গত কয়েক মাস ধরে সংবাদের শিরোনামে রয়েছেন সাংসদ অভিনেত্রী নুসরত জাহান (Nusrat Jahan)। স্বামী ব্যবসায়ী নিখিল জৈনের (Nikhil Jain) সঙ্গে বিচ্ছেদ ও সেই সঙ্গে অভিনেতা যশ দাশগুপ্তের (Yash Dasgupta) সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। সেই তালিকায় সম্প্রতি যোগ হয়েছে আরও এক জল্পনা। টলিপাড়ায় কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে মা হতে চলেছেন নুসরত। এবার মুখ খুললেন নায়িকা, জানালেন তাঁর মনের কথা।
নুসরত ও নিখিলের বিয়ে প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, তুরস্কের বিবাহ আইন অনুসারে এই অনুষ্ঠান অবৈধ। সেই সঙ্গে হিন্দু-মুসলিম বিবাহের ক্ষেত্রে বিশেষ বিবাহ আইন অনুসারে বিয়ে করা উচিত। যা এ ক্ষেত্রে মানা হয়নি। ফলত, এটা বিয়েই নয়। একটি বিবৃতি দিয়ে নায়িকা বলেন,"তুরস্কের বিবাহ বিধি অনুযায়ী বিয়ের অনুষ্ঠানটি অবৈধ। অপরন্তু, যেহেতু এটি একটি আন্তঃধর্মের বিয়ে ছিল, তাই এটির জন্য বিশেষ বিবাহ আইন অনুসারে বৈধতা প্রয়োজন। ভারতে, যা ঘটেনি। আইনত এটি বিয়ে নয়, সম্পর্ক বা লিভ-ইন সম্পর্ক। তাই বিবাহবিচ্ছেদের প্রশ্নই ওঠে না।"
বিবৃতিতে নুসরত জাহান যা লিখেছেন (Official Statement Of Nusrat Jahan)
* আমাদের বিচ্ছেদ অনেক আগেই হয়েছিল, কিন্তু আমি আমার ব্যক্তিগত জীবন নিজের কাছেই রাখবো ভেবে এ বিষয়ে কোনও কথা বলিনি।
* সুতরাং, 'বিচ্ছেদ'- র ভিত্তিতে আমার ক্রিয়াকলাপগুলি নিয়ে সংবাদমাধ্যম বা আমি যাদের সঙ্গে কোনও ভাবে সম্পর্কিত নই, তাঁদের প্রশ্ন করা উচিত না। বিয়েটি আইনত বৈধ এবং কার্যকর নয়।
* ব্যবসায়ের বা অবসরের জন্য যে কোনও জায়গায় আমি কার সঙ্গে আলাদা থেকেছি, এই বিষয়ে যার সঙ্গে আমার বিচ্ছেদ হয়ে গেছে তাঁর উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত নয়। আমার সমস্ত ব্যয় সর্বদা আমি নিজে বহন করেছি যা 'কারও' দাবির বিপরীতধর্মী।
* আমি আরও উল্লেখ করব যে, প্রথম থেকেই আমার বোনের পড়াশোনা এবং পরিবারের সুস্বাস্থ্যের জন্য আমি সম্পূর্ণ ব্যয় করেছি, কারণ তাঁরা আমার দায়িত্ব। আমার কারও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই, যার সঙ্গে আমি আর সম্পর্কে নেই। এটির প্রমাণ রয়েছে আমার কাছে।
আরও পড়ুন: শুধু নিখিল, যশ নয়! আগেও সম্পর্ক নিয়ে শিরোনামে এসেছেন নুসরত জাহান
* যিনি নিজেকে 'ধনী' এবং 'আমার দ্বারা ব্যবহৃত হয়েছেন' বলে দাবি করছেন তিনি আমার অ্যাকাউন্ট থেকে রাতে, এমনকি বেআইনি ও অযৌক্তিক উপায়ে আমার ব্যঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ সংগ্রহ করেছেন। আমি ইতিমধ্যে এই সম্পর্কিত তথ্য ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের থেকে নিয়েছি এবং খুব শীঘ্রই এই নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হবে।
