scorecardresearch
 

হল না ট্রাম্পের স্বপ্নপূরণ, ক্ষুধার্তদের মুখে অন্ন তুলে নোবেল শান্তি জিতল বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেন থেকে সিরিয়া, প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষের পেট ভরিয়ে চলেছে বিশ্ব খাদ্য প্রকল্প। শুধু ক্ষুধা নিবারণই নয়, অশান্ত এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টাও নিরলস ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী। এবার সেই মানবসেবারই পুরস্কার পেল ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম। যুদ্ধ ও মহামারী বিধ্বস্ত ক্ষুধার্ত মানুষের পেট ভরিয়ে এবছর নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে রাষ্ট্রসংঘের এই বিশেষ কর্মসূচি।

Advertisement
নোবেল শান্তি নোবেল শান্তি
হাইলাইটস
  • ঘোষিত হল এবছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার
  • কোনও ব্যক্তিকে এবারের নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়নি
  • ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামকে বেছে নিয়েছে নোবেল কমিটি

"ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি।"  বহুকাল আগে এই লাইন লিখে গিয়েছিলেন কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য। দিন পার হয়েছে, কিন্তু পৃথিবী থেকে সর্বহারা মানুষের দুর্দশা মেটেনি। রাজায়-রাজায় যুদ্ধ হয়েছে, কিন্তু মাশুল গুনতে হয়েছে হাজার-হাজার অসহায় মানুষকে। বিশ্বের নানা প্রান্তের সংঘর্ষ কবলিত এলাকার আর্ত মানুষদের কাছে বছরের পর বছর ধরে খাবার পৌঁছে যাচ্ছে রাষ্ট্রসংঘের খাদ্য সহায়তা সংক্রান্ত শাখা ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম। তাই এবছরের শান্তি পুরস্কার কোনও ব্যক্তি বিশেষ নয়, দেওয়া হল বিশ্ব খাদ্য প্রকল্পকে। 

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেন থেকে সিরিয়া, প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষের পেট ভরিয়ে চলেছে বিশ্ব খাদ্য প্রকল্প। শুধু ক্ষুধা নিবারণই নয়, অশান্ত এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টাও নিরলস ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী। এবার সেই মানবসেবারই পুরস্কার পেল ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম। যুদ্ধ ও মহামারী বিধ্বস্ত ক্ষুধার্ত মানুষের পেট ভরিয়ে এবছর নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে রাষ্ট্রসংঘের এই বিশেষ কর্মসূচি।

সাধারণত নোবেল শান্তি পুরস্কার কোনও ব্যক্তিকেই পেতে দেখতে আমরা অভ্যস্ত। কিন্তু সেই নিয়মে এবার একটু ব্যতিক্রম ঘটল। এবার নোবেল শান্তি  পুরস্কারের জন্যে ৩১৮টি নামের মনোনয়ন জমা পড়েছিল। তার মধ্যে ২১১ জন ব্যক্তি এবং ১০৭টি সংস্থার নাম ছিল। নমিনেশন পেয়েছিলেন স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। তবে এবার বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে খিদের জ্বালা মেটানোর লড়াইয়ে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী এই কৃতিত্ব জিতে নিল। এর আগে অবশ্য ২৫ বার বিভিন্ন সংস্থা এই কৃতিত্বের অধিকারি হয়েছে। 

শুক্রবার নরওয়ের স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় রাজধানী অসলো থেকে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি এবারের শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে। নোবেল কমিটির চেয়ারওম্যান বেরিট রেইস অ্যান্ডারসন বলেন,''যুদ্ধ  ও সংঘাতের অস্ত্র হিসেবে খিদেকে ব্যবহার করা হচ্ছে। সে জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠায় অন্যতম ভূমিকা নিয়েছে বিশ্ব খাদ্য প্রকল্প।'' বর্তমান পরিস্থিতিতে শান্তি পুরস্কারের জন্য কেন বিশ্ব খাদ্য প্রকল্পকে বেছে নেওয়া হল তাও জানিয়েছেন অ্যান্ডারসন। তিনি বলেন, ''খিদের জ্বালায় মরছে কোটি কোটি অভূক্ত মানুষ। সে দিকে যাতে গোটা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য চলতি বছর বিশ্ব খাদ্য প্রকল্পকে বেছে নিল নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি।''

Advertisement

খাদ্য সহায়তার উদ্দেশ্যে  বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি  গ্রহণ করেছিল রাষ্ট্রসংঘ। ৮৩টি দেশের ৯১.৪ লক্ষ মানুষকে খাদ্যের যোগান দেয় এই সংস্থা। ১৯৬০ সালে ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল অরগানাইজেশনের কনফারেন্সের পরে ১৯৬৩ সালে এই সংস্থা গঠিত হয়। গত কয়েক বছরে এই কর্মসূচির আওতায় বহু উল্লেখযোগ্য কাজ হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম , ২০১০ সালে হাইতিতে ভূমিকম্পের সময়ে খাদ্য বণ্টন। এখনও পর্যন্ত বিশ্বের ৭১টি দেশের শিক্ষার্থীরা  ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের নেওয়া স্কুল-ফিডিং প্রোগ্রামে উপকৃত হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম এখনও পর্যন্ত ৮১টি দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষের  কাছে খাদ্য পৌঁছে দিতে সমর্থ হয়েছে। জর্ডনের সিরিয়ান উদ্বাস্তুদের মধ্যেও খাদ্য বণ্টনে অগ্রণী ভূমিকা নেয় ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম। ইয়েমেনের বিপন্ন মানুষের কাছেও খাদ্য পৌঁছে দিয়েছে এই সংস্থা। বর্তমানে করোনা অতিমারীতে বিপন্ন জনগোষ্ঠীগুলির কাছেও খাদ্য-সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম। 

Advertisement