বুধবার দমদম নাগেরবাজার (Dumdum Nagerbazar) থানা এলাকার রামগড় কলোনির বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় মডেল- অভিনেত্রী বিদিশা দে মজুমদারের (Bidisha De Majumder) ঝুলন্ত দেহ। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। একটি ডায়েরির মধ্যে চার পাতার একটি সুইসাইড নোট (Suicide Note) পাওয়া গিয়েছে। তবে বিদিশার আত্মঘাতী হওয়ার পিছনে কোনও প্রেমঘটিত নাকি পেশাগত কারণ রয়েছে, সেই তদন্তই করছে পুলিশ।
শোনা যাচ্ছে, নির্দিষ্ট সময়ের পরও বিদিশা সাড়া না দেওয়ায়, তাঁকে বাইরে থেকে ডাকেন তাঁর ফ্ল্যাটমেট দিশানী। এরপর তিনি দরজা খুলে প্রথম দেখতে পান, মডেল -অভিনেত্রীর ঝুলন্ত দেহ। বিদিশার আরেক মডেল বন্ধুকে প্রথমে ফোন করেন দিশানী। এরপরই খবর যায় স্থানীয় থানায় এবং বিদিশার পরিবারে। মডেল- অভিনেত্রীর পরিবার- বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত করছে পুলিশ। সামনে উঠে আসছে একাধিক নতুন তথ্য।
আরও পড়ুন: TRP: অনেকটা নম্বর কমল 'ধুলোকণা'-র! জোর টক্কর দিয়ে সেরা 'মিঠাই' না 'গাঁটছড়া'?
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বিদিশার এক আত্মীয় সংবাদমাধ্যমকে জানান, খবরটা পাওয়া মাত্রই তিনি বিদিশার ফ্ল্যাটে ছুটে গিয়ে দেখেন, সেখানে পুলিশ দাঁড়িয়ে রয়েছে। অনুমতি নিয়ে ভেজানো দরজা খুলতেই তিনি দেখতে পান, ওড়ানায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছেন বিদিশা। শরীরেও বিকৃতি রয়েছে। নাক থেকে তরল পদার্থ বেরিয়ে এসে জমাট বেঁধে ঝুলছে। তবে তাঁর চোখ বন্ধ এবং মুখে কাপড় গোঁজা ছিল। মনে করা হচ্ছে, মৃত্যুযন্ত্রণার কাতরানি যাতে কারও কানে না যায়, এজন্যেই এটি মুখে গুঁজে রেখেছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: 'মনেই হচ্ছে না যে ওঁরা নেই!' 'বেলা শুরু' যেন মাস্টার ক্লাস হয়েই থেকে যাবে পৌলমী-সোহিনীদের কাছে
গত ১৫ মে টেলি অভিনেত্রী পল্লবী দে (Pallavi Dey)-র রহস্য মৃত্যু হয়। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই, আরও এক অভিনেত্রীর রহস্যমৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় খুবই সক্রিয় থাকতেন বিদিশা। নিত্য -নতুন ইন্সটা রিলস শেয়ার করতেন তিনি। দিন দু'য়েক আগেও নিজের কাজের একটি ভিডিও ইন্সটাগ্রামে শেয়ার করেছেন মডেল- অভিনেত্রী। এমনকী অভিনেত্রী পল্লবীর দে-র মৃত্যুর পর ফেসবুকে পোস্টও করেছিলেন তিনি। বিদিশার সেই পোস্ট এই মুহূর্তে চর্চায়।তিনি সেই পোস্টে লিখেছিলেন, "মানে কী এসবের? মেনে নিতে পারলাম না পল্লবী...।"
আরও পড়ুন: সৃজিতের ছবিতে দেখা যাবে মিথিলাকে? যা বললেন পরিচালক...
পল্লবীর দে-র মৃত্যু ঘটনা শোনার পর কিছুটা ভয় পেয়েছিলেন বিদিশার মা পম্পা দে মজুমদারও। সেসময় বিদিশা তাঁর মাকে চিন্তা না করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। মেয়ের আকস্মিক মৃত্যুতে রীতিমতো ভেঙে পড়েছেন পম্পা দে মজুমদার।সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, "ও সব সময় ইতিবাচক থাকত। নেতিবাচক কোনও জিনিসকেও ইতিবাচকভাবে নিত। এরপরও কেন এমন করল...? পল্লবীর ঘটনার পর ওকে বলেছিলাম, তুইও বাইরে থাকিস, ভয় করে। বাড়িতে চলে আয়... তখন আমায় বলেছিল, পল্লবী বোকা ছিল, তাই ও নিজের জীবন দিয়েছে। আমি তো বোকা নই...চিন্তা করছো কেন?"
আরও পড়ুন: কেরিয়ারের শুরুতে মডেলিং করে ১৫০০ টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন ঐশ্বর্য!
প্রসঙ্গত, নাগেরবাজারের বাড়িতে মাস দেড়েক আগে ভাড়া এসেছিলেন ২১ বছর বয়সী বিদিশা। মডেলিং ও অভিনয়ে কেরিয়ার গড়তেই, কাঁকিনাড়ার বাড়ি থেকে সেখানে এসে থাকতে শুরু করেন তিনি। তাঁর নিকট বন্ধুরা বলছেন, আরও কাজ করতে চাইছিলেন তিনি। সুইসাইড নোটের প্রথম পাতায় তিনি লিখে গিয়েছেন, "আমি ক্যান্সার আক্রান্ত...।" তবে ঠিক কি কারণে আত্মহননের পথ বেছে নিলেন, সেই তথ্য বের করতে তদন্ত করছে পুলিশ।