* অতীতে, তাঁর অনুরোধের ভিত্তিতে আমার সমস্ত পারিবারিক অ্যাকাউন্টের বিবরণ তাঁর কাছে হস্তান্তরিত করা হয়েছিল এবং আমি বা আমার পরিবারের সদস্যরা কেউই ব্যাঙ্কের মাধ্যমে প্রদত্ত কোনও নির্দেশ সম্পর্কে অবগত ছিলাম না। আমার সম্মতি ছাড়াই তিনি বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে আমার অর্থের অপব্যবহার করেছেন। আমি এখনও এটি নিয়ে ব্যঙ্কের সঙ্গে লড়াই করছি এবং যদি প্রয়োজন হয় তাহলে এর প্রমাণও প্রকাশ করব।
* এছাড়াও, আমার জামাকাপড়, ব্যাগ এবং আনুষাঙ্গিক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এখনও তাঁদের কাছেই রয়েছে। আমি দুঃখিত ও হতাশার সঙ্গে বলেছি যে, আমার নিজের পরিবারের অলঙ্কার, যা আমার বাবা-মা,বন্ধুবান্ধব এবং বর্ধিত পরিবার আমাকে দিয়েছিলেন এবং আমার নিজের উপার্জিত সম্পদ তাঁরা অবৈধভাবে নিজেদের কাছে রেখেছেন।
আরও পড়ুন: 'কাঙ্খিত পুরুষ কল্পনায় থাকে বাস্তবে নয়' নুসরতকে বললেন তসলিমা
* কোনও পুরুষ 'ধনী' হলেই এই সমাজ, সব সময়ে একজন মহিলাকে অসম্মান বা ছোট করার অধিকার তাঁকে দেয় না। আমার অক্লান্ত পরিশ্রমের দ্বারা নিজের পরিচিতি তৈরি করেছি। এইভাবে আমি আমার সঙ্গে সম্পর্কিত নয় এমন কাউকে আমার পরিচয়ের ভিত্তিতে লাইমলাইট বা শিরোনামে আসতে দেব না।
* আমি কখনই আমার ব্যক্তিগত জীবন বা যার সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই সেই বিষয়ে কথা বলতে চাই না। সুতরাং, যারা নিজেকে 'সাধারণ মানুষ' বলে মনে করেন, তাঁদের উচিত না এরকম কোনও ব্যক্তিকে প্রাধান্য দেওয়া। আমি গণমাধ্যমকে অনুরোধ করব ভুল ব্যক্তিকে প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকার জন্য, যিনি দীর্ঘদিন আমার জীবনের অংশ নন। কারও দাবি অনুসারে একজন 'সাধারণ' ব্যক্তিকে, তাঁর কথা অনুসারে, 'হিরো' হিসাবে দেখানো এবং আমার চিত্রকে বিকৃত করার জন্য একতরফা কথা শোনা বাঞ্ছনীয় নয়। আমি গণমাধ্যমে আমার সকল বন্ধুদের আন্তরিকভাবে অনুরোধ করব যাতে এই ধরনের লোকেদের অপ্রয়োজনীয় মাইলেজ না দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: 'খুল্লমখুল্লা প্রেম'? রাত পার্টিতে এক সঙ্গে যশ-নুসরত
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১৯ জুন দীর্ঘদিনের বয়ফ্রেন্ড, ব্যবসায়ী নিখিল জৈনর সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন নুসরত জাহান। তুরস্কে বসেছিল তাঁদের বিয়ের রাজকীয় অনুষ্ঠান। এরপর কলকাতায় এসেও হয় গ্র্যান্ড রিসেপশন পার্টি।