ওই দেশ থেকে অনেকেই পড়তে আসেন কল্যাণীর বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (BCKV)-এ। প্রায় প্রতি বছর কেউ না কেউ আসেন। কখনও সংখ্যা কম, আবার কখনও বা সংখ্যায় বেশি।
তবে এখন পরিস্থিতি আলাদা। বলা যায়, ভাল নয়। কারণ সে দেশে প্রবল গোলমাল। সে দেশ বলতে আফগানিস্তান। আর ওঁরা আফগানিস্তানের পড়ুয়া।
নিষেধাজ্ঞা
তাঁদের দেশে এখন যেন নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে! আর এখন তাঁরা কেমন আছেন, তা নিয়ে চিন্তিত বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (BCKV)-এর অধ্যাপক থেকে বন্ধুরা। কারও কারও সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। আবার অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। আশা আর উদ্বেগে কাটছে সবার দিন।
যোগাযোগ থাকে
লেখাপড়া শেষ করার পরও অধ্যাপক-সতীর্থদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকে। এখন তো ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ রয়েছে। ফলে যোগাযোগ আরও সহজ হয়েছে।
পরিবর্তিত পরিস্থিতি
তালিবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করেছে বললে ভুল বলা হবে না। আর তারপরই বদলে গিয়েছে সে দেশের অবস্থা। মানুষের মনে আতঙ্ক। ভাল নেই কল্যাণীর বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক-পড়ুয়ারাও। কারণ তাঁদের কারও ছাত্র, কারও বন্ধু কী ভাবে দিন কাটাচ্ছে কে জানে। এর মাঝে গুজবও রটানো হচ্ছে।
ছাত্রর সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে
বিশ্ববিদ্যালয় (BCKV)-এর পতঙ্গবিজ্ঞানের অধ্যাপক শান্তনু ঝা জানান, জাকিউল্লাহ আমিনি নামে এক ছাত্রের সঙ্গে তিনি যোগায়োগ করতে পেরেছেন। ফোনে কথা বলেছেন। তাঁর ছাত্র ঘরে আবদ্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে।
ফেসবুকে লিখেছেন সে কথা
শান্তনুবাবু ফেসবুকে ওই ছাত্রের ব্যাপারে বিস্তারিত লিখেছেন। ডানদিক থেকে বাঁদিক লিখত সে। পুস্তু ছাড়া কিছু বুঝত না। আর সেই ছেলেই এখন ঝরঝরে ইংরেজিতে কথা বলছে। কী ভাবে জীবন কাটাতে হয়, তাঁদের কাছে শেখার আছে যেন! একদিকে ন্যাটো, একদিকে তালিবান। সতর্ক হয়ে বড় হতে হয় কী করে, শেখার আছে।
শান্তনুবাবু বলেন, "কৃষির উন্নয়নে চিন্তাশীল ছিল সে। তার দেশে কোন ফলের গাছ খাপ খেতে পারে, তা নিয়ে ভাবত। ভাল থাকুক, সাবধানে থাকুক, সেটাই চাইব। কিন্তু তাদের অধিকার হারাতে হচ্ছে। এখন দেশ ছেড়ে পালাতে চাইছে।"
আরও এক পড়ুয়ার কথা
সাফিউল্লা মালিকজাদা নামে এক পড়ুয়া আফগানিস্তান থেকে পড়তে এসেছিল। তাঁর বন্ধুরা জানাচ্ছেন, ২০১৮ সালে ফ্লোরিকালচার নিয়ে পড়েছেন। ২০২০ সালে সেপ্টেম্বর বাড়ি ফিরে যান। তারপর সরকারি চাকরিতে যোগ দেন।
তাঁর বন্ধুরা আরও জানাচ্ছেন, রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনতেন। 'দয়াল বাবা কলা খাবা' গানটি খুব পছন্দ করতেন। একটি ছবি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সে ব্য়াপারে তিনি দাবি করেছেন, কোনও সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত নন। তিনি সরকারি কর্মী। তালিবান সরকারে তাঁর কোনও দায়িত্ব নেই।