ক্রমেই সমস্যা বাড়ছে বঙ্গ বিজেপির (BJP) অন্দরে। মুকুল রায় ইতিমধ্যেই বিজেপি ছেড়ে পুরনো দল তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরেছেন। পাশাপাশি 'বেসুরো' রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সুনীল সিং-এর মতো বিজেপি নেতারা। তবে 'বেসুরো' নেতার তালিকা সেখানেই শেষ নয়। তা ক্রমে বেড়েই চলেছে। ইতিমধ্যেই সেই তালিকায় ঢুকে পড়েছেন বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রে সাংসদ সুনীল মণ্ডলও।
ইতিমধ্যেই সুনীল মণ্ডলকে (Sunil Kumar Mandal) বলতে শোনা গিয়েছে, "তৃণমূল (TMC) থেকে যাঁরা এসেছেন তাঁদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছে না বিজেপি। সহ্য করতে পারছে না। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত অনেকেরই ভুল হতে পারে। কিন্তু সবাইকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করা উচিত। বিজেপি হয়ত মনে করছে এঁদের বিশ্বাস করা ঠিক হবে না।" একইসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) বিরুদ্ধেও মুখ খুলেছেন সুনীল। তিনি বলেন, "শুভেন্দু তৃণমূল ছাড়ার পর প্রথম আমার বাড়িতে আসে। বলেছিল দাদা-ভাই একসঙ্গে কাজ করব। আর এখন সে ফোনও তোলে না।"
সুনীল মণ্ডলের এহেন মন্তব্যে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তবে কি তিনিও পা বাড়াচ্ছে পুরনো দলের দিকে? একইসঙ্গে এই প্রশ্নও উঠে আসছে, বাস্তবেই সুনীল তৃণমূলে ফিরলে পূর্ব ও পশ্চিম, দুই বর্ধমানে কী অবস্থায় দাঁড়াবে বিজেপি? কারণ বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের সম্পূর্ণ এলাকা ও বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে কিছুটা অংশ পড়ছে পূর্ব বর্ধমান জেলার মধ্যে। বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বাকি অংশটা পশ্চিম বর্ধমান জেলার অন্তর্গত। বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গিয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলায় একটিও আসন পায়নি বিজেপি। আর পশ্চিম বর্ধমান জেলায় বিজেপির ঝুলিতে এসেছে মাত্র ৩টি আসন। সেদিক থেকে দেখতে গেলে বিধানসভা নির্বাচনে দুই বর্ধমান থেকে সেভাবে কিছুই ঘরে তুলতে পারেনি বিজেপি। তবে দুই জেলার মোট ৩টি লোকসভা আসন অবশ্য বিজেপির দখলে রয়েছে। কিন্তু সুনীল মণ্ডলের সাম্প্রতিক বক্তব্যের পর বর্ধমান পূর্ব আসনটি পুনরায় তৃণমূলের হাতে চলে যায় কি না তা নিয়ে বিজেপির অন্দরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বলেই সূত্রের খবর।
যদিও তৃণমূল অবশ্য সুনীল মণ্ডলের এই ধরনের মন্তব্য নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাচ্ছে না। উলটে তাঁর সাংসদ পদ খারিজের আবেদন জানিয়েছে ঘাসফুল শিবির। তবে রাজনৈতিকমহলের একাংশ মনে করছে বাস্তবেই যদি পুরনো দলে ফেরেন সুনীল মণ্ডল, তাহলে দুই বর্ধমানে তা বিজেপির পক্ষে কোনওভাবেই সুখকর হবে না।