করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় কার্যত লকডাউন ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। এরপর তালা পড়ে যায় টলিপাড়ার স্টুডিওগুলিতেও। এরই মধ্যে 'শ্যুট ফ্রম হোম' (Shoot From Home) প্রসঙ্গে ফেডারেশন (Federation of Cine Technicians & Workers of Eastern India), আর্টিস্ট ফোরাম (West Bengal Motion Picture Artist Forum) ও প্রোডিউসার্স গিল্ডের (Welfare Association Of Television Producers) তরজা শুরু হয়। সোমবার একাধিক ক্ষেত্রে নিয়ম শিথিল হওয়ার পাশাপাশি শ্যুটিংয়ের জন্যেও ছাড় ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
বুধবার থেকে পুনরায় চালু হয় একাধিক ধারাবাহিকের শ্যুটিং। কিন্তু ফের সমস্যায় পড়েন একাধিক শিল্পী থেকে কলাকুশলীরা। এদিন একটি সাংবাদিক বৈঠক ডাকা হয়, আর্টিস্ট ফোরাম, প্রযোজক, বিভিন্ন চ্যানেল কর্তাদের তরফে। সেখানে দাবী করা হয় ঠিক মতো শ্যুটিংয়ে বাধা দেওয়া হচ্ছে ফেডারেশনের তরফ থেকে। তাঁরা বলেন, মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো ৫০ জন শিল্পী ও কলাকুশলী প্রতি ইউনিটে নিয়ে স্বাভাবিক নিয়মে শ্যুটিং শুরুর কথা ছিল। কিন্তু তাঁদের অবাঞ্ছিত বাধা দেওয়া হচ্ছে।
আর্টিস্ট ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক শান্তিলাল মুখোপাধ্যায় (Shantilal Mukherjee) ও কার্যকরী সভাপতি শঙ্কর চক্রবর্তীর (Shankar Chakraborty) তরফে জানানো হয়, "ফেডারেশন কর্তৃপক্ষের অবাঞ্ছিত বাধাদানে বেশ কিছু ইউনিটে শ্যুটিং প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হয়েছে। আজকের দিনে যখন প্রতিটি মানুষকে জীবন ও জীবিকার সঙ্গে এক কঠিন লড়াই লড়তে হচ্ছে, তখন কর্মক্ষেত্রে এহেন অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপের আমরা তীব্র প্রতিবাদ করছি। সমস্ত শিল্পী ও কলাকুশলীদের স্বার্থে আমাদের দাবী কাজের পরিবেশ হোক সুস্থ ও বন্ধুত্বপূর্ণ।"
আরও পড়ুন: এখনই শেষ হচ্ছে না 'কি করে বলবো তোমায়'! শ্যুটিংয়ে যোগ দিয়ে জানালেন স্বস্তিকা
আর্টিস্ট ফোরামের তরফ থেকে আরও জানানো হয়, "এই মুহূর্তে প্রতিটি মানুষের কাজ এবং তা থেকে রোজকারের প্রয়োজন আছে। আমরা কখনই চাই না কোনও ভাবে শ্যুটিং প্রক্রিয়া ব্যাহত হোক। আমরা বিভেদকামী শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং সমস্ত শিল্পী ও কলাকুশলীদের স্বার্থে দাবী রাখছি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে স্বাভাবিক নিয়মে পুনরায় শ্যুটিং প্রক্রিয়াকে চালনা করার জন্য।"
আরও পড়ুন: টলিপাড়ার ফেডারেশন- আর্টিস্ট ফোরাম তরজায় এবার কাকে কটাক্ষ করলেন লীনা?
মঙ্গলবার আরও একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত সংগঠন সিনে মেকআপ আর্টিস্ট অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের সদস্যদের উদ্দেশে সদস্যপদ বাতিল করে নেওয়ার সতর্কবাণী দেওয়া হয়েছে সেখানে। বলা হয়েছে, নতুন বা পুরনো, কোনও ধারাবাহিকেই কাজ করা যাবে না সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের অনুমতি ছাড়া। কোনও সদস্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে যদি কোনও প্রযোজক টাকা ফেলেন, তা হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্টেটমেন্টের ছবি তুলে বা মেসেজ করে পাঠাতে হবে সংগঠনের কাছে।
আরও পড়ুন: "বাংলা থিয়েটার অভিভাবকহীন হল!" স্বাতীলেখা সেনগুপ্তর স্মৃতিচারণায় বাংলার নাট্য ব্যক্তিত্বরা
ফেডারেশন নির্দেশ ছিল, যতক্ষণ না প্রোডিউসার গিল্ডের সঙ্গে ফেডারেশনের নতুন চুক্তি কার্যকর হচ্ছে ততক্ষণ এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। ২০টি ধারাবাহিকের তালিকায় রয়েছে — ‘কৃষ্ণকলি’, ‘তিতলি’, ‘অপরাজিতা অপু’, ‘গ্রামের রানী বিনাপানি’, ‘বরণ’, ‘খেলাঘর’, ‘যমুনা ঢাকি’, ‘গঙ্গারাম’, ‘জীবন সাথী’, ‘মিঠাই’, ‘সাঁঝের বাতি’, ‘খড়কুটো’, ‘শ্রীময়ী’, ‘মোহর’, ‘দেশের মাটি’, ‘রিমলি’, ‘ওগো নিরুপমা’, ‘ফেলনা’, ‘কি করে বলবো তোমায়’, ‘ধ্রুবতারা’। কিছু নতুন ধারাবাহিকের নামও করেছে ফেডারেশন। তাতে টেকনিশিয়ানরা কাজ করতে পারবেন না বলে জানিয়েছে তারা। তাতে টেকনিশিয়ানরা কাজ করতে পারবেন না বলে জানিয়েছে তারা। সেই তালিকায় রয়েছে আরও ৪টি ধারাবাহিক। টেন্ট সিনেমার ‘রিসতো কি মাঞ্জা’, অর্গানিক টেনিশিয়ান স্টুডিয়োর ‘সুন্দরী’, অ্যাক্রপলিস এন্টার্টেইনমেন্টের ‘মন ফাগুন’ এবং ম্যাজিক মোমেন্টের ‘ধূলি কনা’।