তিনি জেলে বন্দি। এই প্রথম তাঁকে ছাড়াই বীরভূমে লোকসভা নির্বাচনের লড়াইয়ে নামতে চলেছে তৃণমূল। সেই তিনি অর্থাৎ অনুব্রত মণ্ডলকে সামনে রেখেই ভোটযুদ্ধে ঝাঁপাতে চায় বাংলার শাসকদল, তা আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল। বীরভূমে গিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রতের প্রশংসায় পঞ্চমুখ দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। বললেন, 'আমাদের মাথার উপর কেষ্ট আছে।' কয়েক দিন আগে অনুব্রতের মঙ্গল কামনায় যজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই উপলক্ষে পোস্টারে ছয়লাপ হয়ে গিয়েছিল।
গরু পাচার মামলায় ২০২২ সালের অগস্ট মাসে গ্রেফতার হন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত। তার পর থেকেই জেলবন্দি এই দাপুটে নেতা। পরে এই মামলায় তাঁর কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকেও গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বর্তমানে দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি রয়েছেন অনুব্রত এবং সুকন্যা। অনুব্রতের গ্রেফতারের পর থেকেই তাঁর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়েক দিন আগে বীরভূমে গিয়ে অনুব্রতের কাজের প্রশংসা করেছেন দলনেত্রী। পাশাপাশি, এ-ও বলেছেন যে, এখনকার প্রজন্মও অনুব্রতের কথা বলছে। তাঁর কথায়,'কেষ্টকে কতদিন জেলে ভরে রেখে দিয়েছে। কিন্তু মানুষের মন থেকে ওকে দূর করতে পারেনি। ও কাজ করেছে। কাজ করতে জানে ও।' এবার দলের রাজ্য সভাপতি বক্সীও অনুব্রতের তারিফ করলেন। তিনি এ-ও বলেছেন, 'কেষ্টকে বেশি করে চিনি। ভালবাসি। ওঁর সাংগঠনিক শক্তি অফুরন্ত।'
তৃণমূলে অনুব্রতকে 'ভোলা যাবে না, তাঁর কৌশলেই লোকসভা নির্বাচনে বীরভূমে লড়তে চায় ঘাসফুল শিবির। কয়েক দিন আগে বীরভূমের নেতাদের নিয়ে বৈঠকে এমন বার্তাই দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা। বৈঠক শেষে এ কথা জানিয়েছিলেন বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়। বৈঠক শেষে শতাব্দী সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, 'নেত্রী বলেছেন, অনুব্রত বেরিয়ে আসবে। সাংগঠনিক ক্ষেত্রে ওর অনেক ভূমিকা রয়েছে। দল থেকে যাতে তাকে সম্মান দেয়,ভুলে যেন না যাওয়া হয়। এ সব কথা বলেছেন নেত্রী। অনুব্রত জেল থেকে ফিরলে তার জায়গা পাবে। এটা নেত্রী বলেছেন।' ২০২২ সালে নেতাজি ইন্ডোরের এক সভা থেকে বীরভূমের নেতাদের উদ্দেশে মমতা বলেছিলেন, 'কেষ্ট একদিন জেল থেকে বেরোবেই। সেদিন ওঁকে নায়কের সংবর্ধনা দিয়ে বার করে আনতে হবে।'
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, জেল বন্দি হলেও অনুব্রতকে সামনে রেখেই ভোটের বৈতরণী পার করতে চায় জোড়াফুল শিবির। আর সে কারণেই কেষ্টর কথা বার বার তুলছেন শাসকদলের নেতারা।