আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পরে তালেবানরা আবারও সেখানে সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে শুরু করেছে। আজতক আফগানিস্তান থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেদন করে চলেছে। এই পর্বে, আজতকের পক্ষ থেকে আফগানিস্তানের বাগরাম এয়ারবেস নিয়ে রিপোর্ট করা হচ্ছ। যা মার্কিন সেনাবাহিনীর জন্য খুব বিশেষ ছিল, কিন্তু এর পরেও মার্কিন সেনাবাহিনী কিছু না জানিয়ে চুপচাপ চলে গেল। পড়ে রইল সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি এবং কম্পিউটার ।
রাজধানী কাবুল থেকে এক ঘন্টা দূরে বারগাম এয়ারবেসটি অবস্থিত। এই বিমান ক্ষেত্রটি কাঁটাতারের পিছনে এক ধরণের ছোট সামরিক শহর। এটি এখন আফগান জাতীয় সুরক্ষা ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে।
১৯৫০ সালে, সোভিয়েত ইউনিয়ন এই জায়গাটি একটি বেস হিসাবে তৈরি করেছিল এবং আমেরিকা ৯/১১-এর হামলার পরে এটি ব্যবহার শুরু করে। মার্কিন সামরিক বাহিনী আফগানিস্তানে তার কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে বাগরাম বিমানবন্দরকে ব্যবহার করেছিল। এখানেই পুরো পরিকল্পনাটি তৈরি করা হয়েছিল এবং এখান থেকে প্ল্যান বাস্তবায়নের জন্য সম্পূর্ণ সমর্থন দেওয়া হয়েছিল।
বাগরাম এয়ারবেস দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একটি দীর্ঘ এবং রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের সাক্ষী। এই জায়গাটি মার্কিন সেনাবাহিনীর অপারেশন আফগানিস্তানের কেন্দ্রে ছিল। আমেরিকা দুই দশকে এখানে 2 লক্ষ কোটি ডলার ব্যয় করেছে এবং এখান থেকে আফগানিস্তানে যুদ্ধ করেছে। তবে আশ্চর্যের বিষয় হ'ল যে জায়গাটিতে এত বেশি অর্থ এবং এত শক্তি ব্যয় করা হয়েছিল, আমেরিকান সেনাবাহিনী রাতারাতি সেই জায়গা ছেড়ে চলে গেল। আফগান সেনাবাহিনীকে এ সম্পর্কে কিছু জানাল না পর্যন্ত।
আমেরিকান সেনাবাহিনী হঠাৎ চলে যাওয়ার পরে এই বিমানবন্দরে অবস্থানরত সৈন্যদের জিজ্ঞাসা করা হলে তারা জানিয়েছিল যে আমেরিকা বলত যে আমরা না জানিয়ে আসি এবং না জানিয়েই চলে যাই। জওয়ানরা জানিয়েছেন যে মার্কিন সেনা এখানে চলে যাওয়ার দু-তিন ঘন্টা পরে তার সে সম্পর্কে জানতে পারেন।
আফগানিস্তানের গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি ...
মার্কিন সেনা চলে যাওয়ার সাথে সাথে আফগানিস্তানের সব অঞ্চলে গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। তালিবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের জন্য এই পরিস্থিতিতে সুবিধা নিতে চায়। আফগানিস্তান সেনাবাহিনী ও তালেবানদের মধ্যে যুদ্ধের পর জুন মাসটি ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ সময়। এ মাসে আফগান বাহিনী ৬ হাজার তালিবান জঙ্গি হত্যা করেছে, এবং আফগান সেনাবাহিনীর ৬০০ সেনা শহিদ হয়েছেন। এখন সামনের পরিস্থিতি যে কোনও সময় বিস্ফোরক হতে পারে, কারণ গেরিলা কৌশল অনুসারে তালেিবানরা হঠাৎ আক্রমণ চালানোর পরিকল্পনা করছে।