scorecardresearch
 

ফি-বছর বন্যায় নিঃস্ব ঘাটালবাসী, কয়েক দশক পরেও অথৈ জলে মাস্টার প্ল্যান

ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান। রাজ্য রাজনীতির এক বহুচর্চিত বিষয়। আজকের নয়, কয়েক দশকের। ঘাটালবাসীর অভিযোগ, প্রতিবার ভোট আসে। নেতারা ঘাটালে আসেন। প্রতিশ্রুতি দেন, ভোটে জিতলেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত করবেন। কিন্তু, ভোট পেরিয়ে যাওয়ার পর আর কারও দেখা মেলে না।

Advertisement
ঘাটালের বন্যাচিত্র ঘাটালের বন্যাচিত্র
হাইলাইটস
  • ৩ দশকেরও বেশি সময় ধরে অথৈ জলে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান
  • প্রতিবার বন্যা হয় ঘাটালে, কিন্তু বন্য়া নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয় না কোনও সরকার
  • এমনটাই দাবি ঘাটালের মানুষের

ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান। রাজ্য রাজনীতির এক বহুচর্চিত বিষয়। আজকের নয়, কয়েক দশকের। ঘাটালবাসীর অভিযোগ, প্রতিবার ভোট আসে। নেতারা ঘাটালে আসেন। প্রতিশ্রুতি দেন, ভোটে জিতলেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত করবেন। কিন্তু, ভোট পেরিয়ে যাওয়ার পর আর কারও দেখা মেলে না। মাস্টার প্ল্যানের নামগন্ধও শোনা যায় না কোনও নেতার মুখে। আবার যখন বর্ষা আসে, নদীর দু'কূল ছাপিয়ে জল ঢোকে, ডুবিয়ে দেয় ঘাটালকে, তখন ফের মাস্টার প্ল্যানের কথা শোনা যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। 

এখনকার ঘাটালের পরিস্থিতি

প্রতিবারের মতো এবারও জলবন্দী ঘাটাল।পঞ্চায়েত ও পুরসভা এলাকাগুলি জলের তলায়। ঘাটাল-চন্দ্রকোনা রাজ্য সড়কও ডুবে ওআছে। ফলে বিছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা। এখন ঘাটালের রাস্তায় চলছে নৌকা। পানীয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে বেশ কয়েকটি এলাকায়। অনেককে উদ্ধার করা হয়েছে। অনেকে এখনও শেষ সম্বলটুকু বাঁচিয়ে রাখার আশায় বাড়িতেই পড়ে রয়েছেন। 

ফি-বছর বন্য়ার কবলে পড়ে ঘাটাল
ফি-বছর বন্য়ার কবলে পড়ে ঘাটাল

ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কী ?

শীলাবতী নদী। এই নদীর দুই ধারে গ্রামের পর গ্রাম। সেই শীলাবতীর জল সামান্য বাড়লেই ডুবে যায় ঘাটালের গ্রামগুলি। চেতুয়া, দাসপুর ১ ও ২ ব্লকের মতো অঞ্চলগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শীলাবতী নদীর উপর একটি ৬ মিটার বাঁধ নির্মাণ এবং ঘাটালে একটি পাম্প বসানো হবে বলে ঠিক করা হয়। এই বাঁধ তৈরি হলেই বাঁচবে ঘাটাল। ফি-বছর ঘাটালবাসীকে বন্যার কবলে পড়তে হবে না। ১২৩৮ কোটি টাকার এই মাস্টার প্ল্যানে কেন্দ্র ও রাজ্য ২৫-৭৫ শতাংশ টাকা দেবে বলে ঠিক হয়। 

আরও পড়ুন : Cancer : মদ্যপায়ীরা সাবধান, ক্যান্সার নিয়ে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য!
 

ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের ইতিহাস

Advertisement

এই মাস্টার প্ল্যানের পরিকল্পনা আজকের নয়। কয়েক দশক আগের। তখন রাজ্যে ক্ষমতায় বামেরা। সালটা ১৯৮২। রাজ্যের তৎকালীন সেচমন্ত্রী প্রভাস রায় এই মাস্টার প্ল্যানের শিলান্যাস করেন। কিন্তু, সেখানেই আটকে যায় কাজ। আজও এগোয়নি। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘাটালের মানুষকে বন্যার হাত থেকে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করার জন্য সেচ বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছিলেন ৷ এই 'মাস্টার প্ল্যান' বিভাগটি তৈরি করেছিলেন ৷ ২০১৪ সালে ছাড়পত্রের জন্য কেন্দ্রকে এই পরিকল্পনার কথা জানান৷ কেন্দ্র ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানকে অনুমোদন দেয়৷ তবে, তারা কোনও টাকা বরাদ্দ করেনি বলে অভিযোগ। ফলে যেখানে ছিল, সেখানেই আটকে রয়েছে এই প্ল্যান। 

আরও পড়ুন : 'দিদিকেই প্রধানমন্ত্রী চাই', ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি দেখে বললেন দেব

তৃণমূলের বক্তব্য

এই মাস্টার প্ল্যান না হওয়ার পিছনে কেন্দ্রকেই দায়ি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একুশের ভোটের আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর, ডেবরা এবং চন্দ্রকোনায় নির্বাচনী প্রচারের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেছিলেন, 'গত পাঁচ বছর ধরে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের পরিকল্পনা করেছে আমাদের সরকার। কিন্তু, কেন্দ্র প্রকল্প রূপায়ণের ছাড়পত্র না দেওয়ায় তা চালু করা যাচ্ছে না।' 

মাস্টা প্ল্যান না হওয়ার পিছনে কেন্দ্রকে দায়ি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
মাস্টা প্ল্যান না হওয়ার পিছনে কেন্দ্রকে দায়ি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

বুধবার আবার ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়ে সেখানকার সাংসদ তথা অভিনেতা দেবও নরেন্দ্র মোদী পরিচালিত সরকারকেই দায়ী করেন। বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী না হওয়া পর্যন্ত এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে না।' 

বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে দেব
বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে দেব

BJP-বক্তব্য

এদিকে গেরুয়া শিবিরের তরফে এই মাস্টার প্ল্যান না হওয়ার জন্য তৃণমূলকে দায়ী করছে।  এই নিয়ে একসময় গেরুয়া নেত্রী ভারতী ঘোষ বলেছিলেন, ' ক্ষমতায় আসার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্বস্ত করে গিয়েছিলেন, তিনি ক্ষমতায় এলে ছ'মাসের মধ্যে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ করবেন ৷ কিন্তু, ক্ষমতায় আসার পর তিনি সব ভুলে গেছেন৷' 

 

Advertisement