কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিচারপতি সৌমেন সেনের মধ্যে সংঘাত এ বার সুপ্রিম কোর্টে গড়াল। হাইকোর্টের দুই বিচারপতির বেনজির সংঘাতে স্বত:প্রণোদিত পদক্ষেপ গ্রহণ করল দেশের শীর্ষ আদালত। এ জন্য প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ গঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় শুনানি।
ঠিক কী ঘটেছে?
মেডিক্যালে ভর্তিতে অনিয়মের অভিযোগ সংক্রান্ত একটি মামলা আসে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে। বুধবার সেই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। বুধবারই এই নিয়ে বিচারপতি সেনের ডিভিশন বেঞ্চে দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাজ্য। পরে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি সেন। সেই নির্দেশ মানতে চাননি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সিবিআইকে এফআইআর করার নির্দেশ দেন তিনি। বৃহস্পতিবার বিচারপতি সেনের ডিভিশন বেঞ্চ সিবিআইয়ের এফআইআর খারিজ করে দেয়। এই নিয়ে গোলমালের সূত্রপাত।
বিচারপতি সেনের ডিভিশন বেঞ্চের এই নির্দেশে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। নিজের এজলাসে বসে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন যে, বিচারপকি সেন 'রাজনৈতিক মদতপুষ্ট'। তাঁর অভিযোগ, রাজনৈতিক স্বার্থেই বিচারপতি সেন এই নির্দেশ দিয়েছেন। বিচারপতি সেনের রায় এবং তাঁর কার্যপ্রণালী বিশেষ একটি দলের রাজনৈতিক স্বার্থে বলেও সরব হয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এরপরই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন যে, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি কেন বিচারপতি সেনের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের প্রক্রিয়া শুরু করবেন না। বিচারপতি সেন সম্পর্কে তাঁর করা মন্তব্য লিপিবদ্ধ করারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এই রায়ের কপি দেশের প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠাতে রেজিস্ট্রার অফ জেনারেলকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। অতীতেও বেশ কিছু মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছে বিচারপতি সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। এর আগেও এই নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
দুই বিচারপতির নজিরবিহীন সংঘাতের ঘটনায় যে ভাবে স্বত:প্রণোদিত পদক্ষেপ করল শীর্ষ আদালত, তা উল্লেখযোগ্য। শনিবার আদালত ছুটি। তা সত্ত্বেও পরিস্থিতি বিবেচনা করে শনিবার সকালেই শুনানি হচ্ছে। প্রধান বিচারপতি ছাড়া বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি সঞ্জীব খন্না, বিচারপতি বিআর গাভাই, বিচারপতি সূর্যকান্ত, বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু।