উড়ানের পর খুব অল্প উচ্চতায় পৌঁছে সেটি হঠাৎ তীব্র গতিতে নীচে নামতে শুরু করে। মাত্র ৬২৫ ফুট উচ্চতা থেকে প্রতি মিনিটে ৪৭৫ ফুট গতিতে নিচে নামতে শুরু করে বিমানটি। এই ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে পাইলটরা মাত্র এক মিনিট সময় পেয়েছিলেন।
বিমানে দায়িত্বে ছিলেন দু'জন পাইলট—ক্যাপ্টেন সুমিত সাবরওয়াল ও ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্দর। তাঁদের মিলিত উড়ান অভিজ্ঞতা ছিল প্রায় ৯,৩০০ ঘণ্টার। ক্যাপ্টেন সাবরওয়ালের নিজস্ব অভিজ্ঞতা ছিল ৮,২০০ ঘণ্টা, আর সহ-পাইলট ক্লাইভ কুন্দরের অভিজ্ঞতা ছিল ১,১০০ ঘণ্টা।
এত অভিজ্ঞ পাইলটদের নেতৃত্বে থাকা সত্ত্বেও কেন এমন দুর্ঘটনা, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। ATC (এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল)-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিমানটি উড়ানের কিছুক্ষণের মধ্যেই একটি MAYDAY কল পাঠায়। বিমান চলাচলে ‘MAYDAY’ একটি সঙ্কেত, যা কেবলমাত্র চূড়ান্ত বিপদের সময়ই ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ, পাইলটরা বুঝে গিয়েছিলেন, কোনও ভয়াবহ প্রযুক্তিগত বা যান্ত্রিক সমস্যা ঘটেছে।
কিন্তু সংকেত পাঠানোর পর থেকেই ATC বিমানটির সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ করতে পারেনি। একাধিকবার চেষ্টা করেও বিমানের কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।
এরপরই বিমানটি ভেঙে পড়ে বিমানবন্দরের বাইরের একটি আবাসিক এলাকার উপর। একটি বহুতলের সঙ্গে ধাক্কা লেগেই বিস্ফোরণ ঘটে বলে প্রাথমিক অনুমান। ঘন কালো ধোঁয়া দেখা যায় বহু দূর থেকে।
দুর্ঘটনার পরপরই DGCA বিবৃতি দিয়ে জানায়, 'AI171 ফ্লাইটটি আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছিল।
উড়ানের পরপরই এটি রানওয়ে ২৩ থেকে ছাড়ে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই MAYDAY কল দেয়। এরপর আর কোনও যোগাযোগ হয়নি। বিমানটি রানওয়ের বাইরে গিয়ে একটি বসত এলাকায় ভেঙে পড়ে।'
এই মুহূর্তে উদ্ধারকাজ চলছে। ধ্বংসাবশেষের মধ্য থেকে কিছু যাত্রীকে জীবিত অবস্থায় বের করা সম্ভব হয়েছে বলেই প্রাথমিক সূত্রের দাবি। তবে এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে মৃত্যুর সংখ্যা ঘোষণা করা হয়নি।
যেহেতু দুর্ঘটনাটি একটি জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ঘটেছে, তাই বিমানটির যাত্রী ছাড়াও এলাকার বাসিন্দাদের হতাহতের সম্ভাবনাও রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছেন। কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী রামমোহন নাইডুর সঙ্গে মোদী ফোনে কথা বলেন এবং বিস্তারিত রিপোর্ট চান। একইসঙ্গে কেন্দ্র ও রাজ্য—উভয় স্তরেই উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
AI171 দুর্ঘটনার কারণ জানতে ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার এবং ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডারের বিশ্লেষণ এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গোটা দেশের নজর এখন DGCA ও তদন্তকারী দলের রিপোর্টের দিকে।