তিনিই 'ইন্ডাস্ট্রি'... অনন্ত এই নামেই টলিউডে (Tollywood) তাঁর পরিচিতি। বারবারই এই সংক্রান্ত বিষয় শিরোনামে এসেছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee)। অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের (Abhisekh Chatterjee) প্রয়াণের পর তিনি আরও বেশি চর্চায়। একটি ভাইরাল হওয়া পুরনো সাক্ষাৎকারের ক্লিপ দেখে অনেক নেটিজেনরাই তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। এবার প্রসেনজিতকে সরাসরি কটাক্ষ করলেন প্রযোজক রানা সরকার (Rana Sarkar)।
শনিবার একটি ফেসবুক পোস্টে রাখঢাক না করে রানা লেখেন, "মিঠুন চক্রবর্তী, রঞ্জিত মল্লিক, চিরঞ্জিত, ভিক্টর ব্যানার্জী, তাপস পাল, অর্জুন, অভিষেক এরা নাকি শেষ ৩০ বছরে কিছুই করেনি...দাবী, কেউ একজন নাকি একাই টেনে গেছেন বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে...খিল্লি আর কত শুনবো? রক্কে করো রগুবীর..." সেই সঙ্গে এক নেটিজেনের কথার উত্তরে তিনি লিখেছেন, "হ্যাঁ যিনি সবচেয়ে বেশি কাঁকড়া বাজি করেছেন তার বিরুদ্ধেই কথা বলার সাহস করতে হবে , তাহলে কাঁকড়া বাজি বন্ধ হবে..."
একদিন আগেই তিনি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারের কিছুটা অংশ তুলে ধরে, একহাত নেন টলিউড সুপারস্টারকে। সাক্ষাৎকারে প্রসেনজিৎ বলেছিলেন, "আরআরআর-র মতো একটা দক্ষিণী ছবি তিনদিনে ৪০০ কোটির ব্যবসা করে ফেলছে। বাংলা ছবি তো আপনাদেরও ছবি। ভাল ভাবে প্রচার করুন, ভাল লিখুন, কিছু জিনিস ভুল হলে সেটা যতটা সম্ভব ওভারলুক করুন। নিজেদেরই তো ইন্ডাস্ট্রি। না হলে কিন্তু আমাদের ইন্ডাস্ট্রি শ্মশান হয়ে যাবে। আমি যখন শুরু করেছিলাম তখন এই ইন্ডাস্ট্রি একটা শশ্মান ছিল... সেখান থেকে আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি...।"
রানা সরকার লিখেছেন, "এপ্রিল ফুল করছেন ? নিজের ছবিতে ২৫ লক্ষ টাকা রেমুনারেশন নেন বিনিময়ে ২৫ হাজার টাকার টিকিট বিক্রি করার গ্যারান্টি দেওয়ার ক্ষমতা আপনার নেই; দিনে ৩০ লিটার(???) জলের বিল পাঠান প্রযোজককে , কতটা জল মেশান ? ব্যক্তিগত লাক্সারি মেকাপ ভ্যানের পয়সাও ছাড়েন না; সমসাময়িক সহকর্মীদের কাঠি করেন চিরকাল, প্রযোজকদের মুরগি করার সব রাস্তা আপনার নখদর্পনে; আরো এতো কিছু আছে বলে শেষ করার যাবেনা, ED,CBI তদন্ত, চিটফান্ডের সঙ্গে সখ্যতা কোনোটাই তো অজানা নয়..."
প্রযোজক আরও লেখেন, " হঠাৎ শ্মশানের ভয় হচ্ছে আপনার ? বাংলা ইন্ডাস্ট্রি শ্মশান হলে ডোম তো আপনিই...আপনি রিটায়ার করুন , দেখবেন ভয় কমে গেছে, এতদিনের পাপের জ্বালায় আপনার ভয় এখন বেশি, বাকিরা কিন্তু লড়ে যাচ্ছেন...ভালো থাকুন , Fake ডায়লগবাজি কমান তাহলেই শ্মশান থেকে দূরে থাকবেন...আর মাননীয় দর্শকমন্ডলী, ডায়লগবাজীতে এপ্রিল ফুল হবেন না, দলে দলে বাংলা সিনেমা দেখতে হলে যান..."
প্রসঙ্গত, অভিষেক চট্টোপাধ্যায়, তাপস পাল, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সমসাময়িক। এক সময় বহু ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছেন তাঁরা। তবে বিভিন্ন সাক্ষাৎকার মারফত জানা যায়, দু'জনের সম্পর্ক খুব একটা মধুর ছিল না। বলা ভাল, প্রসেনজিতের প্রতি একরাশ অভিমান ছিল প্রয়াত অভিনেতার। এক সময় বাংলা ছবিতে দাবিয়ে কাজ করলেও, হঠাৎই বড় পর্দা থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। মাঝে অনেকটা সময় কেটেছে সংকটেও। আগে তাঁর দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ইন্ডাস্ট্রির 'টপ নায়ক ও নায়িকার' ষড়যন্ত্রেই বাদ পড়েন তিনি। যা নিয়ে যথেষ্ট আলোচনাও হয়। ইন্ডাস্ট্রির 'টপ নায়ক ও নায়িকা' বলতে তিনি যে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর কথা বলছিলেন, একথা বোধ হয় কারও বুঝতে আর বাকি থাকে না।