দেখতে দেখতে ১ মাস হয়ে গেল। গত মাসে এই দিনেই তৃতীয়বারের জন্য বাংলা দখল করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য জয় পাননি। তবে মুখ্যমন্ত্রী পদে তিনিই শপথ নিয়েছেন। তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকে একের পর এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখিও হতে হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
রাজনৈতিক সংঘর্ষ
ভোটের ফলাফল ঘোষণার পরেই রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাংলা। মৃত্যু হয় বেশ কয়েকজনের। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধেই। এমনকী আক্রান্ত দলীয় কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে দিল্লি থেকে ছুটে আসতে হয় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। যদিও শপথগ্রহণের পরেই পুলিশ প্রশাসনকে কড়া হাতে সমস্ত অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
করোনার দ্বিতীয় ওয়েভের সঙ্গে মোকাবিলা
কোভিড পরিস্থিতিতে সম্পন্ন হয়েছে রাজ্যের নির্বাচন। এমনকী পরিস্থিতি একসময়ে এমন পর্যায়ে চলে যায়, যে ভোট পর্বের শেষের দিকে প্রচার কর্মসূচিতেও রাশ টানতে হয় নির্বাচন কমিশনকে। সেক্ষেত্রে জয়ের পরেই কোভিড মোকাবিলায় নেমে পড়েন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শপথ গ্রহণের পরেই জরুরি বৈঠক ডেকে রাজ্যে লাগু করেন বেশকিছু বিধিনিষেধ। পরিস্থিত মোকাবিলায় রাজ্যে কার্যত লকডাউন জারি করে মমতা বন্দ্যোধ্যায়ের সরকার।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার একমাস পূর্ণ হওয়ার আগেই ধেয়ে আসে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। প্রতিবেশী রাজ্যে ওডিশার পাশাপাশি বাংলার পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় ঘূর্ণিঝড়। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখতে নবান্নে রাত জাগেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত এলাকাও পরিদর্শ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি সংক্রান্ত রিপোর্ট।
নারদকাণ্ডে বিধায়ক-মন্ত্রীরা গ্রেফতার
তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার ঠিক পরেই নারদ মামলা সংক্রান্ত বিপাকে পড়তে হল তৃণমূল কংগ্রেসকে। নারদ মামলায় ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে সিবিআই। এরমধ্যে ৩ জনই তৃণমূলের বিধায়ক। তাঁদের মধ্যে ২ জন আবার মন্ত্রীও। এই ঘটনাকে কেন্দ্রে করে রীতিমতো উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। গ্রেফতারের পরেই সিবিআই দফতরে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও পরবর্তী সময় ধৃত ৪ নেতার অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করে কলকাতা হাইকোর্ট।
আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত
সম্প্রতি আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলির নির্দেশকে ঘিরে কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে দেখা গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তাঁর সরকারকে। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে গত ৩১ তারিখ দিল্লিতে রিপোর্ট করার নির্দেশ দেয় কেন্দ্র। সেই নির্দেশের তীব্র বিরোধিতা করার পাশাপাশি আলাপনকে বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিজের মুখ্য পরামর্শদাতা হিসেবে নিয়োগ করেন মুখ্যমন্ত্রী।