
দিঘা, তাজপুর, মন্দারমণিতে সমুদ্রের কাছে অনেক হোটেল রয়েছে। সেখানে জল ঢুকতে শুরু করেছে। তবে প্রশাসন আগে থেকে সতর্ক ছিল। তাই বলা যেতে পারে, সেখানকার মানুষদের নিরাপদ দূরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
গত কয়েকদিনে দিঘা, তাজপুর, মন্দারমণিতে পর্যটক ছিল না বললেই চলে। দুর্যোগের আশঙ্কায় সে দিকে আর কেউ পা বাড়াননি। যাঁরা সেখানে গিয়েছিলেন, তাঁরা যে যাঁর বাড়ি ফিরে এসেছেন।
সকাল থেকে যেন ফুঁসছে দিঘা। সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠেছে। আর এর ফলে জল ঢুকতে শুরু করে দিয়েছে নগরে। দিঘার অনেক জায়গায় বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে। সমস্যায় পড়েছেন মানুষ। ইতিমধ্যে অনেককেই নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে প্রশাসন।
এদিকে, এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে জানান, ১৫ লক্ষ মানুষকে এখনও পর্যন্ত নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিতে পেরেছি। ২০ হাজার বাড়ি ক্ষতি হয়েছে। তিনি আরও জানান, বিভিন্ন জেলায় জল জমছে। জল সরবরাহ ঠিক রয়েছে কলকাতায়। সারাক্ষণ মনিটরিং চলছে।
এদিন তিনি আরও বলেন, এই তাণ্ডব চলবে। পূর্ব মেদিনীপুরে ৩.৮ লক্ষ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে। ভরা কোটালের জন্য জলে ডুবে যাচ্ছে। প্রতি বছর একই অবস্থা দেখছি। দরকার হলে আরও স্কুলে রাখা হবে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না আকাশ, সরকার ক্লিয়ারেন্স না দিচ্ছে। আজ রাতে ভরা কোটাল হবে। সবাইকে আবেদন করব একটু কষ্ট করুন জীবন বাঁচাতে।