Advertisement

KIFF 2021: গান শুনতে না দেখতে ভালো? জমজমাট আড্ডায় সঙ্গীতশিল্পীরা

২৬ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের (Kolkata International Film Festival / KIFF)। চতুর্থ দিনেও আয়োজিত সিনে আড্ডা (Cine Adda)। নন্দন চত্বর এদিনও হয়ে উঠেছিল সিনেমা ও উৎসব প্রেমী বাঙালিদের মিলন ক্ষেত্র। চলচ্চিত্র উৎসবের এই আড্ডায় বর্তমান সময়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় 'গান শোনা না গান দেখা' ছিল আলোচনার বিষয়বস্তু। একতারা মুক্তমঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বাংলার এক ঝাঁক সঙ্গীতশিল্পীরা। শুধু প্রাসঙ্গিক আলোচনা নয়, শিল্পীরা গানে - গানে জমিয়ে দিলেন এদিনের সন্ধ্যা।

KIFF-এ সিনে আড্ডায় সঙ্গীত শিল্পীরা (ছবি: সৌমিতা চৌধুরী)KIFF-এ সিনে আড্ডায় সঙ্গীত শিল্পীরা (ছবি: সৌমিতা চৌধুরী)
সৌমিতা চৌধুরী
  • কলকাতা,
  • 12 Jan 2021,
  • अपडेटेड 1:53 PM IST
  • KIFF-র চতুর্থ দিনে সিনে আড্ডায় সঙ্গীতশিল্পীরা।
  • গানে আড্ডায় জমাট নন্দনের একতারা মুক্তমঞ্চ।
  • 'গান শোনা না গান দেখা' ছিল আলোচনার বিষয়বস্তু।

২৬ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের (Kolkata International Film Festival / KIFF)। চতুর্থ দিনেও আয়োজিত সিনে আড্ডা (Cine Adda)। নন্দন চত্বর এদিনও হয়ে উঠেছিল সিনেমা ও উৎসব প্রেমী বাঙালিদের মিলন ক্ষেত্র। চলচ্চিত্র উৎসবের এই আড্ডায় বর্তমান সময়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় 'গান শোনা না গান দেখা' ছিল আলোচনার বিষয়বস্তু। একতারা মুক্তমঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বাংলার এক ঝাঁক সঙ্গীতশিল্পীরা। শুধু প্রাসঙ্গিক আলোচনা নয়, শিল্পীরা গানে - গানে জমিয়ে দিলেন এদিনের সন্ধ্যা।

একটা সময় ছিল যখন গ্ৰামাফোনে গান শুনতেন সকলে। ফের ধীরে ধীরে এল টেপ রেকর্ডার, ডিভিডি প্লেয়ার। এখন সেসবের বালাই চুকে ভার্চুয়াল মাধ্যমেই গান শুনতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন শ্রোতারা। এখন ক্যাসেড, সিডির জায়গা নিয়েছে অনলাইন মিউজিক স্ট্রিমিং অ্যাপগুলি। তার সঙ্গে রয়েছে ইউটিউব ও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া সাইট, যেখানে সুযোগ থাকে অডিও- ভিজুয়াল মাধ্যমে গান প্রকাশের। যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গীত জগতেও এসেছে এক বিপুল পরিবর্তন। শ্রোতারা এখন হয়ে উঠেছেন দর্শক। তাই সঙ্গীত শিল্পীদের গান গাওয়ার পাশাপাশি গুরুত্ব দিতে হয় সেই গানের দৃশ্যায়নেও। 

নন্দন চত্বরে আয়োজিত সিনে আড্ডা চতুর্থ দিনের আলোচনার বিষয় ছিল 'গান শোনা না গান দেখা?' একতারা মুক্তমঞ্চে হাজির ছিলেন রূপঙ্কর বাগচী (Rupankar Bagchi), সোমলতা আচার্য (Somlata Acharya), লোপামুদ্রা মিত্র (Lopamudra Mitra), বিক্রম ঘোষ (Viram Ghosh), সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Surojit Chatterjee), স্বপন বসু (Swapan Basu), লগ্নজিতা চক্রবর্তী (Lagnajita Chakraborty) এবং সঞ্চালক অরিন্দম শীল (Arindam Sil)। প্রাসঙ্গিক এই আলোচনায় উঠে এসেছে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। 

