পৌষ মেলা নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা। তবে বিকল্প মেলার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিল বীরভূম জেলা প্রশাসন। পৌষ মেলার দিন অর্থাৎ ২৩ ডিসেম্বর শুরু হবে মেলা। শেষ হবে ২৬ ডিসেম্বর। শান্তিনিকেশন ট্রাস্টের সঙ্গে যৌথভাবে মেলা করতে চেয়ে বিশ্বভারতীর কাছে আবেদন করেছে বোলপুর পুরসভা। তবে এখনও বিশ্বভারতীর তরফে কোনও সাড়া মেলেনি।
বোলপুরে বিশ্ববাংলা ক্ষুদ্র বাজারে বিকল্প মেলা করার পরিকল্পনা করেছে রাজ্যের ক্ষুদ্র কুটির ও বস্ত্রবয়ন শিল্প দফতর। ইতিমধ্য়ে জায়গাটি পরিদর্শন করে গিয়েছেন দফতরের আধিকারিকরা।সঙ্গে ছিলেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। এনিয়ে বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় বলেন,''বোলপুরের ডাকবাংলো মাঠে ২৩ থেকে ২৭ তারিখের মধ্যে একটি মেলা আয়োজন করতে চলেছি।''
শান্তিনিকেতনে অন্যতম আকর্ষণ ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা। কিন্তু মেলার আয়োজন নিয়ে চলছে নানান টালবাহানা। ২০১৯ সালে কোনও রকমে পৌষ মেলার আয়োজন হয়েছিল। ২০২০ সালে করোনার কারণ মেলা বন্ধ ছিল। কিন্তু এবার মেলা নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেনি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট মেলা করতে চাইলেও এখনও বিশ্বভারতীর অনুমোদন আসেনি।
মেলাকে কেন্দ্র করে ৪ দিনে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়। অর্থনীতি, শিল্প, সংস্কৃতি প্রভৃতি সব কিছুই জড়িয়ে থাকে পৌষমেলার সঙ্গে। বিকিকিনি হবে না। ফলে আর্থিক সংকটে পড়বেন স্থানীয় ব্যবসায়ী, হস্তশিল্পী ও লোকশিল্পীরা। সে কারণে বিকল্প মেলার উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার।
বিশ্বভারতী যে পৌষ মেলা আয়োজন করবে না তা মোটামুটি পরিস্কার। কারণ মেলা আয়োজন করতে হলে প্রায় দু'মাস আগে থেকে প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। হাতে আর এক সপ্তাহ। এখনও কিছুই জানায়নি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে বাউল শিল্পী এবং হস্তশিল্পীরা পথে নেমেছেন। উপাসনা মন্দিরের সামনে বৈতালিকে প্রতিবাদ দেখান শান্তিনিকেতনের আশেপাশের কয়েকশো বাউলশিল্পী, হস্তশিল্পীরা। তাতে যোগ দেয় বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি এবং পৌষ মেলা বাঁচাও কমিটিও।
আরও পড়ুন- পোকায় খেল ২ কোটি বই, মাথায় হাত পাঠাগার দফতরের
জেলা প্রশাসনের জানিয়েছে, পৌষ মেলার সময়ে বোলপুরের ডাকবাংলো মাঠে আর একটি মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। এই মেলা হবে ২৩ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত। মেলায় রবীন্দ্র ঐতিহ্য মেনে কুটিরশিল্প এবং হস্তশিল্পকে বেশি গুরত্ব দেওয়া হবে। একই ভাবে অনান্য দোকানগুলিও থাকবে। থাকবে বিভিন্ন প্রদর্শনী। জেলা প্রশাসনের এই ভূমিকায় খুশি শান্তিনিকেতনের আশ্রমিক এবং প্রাক্তনীরা। আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন,''রবীন্দ্র ঐতিহ্য মেনে যে ভাবে পৌষ মেলার সময় আর একটি মেলা করার জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন সেজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।''
আরও পড়ুন- উত্তরপাড়ায় দুঃসাহসিক চুরি, গায়েব লক্ষাধিক টাকার গয়না-নগদ