রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব এবং স্বামী বিবেকানন্দর মতাদর্শ ও দর্শন নিয়ে কার্যত ঠাট্টা করেছে তুমুল বিতর্ক তৈরি করেছেন ইসকনের এক নতুন সাধু অমোঘ লীলা। সামাজিক মাধ্যমগুলিতে শুরু হয়েছে চর্চা। অনেকেই ওই সাধুর মুণ্ডুপাত করছেন। বিষয়টিতে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ আপত্তি জানিয়েছেন। ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও (Md Salim attack Amogh Lila) এই নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
সেলিম ইসকনের ওই সাধুর বক্তব্যের একটি অংশ টুইট করে লেখেন, “কথামৃতর স্থলে বিষ ঢেলে প্রবচন। বহুত্ববাদ ও বৈচিত্র্যের বদলে, বহুসংখ্যকবাদের প্রযোজনা! ‘সাংস্কৃতিক রাষ্ট্রবাদ’এরই মূর্ছনা।”
ঠিক কী বলেছেন অমোঘ, যা নিয়ে এই নিন্দা?
সেলিমের শেয়ার করা ভিডিওয় দেখা গেছে, অমোঘের যে বক্তব্যের অংশ উঠে এসেছে, তাতে ‘যত মত তত পথ’ বাণীর বক্তব্যকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। রামকৃষ্ণর ‘যত মত তত পথ’ বাণীকে উদ্ধৃত করে অমোঘ ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘যে রাস্তা দিয়ে ইচ্ছে যাওয়ার বেরিয়ে পড়, গন্তব্য একই হবে। সেটা কখনই হয় না। আমি যদি মায়াপুর যেতে চাই, তবে ডান-বাম-আগে-পিছে যে কোনও রাস্তা ধরে যাওয়া সম্ভব নয়। একটি নির্দিষ্ট রাস্তা ধরতে হবে।’
একেই সেলিম নিন্দা ((Md Salim attack Amogh Lila)) করেছেন ‘সাংস্কৃতিক রাষ্ট্রবাদ’ বলে। অর্থাৎ সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া শ্রীরামকৃষ্ণের বহুত্ববাদ ও বৈচিত্রকে আদৌ না বুঝে রাষ্ট্রীয় মতামত চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা বলে মনে করছেন তিনি। তাঁর মতে, এই সংখ্যাগুরুবাদেই আক্রান্ত হচ্ছে দেশের বহুত্ববাদ, ভারতের বৈচিত্র।
সেলিম একা নন, অমোঘের এই রামকৃষ্ণ-ব্যাখ্যাকে শুধু ভুল এবং আপত্তিকর বলে মনে করছেন সিংহভাগ মানুষ। তাঁদের মতে অমোঘ আসলে ইসকনের সাধু কম, ইউটিউবার বেশি। নিজের প্রচারের জন্য বিতর্ক তৈরি করার জন্যই তিনি ওরকম করেছেন।
শুধু রামকৃষ্ণ নন, বিবেকানন্দকে নিয়েও কটাক্ষ করেছেন ওই ইউটিউবার সাধু। তিনি বলেন, বিবেকানন্দকে তিনি শ্রদ্ধা করেন ঠিকই, কিন্তু সব মানতে পারেন না। তিনি কখনই বিবেকানন্দকে সিদ্ধ পুরুষ মনে করেন না। অমোঘ লীলার ব্যাখ্যা, “কোনও সিদ্ধপুরুষ কখনও কোনও পশু মেরে খাবেন না।” তিনি বলেন, “বিবেকানন্দ যদি মাছ খান তবে কীভাবে তিনি সিদ্ধপুরুষ হবেন?”