আরও পড়ুন

জনপ্রিয় লোকসঙ্গীত শিল্পী স্বপন বসুর কথায়, "আমি সবসময় গান শোনার পক্ষে।গান দেখার জন্যে নয়। শুনলে সবসময় একটা কল্পনা শক্তি বাড়ে, নিজের মতো করে ভাবনা চিন্তা করা যায়। কিন্তু মিউজিক ভিডিও তৈরি করলে সেক্ষেত্রে একটা সীমাবদ্ধতা থেকে যায়।" 

সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানালেন, "মিউজিক ভিডিওতে সবকিছু বর্ণনা করা যায় না। যেমন বলতে পারি, 'তোমার দেখা নাই' গানটা বাচ্চাদের খুব পছন্দের গান। আমি তো বাচ্চাদের জন্যে গানটা বানাইনি। তবে ওরা নিশ্চই কল্পনা করে নেয় কিছু। তবে এখন পরিস্থিতি যা হয়েছে, সেক্ষেত্রে অনেকেই শুধু গান শোনার থেকে দেখতেও বেশি ভালোবাসে। তাই এক্ষেত্রে কোনও একটা ইতি টানা খুব কঠিন।"

সোমলতা জানালেন, "আগে আমাদের সিনিয়ররা যখন ছিলেন তখন গানের ভিডিও বানানো ততটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। কিন্তু এখন তাঁরাও যদি কোনও গান করেন, তাঁদের মাথায় রাখতে হয় দৃশ্যায়নের বিষয়টা। এখনকার দর্শকরা যে কোনও শিল্পীর ভিন্ন দিক গ্রহণ করছেন। তাঁরা শুনতে ও দেখতে দুটোই পছন্দ করেন।"

লোপামুদ্রা মিত্র মনে করেন, "কোনও উপন্যাসের চরিত্র যদি কার্টুন দিয়ে বোঝানো হয়, তাহলে যেমন পাঠকদের কল্পনা শক্তি কমে যায়। তেমনই কোনও গানের সঙ্গে যদি ভিডিও যোগ হয়, শ্রোতাদেরও কল্পনাশক্তি অনেক কমে যায়। কিন্তু আমরা এরকম একটা সময়ে এসে দাঁড়িয়েছে যে এর বাইরে কিছু ভাবতে পারছি না। যেমন 'বেণীমাধব তোমার বাড়ি যাবো' এই গানের যদি কেউ বেনীমাধব সাজতো তাহলে এটা দেখতে মোটেও ভাল লাগত না। তবে আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কথা, মিউজিক ভিডিও বানানোর জন্যে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে সেরকম পুঁজি নেই। তাই সেটাও একটা অসুবিধার জায়গা।"

ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক নায়িকা এখন গায়িকা। এ বিষয়টা কিভাবে দেখছেন লগ্নজিতা কে জিজ্ঞেস করায়, তাঁর উত্তর, "নায়িকা যদি গাইতে পারেন তাহলে কোনও অসুবিধা নেই। গায়িকারাও তো অভিনয় করছেন।"

শিল্পীদের জনপ্রিয় গানে দর্শকেরা মেতে উঠেছিলেন এদিনের সন্ধ্যায়। লগ্নজিতা গাইলেন, "বসন্ত এসে গেছে", লোপামুদ্রার গলায় শোনা গেল, "আমার মতে"। রূপঙ্কর তাঁর জনপ্রিয় গান "এ তুমি কেমন তুমি" গাইলেন। অন্যদিকে স্বপন বসুর কন্ঠৈ 'সুজন মাঝিরে' মন ছুঁয়ে গেল সকলের। সোমলতা গাইলেন "ইয়াদ পিয়া কি আয়ে" এবং সবশেষে 'বারান্দায় রোদ্দুর' দিয়ে শেষ হল অনুষ্ঠান। তবে এটি শুধু সুরজিৎ নয়, গলা মেলালেন সকলে। এমনকি বাদ গেলেন না চলচ্চিত্র পরিচালক অরিন্দম শীলও।উপরি পাওনা হিসাবে মঞ্চে হাজির হয়েছিলেন অভিনেতা-গায়ক সাহেব চট্টোপাধ্যায়। বিক্রম ঘোষের কাঞ্জিরার তালে, এতজন শিল্পীর গলায় একসঙ্গে 'বারান্দায় রোদ্দুর' এই প্রথম উপহার পেলেন দর্শকেরা। তৈরি হয়েছিল এক মন ভাল করা আবহ। গানে - গানে জমে উঠেছিল এদিনের সন্ধ্যা।

Read more!
Advertisement
Advertisement