"আমি তৃণমূলের সঙ্গে গাদ্দারি করে বিজেপিতে (BJP) গিয়েছিলাম। আমি সবচেয়ে বেশি গদ্দার। তৃণমূলের সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুব ভাল ছিল। আমি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়ে ভুল করেছিলাম। আজকে ফের তৃণমূলে যোগদান করে নিজেকে ধন্য মনে হচ্ছে। আমি আমার প্রায়শ্চিত্ত করলাম।" তৃণমূলে ফিরে এসে এমনটাই মন্তব্য করলেন নোয়াপাড়ার প্রাক্তন বিধায়ক তথা বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং-এর আত্মীয় সুনীল সিং।
তৃণমূলে ফিরে সুনীল সিং (Sunil Singh) আরও বলেন, "গত দু'বছর বিজেপিতে থাকাকালীন আমি ঘুমতে পারিনি। এই জন্য আমি বিজেপি ত্যাগ করলাম। আমাদের মতো রাজনৈতিক ছেলেরা বিজেপি করতে পারে না। বিজেপির তরফ থেকে একটা রাজনৈতিক চাপ ছিল। আমাকে কোনও কাজ করতে দেওয়া হচ্ছিল না।" একইসঙ্গে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নিজের নেত্রী বলে ফের একবার মেনে নেন তিনি। এদিন সুনীল সিং-এর সঙ্গে তৃণমূলেন যোগ দেন আদিত্য সিং ও সৌরভ সিং-ও।
রবিরাই বিজেপির সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ত্যাগ করার কথা ঘোষণা করেছিলেন সুনাল সিং। এরপর আজ দুপুরে টিটাগড়ের টাটাগেট সংলগ্ন তৃণমূলের (TMC) দমদম-ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার দলীয় কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূলে ফেরেন সুনীল ও বাকি দু'জন। এদিন তাঁদের হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দেন হাবড়ার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও ব্যারাকপুর-দমদম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। এছাড়ও সেখানে উপস্থিত ছিলেন দলের অন্যান্য নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৫ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের (Congress) একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন সুনীল সিং। এরপর ২০০৯ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেন তিনি। তারপর থেকে ২০১৯ পর্যন্ত তৃণমূলেই ছিলেন সুনীল। ২০১৮-র ফেব্রুয়ারি মাসে বিধানসভার উপনির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে নোয়াপাড়ার বিধায়কও নির্বাচিত হন তিনি। এরইমধ্যে গারুলিয়া পৌরসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলেছেন সুনীল। কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ব্যারাকপুর তথা গোটা রাজ্যে বিজেপির চমকপ্রদ ফলের পর ওই বছরের জুন মাসেই ফের দলবদল করেন সুনীল। তৃণমূলের সঙ্গ ত্যাগ করে নাম লেখান বিজেপিতে। কিন্তু গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে নোয়াপাড়া কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী মঞ্জু বসুর কাছে পরাজিত হন তিনি। তারপর থেকেই বিজেপির কোনও কর্মসূচিতে আর সেভাবে দেখা যাচ্ছিল না তাঁকে। এরইমধ্যে গত বছরে যে ক'জন বিজেপি নেতা পদ্ম ছেড়ে ঘাসফুল শিবিরে ফিরে আসেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মুকুল রায়। জল্পনা ছিল মুকুলের দেখান পথেই হয়তো পুরনো দলে ফিরতে পারেন সুনীল সিং। যদিও সে সময় কিছুটা ধোঁয়াশা জাগিয়ে রেখে তিনি বলেছিলেন, "সময়ই ঠিক করবে আমি আগামিদিনে কোন পথে যাব"। কিন্তু সুনীল সিংকে তৃণমূলে যাতে ফেরত নেওয়া না হয়, সেই দাবিতে নোয়াপাড়া বিধানসভা এলাকা জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় তাঁর বিরুদ্ধে পোস্টারও পড়ে। যদিও অবশেষে এদিন তৃণমলেই ফিরলেন সুবীল সিং।
আরও পড়ুন - মাত্র ৫২০ টাকার EMI-তে কিনুন Redmi-র এই ৬৪ MP ক্যামেরার ফোন