Best Tourism Village of India: ভারতের সেরা পর্যটন গ্রাম হিসেবে নির্বাচিত হল মুর্শিদাবাদের কিরীটেশ্বরী। বাংলার এই গর্বের বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, 'আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি এবং ঘোষণা করছি যে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার কিরীটেশ্বরীকে ভারত সরকারের পর্যটন মন্ত্রক ভারতের সেরা পর্যটন গ্রাম হিসেবে নির্বাচিত করেছে। ৩১টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে প্রাপ্ত ৭৯৫টি আবেদনের মধ্যে থেকে সেরা পর্যটন গ্রাম প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত হয়েছে। আমি গ্রামের মানুষকে অভিনন্দন জানাই।'
Glad to share and announce that Kiriteshwari in the Murshidabad district of West Bengal has been selected by the Ministry of Tourism, Government of India, as the Best Tourism Village of India. The selection has happened in the Best Tourism Village Competition,2023, from among 795…
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) September 21, 2023
বাংলার এই কালী সবার। মুর্শিবাদের নবগ্রামের কিরীটেশ্বরী মন্দিরে হিন্দু, মুসলমান দুই সম্প্রদায়ের মানুষের। একইসঙ্গে পুজোর দেখাশোনা করেন তাঁরা। জানা যায়, রাজা রামকৃষ্ণ রায়ের মতো সিদ্ধতান্ত্রিক এখানে পঞ্চমুণ্ডির আসনে সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেন। বাংলার ইতিহাসের বহু সুখ-দুঃখের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এই মন্দির।
দেবী কিরীটেশ্বরী মন্দির মুর্শিদাবাদের দহপাড়া রেল স্টেশন থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে। অনেকে বলেন এখানে সতীর মুকুট বা কিরীট পড়েছিল। সেই কারণে দেবীকে ‘মুকুটেশ্বরী’ বলেও ডাকা হয়। ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৪০৫ সালে দেবীর প্রাচীন মন্দিরটি ভেঙে পড়ে। তার পরে ১৯ শতকে লালগোলার রাজা দর্পনারায়ণ রায় নতুন মন্দির নির্মাণ করান।
ভাগীরথী তীরে এই দেবস্থানে কালীপুজোর দিন হাজার হাজার শাক্ত-বিশ্বাসীর সমাগম হয়। প্রধান কিরীটেশ্বরী মন্দিরের অন্যতম বৈশিষ্ট্যই হল, এখানে দেবী শিলাস্বরূপা। তাঁর কোনও নিয়তাকার মূর্তি নেই। কোনও ছবিও এখানে পূজিত হয় না। একটি লাল রঙের শিলাকেই এখানে মাতৃজ্ঞানে পূজা করা হয়। শিলাটি একটি আবরণে আচ্ছাদিত। প্রতি বছর দুর্গাষ্টমীতে এই আবরণটি পরিবর্তন করা হয়। যে মুকুটের মহিমাতেই এই শক্তিপীঠের উৎপত্তি তা রানি ভবানীর গুপ্ত মঠে সুরক্ষিত রয়েছে। গুপ্তমঠ দেবী মন্দিরের কাছেই অবস্থিত। প্রসঙ্গত, দেবীর প্রাচীন মন্দিরের ধ্বংসাবশেষও নবনির্মিত মন্দিরের সামনে অবস্থান করছে।
কিরীটেশ্বরী দেবীকেও একটি লাল রঙের কাপড়ে আবৃত করে রাখা হয়। বছরে একবার, দুর্গাষ্টমীর বিশেষ তিথিতে এই কাপড় পরিবর্তন করে দেবীকে পবিত্র বস্তু দিয়ে স্নান করানো হয়। বহু সন্ন্যাসী এই স্থানের মাহাত্ম্যের জন্য এখানে ছুটে আসতেন অতীতে।
কিরীটেশ্বরী গ্রামটিতে প্রচুর মন্দির রয়েছে। গ্রামের উত্তর-পূর্ব দিকে রয়েছে এক দালান মন্দির যা গুপ্তমঠ নামে পরিচিত। কথিত আছে, এখানে নাকি দেবীর কিরীট রাখা আছে। মন্দিরটি রানি ভবানী কর্তৃক নির্মিত। কিরীটেশ্বরী মন্দির থেকে এই গুপ্তমঠ যাবার পথটি গ্রামের মধ্য দিয়ে। এখানে প্রতিদিন ভোগ নিবেদিত হয়। অর্থের বিনিময়ে ভোগ পাওয়া যায়।